এইচএসসির পর বিদেশে উচ্চশিক্ষা
- ক্যাম্পাস ডেস্ক
এইচএসসি পাসের পর থেকেই বিদেশে উচ্চশিক্ষার ইচ্ছাটা অনেকেরই থাকে। উন্নত জীবনযাপন, উচ্চশিক্ষার পূর্ণ গ্যারান্টি, উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ এবং পরিশেষে ওই দেশের নাগরিকত্ব লাভ ছাত্রছাত্রীদের বিদেশে উচ্চশিক্ষা গ্রহণে উদ্বুদ্ধ করে। আর ওই সুযোগটিই নিতে চায় কিছু স্টুডেন্ট রিক্রুটিং এজেন্সি। ওইসব এজেন্সির সাহায্য ছাড়াও আপনি বিদেশে পড়াশোনা করতে যাওয়ার কাগজপত্র নিজে তৈরি করতে পারেন। নিচের ৯টি পরামর্শ সবার জন্যই উপকৃত হবে।
১. আপনার সামগ্রিক শিক্ষাগত যোগ্যতার আলোকে (যেমন এইচএসসি থেকে মাস্টার্স পর্যন্ত হলে) এবং পরিবারের আর্থিক ক্ষমতার সর্বোচ্চ ব্যবহারের ওপর দেশ নির্বাচন করুন। কারণ ন্যূনতম ২৫ লাখ থেকে ৬০ লাখ টাকার নিচে ফিক্সড ডেপোজিট বা সেভিংস অ্যাকাউন্ট না থাকলে আজকাল উন্নত দেশের শিক্ষা নেয়া চিন্তাই করা যায় না।
২. IELTS, TOFEL, GMAT, GRE, SAT জাতীয় extra কোর্সগুলো বিভিন্ন দেশ অনুযায়ী প্রয়োজনের কারণে এগুলো ভালোভাবে সম্পন্ন করুন এবং ভালো ফলাফল অর্জন করুন। এসব সার্টিফিকেট ছাড়া দূতাবাস বা হাইকমিশন থেকে ভিসাপ্রাপ্তির সম্ভাবনা জিরোই বলা চলে।
৩. যিনি স্পন্সর হবেন, তিনি যদি আপনার পরিবারের পিতা বা মাতৃকুলের রক্ত সম্পর্কীয় কেউ না হন, তাহলে অযথাই কোনো তৃতীয় ব্যক্তির কাগজপত্র জমা দিয়ে ভিসার জন্য আবেদন করবেন না। ভুয়া স্পন্সরের নামে গ্রেফতার হয়ে এখন অনেকে জেলে আছে।
৪. নিজের শিক্ষাগত যোগ্যতা, বয়স, শিক্ষা বিরতিকরণ, স্পন্সর ইত্যাদির ব্যাপারে রি-কনফার্ম না হয়ে এবং সতর্কতার সঙ্গে বিশ্লেষণ না করে অযথাই বিদেশের বিশ্ববিদ্যালয়ের অফার লেটার আনার জন্য যেখানে-সেখানে টাকা জমা দেবেন না। ইউনিভার্সিটির অফার লেটার আনা আর ভিসা পাওয়া এক কথা নয়। প্রথমটা ব্যবসা, পরেরটা ইচ্ছা।
৫. যদিওবা কোনো দেশের Acceptance Letter পেলেন এবং পরবর্তী টিউশন ফির নামে মোটা অঙ্কের টাকা দেশের বাইরে পাঠানোর আগে ভালো করে চিন্তা করে নেবেন। যত সহজে টাকা পাঠানো যায়, তত সহজে ফেরত পাওয়া যায় না।
৬. দূতাবাস এবং হাইকমিশনে ভিসার আবেদনপত্র জমা দেয়ার আগে সংশ্লিষ্ট দেশের ভিসা প্রদানের নিয়ম-কানুন, ডকুমেন্ট চেকলিস্ট এবং আনুষঙ্গিক তথ্য ভালোভাবে জেনে নিন এবং পরিপূর্ণভাবে ফাইল জমা দেয়ার আগে একজন ভালো অভিজ্ঞ প্রতিষ্ঠানের পরামর্শ নিন।
৭. কোনো স্টুডেন্ট কনসাল্টিং ফার্মে আপনার ফাইল জমা দেয়ার আগে ওই প্রতিষ্ঠানের রেকর্ড দেখুন। আপনার পছন্দের বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে ওই ফার্মের কোনো চুক্তিপত্র আছে কি-না দেখে নিন। এমনকি যিনি আপনার ক্যারিয়ার নিয়ে কাউন্সেলিং করছেন, তার যোগ্যতার ব্যাপারেও নিশ্চিন্ত হয়ে নিন। মিষ্টি মিষ্টি কথা দিয়ে ভুল ভালো বুঝিয়ে কনভিন্স করার লোকের অভাব নেই এ শহরে।
৮. যে কোনো ফার্মের সঙ্গে কাজ করার আগে তাদের পারিশ্রমিকের ব্যাপারে খোলামেলা কথা বলে নিন। কী কী সার্ভিস কত টাকার বিনিময়ে পাবেন, ভিসা পাওয়ার ক্ষেত্রে তাদের দায়িত্ব এবং ওই দেশে পৌঁছানো পর্যন্ত আপনি কীভাবে তাদের সার্বিক সহযোগিতা পাবেন, সে ব্যাপারগুলো লিখিত ডকুমেন্ট করে নিন। বিশেষ দরকার না হলে কনসাল্টিং ফার্মের সাহায্য না নিয়ে নিজে নিজেই প্রসেস করুন।
৯. বিদেশে উচ্চশিক্ষা নিতে গিয়ে আবেগের বশবর্তী হয়ে কোনো প্রণয়ঘটিত ব্যাপারে সিরিয়াস হবেন না। বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম-কানুনের বাইরে নিজ থেকে কোনো কর্মকাণ্ডে জড়াবেন না। পার্টটাইম চাকরি এবং ক্লাসে উপস্থিত থাকার ব্যাপারে সজাগ থাকবেন। পরে নাগরিকত্ব পেতে এগুলো রেকর্ড হিসেবে কাজ করবে। উচ্চশিক্ষা নিতে যেহেতু বিদেশে গেছেন, সেহেতু উচ্চশিক্ষা নেয়া ছাড়া অন্য কোনো চিন্তা মাথায়ই আনবেন না।