উচ্চশিক্ষার গন্তব্য ‘ক্যালটেক’

উচ্চশিক্ষার গন্তব্য ‘ক্যালটেক’

  • ক্যাম্পাস ডেস্ক

উচ্চশিক্ষা প্রদানের ক্ষেত্রে আমাদের দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মান দিন দিন বেড়ে চললেও বলার মতো তেমন কিছুই হয়নি। তাই শিক্ষার্থীদের বিদেশে পড়তে যাওয়ার কথা এমনিতেই মনে আসে। তারা স্বপ্ন দেখেন পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে পড়বার। কেমন হয়ে থাকে সেই বিশ্ববিদ্যালয়গুলো? পড়াশোনার ধরনই বা কি রকম? বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরাই  কিভাবে সেখানে পড়তে যেতে পারে? এসব কিছু নিয়েই এবারের আয়োজন।


সবার সেরা: শিক্ষাক্ষেত্রের বিখ্যাত ওয়েবসাইট টাইমস হাইয়ার এডুকেশনের  এর  তালিকাতে একেবারে শীর্ষস্থানে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া রাজ্যের পাসাডেনায় ক্যালিফোর্নিয়া ইন্সটিটিউট অফ টেকনলজি। সংক্ষেপে ক্যালটেক। সম্পূর্ণ বেসরকারিভাবে পরিচালিত এই বিশ্ববিদ্যালয়টি ১৮৯১ সালে স্থাপিত হয়। যুক্তরাষ্ট্রের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এই বিশ্ববিদ্যালয়ে মূলত বিজ্ঞান তথা প্রাকৃতিক বিজ্ঞান এবং প্রকৌশলের উপর জোর দেয়া হয়ে থাকে। এখানেই ‘নাসা’র স্বায়ত্তশাসিত জেট প্রোপালশন ল্যাবরেটরি অবস্থিত, যেটিতে নাসার বেশির ভাগ মহাশূন্যযানের ডিজাইন ও কার্যকারিতা দেখাশোনা করা হয়। এসব কারণেই ছাত্রছাত্রীর সংখ্যার দিক দিয়ে ছোট হলেও ক্যালটেক তার শিক্ষা ব্যবস্থার কারণে সারা পৃথিবীতে শীর্ষস্থান অধিকার করে রয়েছে।

logoর্জন: ক্যালিফোর্নিয়া ইন্সটিটিউট অফ টেকনোলোজি মূলত একটি গবেষণা প্রধান শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।  প্রতিনিয়তই এখানে চলছে নতুন নতুন সফল গবেষণা। বিশ্ববিদ্যালয়টির অন্যতম অর্জন হল এখান থেকে বিজ্ঞানে বিভিন্ন অর্জনের জন্য শিক্ষক ও শিক্ষার্থী মিলিয়ে মোট ৩৪ জন নোবেল পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন।  এছাড়া ৭১ জন পেয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক জাতীয় পুরস্কার।

বিখ্যাত যারা: ক্যালিফোর্নিয়া ইন্সটিটিউট অফ টেকনোলোজি একটি পুরাতন এবং বৈজ্ঞানিক দিক দিয়ে শীর্ষস্থানীয় বিশ্ববিদ্যালয় হওয়ার কারণে বিজ্ঞান বিষয়ে বিশেষ অবদান রাখা অনেক বিখ্যাত এবং গুণী ব্যক্তিরা এখানে শিক্ষকতা এবং শিক্ষাগ্রহণ করেছেন। তাদের মধ্যে  পজিট্রনের উদ্ভাবক স্যার কার্ল ডেভিড এন্ডারসন, ইন্টেলের সহকারী প্রতিষ্ঠাতা গর্ডন মুর, লিবিয়ার প্রধানমন্ত্রী মুস্তাফা এ.জি আবুসাগুর, বিখ্যাত পদার্থবিজ্ঞানী ডগলাস ডি. অসগারঅফ, ‘লিগো’র সহকারী প্রতিষ্ঠাতা কিপ থ্রোন বিশেষ উল্লেখযোগ্য।

ভর্তি প্রক্রিয়া

ক্যালটেকে সাধারণত অনার্স, মাস্টার্স এবং পিএইচডি এই তিন বিভাগে শিক্ষার্থী ভর্তি নেয়া হয়। ক্যালটেকে স্নাতক চার বছরের হয়ে থাকে। আন্তর্জাতিক তথা বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরাও এখানে আবেদন করতে পারেন, সেজন্য স্যাট (SAT) করতে হবে, এর মাধ্যমে যেকোনো বিষয়েই ভর্তি হওয়া যাবে। কিন্তু স্নাতকের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কোন ধরনের বৃত্তির ব্যবস্থা রাখেননি। তাই ক্যালটেকে স্নাতক পড়তে হলে গুণতে হবে মোটা অংকের অর্থ। তবে বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরা স্নাতকোত্তর এবং পিএইচডি এর জন্য আবেদন করতে পারে। জেনে রাখা ভালো যুক্তরাজ্য এবং যুক্তরাষ্ট্র দুইটি ভিন্ন পদ্ধতিতে ভর্তি পক্রিয়া পরিচালনা করে। যুক্তরাষ্ট্রের নিয়ম অনুযায়ী বাংলাদেশের কোন শিক্ষার্থী যদি তার স্নাতকোত্তর বা পিএইচডি ক্যালটেকে করতে চান তবে একদিকে যেমন তার স্নাতকের সিজিপিএ ভালো থাকা লাগবে সাথে সাথে তাকে করা লাগবে জিআরই। এর মাধ্যমে তারা ভর্তির সুযোগের সাথে সাথে বৃত্তিও পাবেন ফলে পড়তে পারবেন কম খরচে অথবা বিনামূল্যে। ক্যালটেকে পড়তে পারাটা যেকোনো শিক্ষার্থীর জন্যেই গৌরবের বিষয়। শিক্ষার্থীদের সংখ্যায় এটি ছোট হলেও মূলত এটি বিজ্ঞানী এবং উদীয়মান বিজ্ঞানীদের এক মিলনমেলা।favicon59-4

Sharing is caring!

Leave a Comment