শিক্ষার্থীদের প্রিয় থাইল্যান্ড
- ক্যাম্পাস ডেস্ক
সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে শিক্ষার্থীর সংখ্যা। দেশে পড়াশোনার পাশাপাশি অনেকেই উচ্চশিক্ষার জন্য বিদেশে পাড়ি জমাচ্ছেন। উন্নত শিক্ষা ব্যবস্থা আর অন্যান্য সুযোগ-সুবিধার জন্য পর্যটন নগরী থাইল্যান্ড এখন শিক্ষার্থীদের কাছে বেশ জনপ্রিয়। বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বে অবস্থিত এ দেশটি ইতিমধ্যে পর্যটক ছাড়াও জায়গা করে নিয়েছে বিদেশি শিক্ষার্থীদের মনে। তুলনামূলক কম খরচ ও বাড়তি আয়ের সুবিধার কারণে দিন দিন বাড়ছে থাইল্যান্ডমুখী বিদেশি শিক্ষার্থীর সংখ্যা। প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ঠিক থাকলে এ দেশের ভিসা পেতে তেমন ঝামেলা পোহাতে হয় না বললেই চলে।
আবেদনের আগে : থাইল্যান্ডে উচ্চশিক্ষার সিদ্ধান্তের আগে আপনার শিক্ষাগত ও অন্যান্য যোগ্যতা কিংবা প্রয়োজনীয় কাগজপত্র প্রস্তুত আছে কি-না তা নিশ্চিত করুন। ব্যাচেলর প্রোগ্রামের জন্য ১২ বছরের শিক্ষাগত যোগ্যতা অর্থাৎ এইচএসসি কিংবা ‘এ’ লেভেল পাস হতে হবে। ন্যূনতম আইইএলটিএস স্কোর থাকতে হবে ৫.০০। আইইএলটিএস ছাড়াও আবেদন করা যাবে, তবে সে ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীকে সে দেশে ইংরেজি ভাষা দক্ষতার ওপর ফাউন্ডেশন কোর্স করতে হবে। ভর্তির আবেদনপত্রের সঙ্গে সংযুক্ত করতে হয় সব পরীক্ষার একাডেমিক সার্টিফিকেট, মার্কশিট, আবেদন ফির রসিদ, আইইএলটিএস স্কোর সার্টিফিকেট, পাসপোর্টের ফটোকপি, মেডিকেল রিপোর্ট, ব্যাংক সলভেন্সি ও পাসপোর্ট সাইজের ছবি।
যেসব বিষয়ে পড়তে পারেন : ডিপ্লোমা, ব্যাচেলর, মাস্টার্স এবং ডক্টরেট ডিগ্রির জন্য আবেদন করতে পারেন থাইল্যান্ডে। থাই বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে অ্যাকাউন্টিং, বিবিএ, এমবিএ, ম্যানেজমেন্ট, মার্কেটিং অ্যান্ড ই-কমার্স, ট্যুরিজম অ্যান্ড হোটেল ম্যানেজমেন্ট, মেরিন টেকনোলজি, অ্যাপল্গায়েড সায়েন্স, এগ্রিকালচার সায়েন্স, বায়োটেকনোলজি, আর্কিটেকচার, ফুড টেকনোলজি, ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস, মেডিসিন, হেলথ কেয়ার, পাবলিক হেলথ, সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিংসহ প্রচলিত সব বিষয়েই রয়েছে পড়াশোনার সুযোগ।
ভর্তি তথ্য : থাই বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ভর্তি করা হয় জুলাই, ডিসেম্বর, মে-এই তিনটি সেশনে। সেশন শুরু হওয়ার অন্তত তিন মাস আগ থেকেই ভর্তি কার্যক্রম শুরু করাটা ভালো। বিশ্ববিদ্যালয়ের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট থেকে দরকারি তথ্য জেনে আগে থেকেই প্রয়োজনীয় সব কাগজপত্র প্রস্তুত রাখলে পরে বেগ পেতে হবে না।
খরচ : চার বছর মেয়াদি ব্যাচেলর কোর্স সম্পন্ন করতে বিষয়ভেদে টিউশন ফি বাবদ খরচ হবে মোট ৩ লাখ ৪০ হাজার থেকে ৪ লাখ থাই বাথ। অন্যদিকে মাস্টার্স প্রোগ্রামের জন্য বিষয় ও বিশ্ববিদ্যালয় ভেদে খরচ পড়বে মোট ৬০ হাজার থেকে ১ লাখ ৫০ হাজার থাই বাথ। টিউশন ফি বাদে থাকা-খাওয়া খরচ তো আছেই। ৪ হাজার থাই বাথেই একজন বিদেশি শিক্ষার্থী অনায়াসে কাটাতে পারেন মাস। উল্লেখ্য, প্রতি থাই বাথ ২ দশমিক ১৮ টাকার সমান।
খণ্ডকালীন কাজের সুযোগ : পড়াশোনার পাশাপাশি খণ্ডকালীন কাজের অনেক সুযোগ আছে দেশটিতে। বিদেশি শিক্ষার্থীরা সপ্তাহে ২০ ঘণ্টা কাজের সুযোগ পায়। তবে ছুটির দিনগুলোতে পূর্ণদিবস কাজ করা যায়। ব্যাংকক, পাতায়াসহ বড় বড় শহর, বিশেষ করে পর্যটন এলাকাগুলোতে কাজের সুযোগ সবচেয়ে বেশি। অভিজাত রেস্টুরেন্টে কাজ করে ঘণ্টায় ১৮ থেকে ২২ থাই বাথ আয় করা যায়। থাই ভাষা জানা থাকলে আরও বেশি আয় করা সম্ভব।
আছে বৃত্তির সুযোগ : থাই সরকার ছাড়াও বিদেশি শিক্ষার্থীদের বৃত্তির সুযোগ করে দিচ্ছে বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, ফাউন্ডেশন ও বিশ্ববিদ্যালয়। বৃত্তির জন্য ভিজিট করুন এই লিংকে:
http://studyinthailand.org/study-abroad-thailand-university/scholarship-Thailand.html
থাইল্যান্ডে উচ্চশিক্ষার তিন ধাপ :
১। বিষয় ও বিশ্ববিদ্যালয় নির্বাচন : ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীকে নিজের যোগ্যতা, পছন্দ, আর্থিক সামর্থ্যের কথা মাথায় রেখে বিষয় ও বিশ্ববিদ্যালয় নির্বাচন করতে হবে। খরচের ব্যাপারে ধারণা না নিয়েই ভর্তির সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত নয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে প্রয়োজনীয় তথ্য দেখে নিতে হবে।
২। আবেদন প্রেরণ :বিশ্ববিদ্যালয়ের দিকনির্দেশনা মেনে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ও ফিসহ আবেদনপত্র পাঠাতে হবে। আবেদন পাঠানোর পর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করে যোগ্য শিক্ষার্থীদের ঠিকানায় ‘অফার লেটার’ পাঠিয়ে থাকে।
৩। থাইল্যান্ড পৌঁছার পর: ভিসা পাওয়ার পর মনে রাখতে হবে ইস্যুকৃত স্টুডেন্ট ভিসার মেয়াদ ৯০ দিন। কোর্সের মেয়াদকালে প্রতি বছর ভিসার মেয়াদ নবায়নের দায়িত্ব নেয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
শীর্ষস্থানীয় কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম
ব্যাংকক ইউনিভার্সিটি www.bu.ac.th
চুলালংকর্ন ইউনিভার্সিটি www.chula.ac.th
ওয়েবস্টার ইউনিভার্সিটি www.webster.ac.th
সিল্পাকর্ন ইউনিভার্সিটি www.shinawatra.ac.th
সিনাওয়াত্রা ইউনিভার্সিটি www.su.ac.th
চিয়াংমাই ইউনিভার্সিটি www.cmu.ac.th
অ্যাসসুমশন ইউনিভার্সিটি www.au.edu
এশিয়ান ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি: www.ait.ac.th