প্রোগ্রামিংয়ে দেশসেরা জাহাঙ্গীরনগর
- মো. আসাদুজ্জামান
১২ মার্চ শনিবার। দুপুর গড়িয়ে বিকেলের হাতছানি। চলছে কলেজিয়েট প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতা (এনসিপিসি)-২০১৬’র ফল ঘোষণার আসর। আয়োজনে ছিল ইউনিভার্সিটি অব এশিয়া প্যাসিফিকের (ইউএপি) কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগ। এর সহযোগিতায় ছিল বাংলাদেশ সরকারের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ এবং বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল।
দেশসেরা সব মানুষের পদচারণায় মুখরিত ছিল ইউএপি’র মিলনায়তন। গ্যালারিতে অন্যান্যের সঙ্গে অধীর আগ্রহে বসে আছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মো. নাফিস সাদিক, রাইহাত জামান ও নিলয় দত্ত। দীর্ঘ অপেক্ষার পর অনুষ্ঠানে এই তিনজনের প্রথম স্থান অধিকারের ঘোষণা আসে ‘জেইউ ও-এন-কিউব’ এর নাম। তখন খুশিতে আত্মহারা হন বিজয়ীর দল। আর হবেই না কে? দেশের ১২৬টি দলকে পিছু হটিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন তারা।
কথা হয় দেশসেরা বিজয়ী এই তিন তরুণের সঙ্গে। নাফিস জানান, আগে থেকেই প্রোগ্রামিং ভাল লাগত তার। খুঁজে নিলেন তিন বন্ধু। সবাই মিলে গত বছরেই গঠন করলেন জেইউ ও-এন-কিউব নামের একটি দল। লক্ষ্য কম্পিউটার প্রোগ্রামিং সমস্যার সমাধান করা। পেলেন সাফল্যও। গত বছর এসিএম আন্তর্জাতিক কলেজিয়েট প্রোগ্রামিং (এসিএম আইসিপিসি) প্রতিযোগিতার ঢাকা পর্বে চ্যাম্পিয়ন হন তারা।
দলের আরেক সদস্য রাইহাত জামান নিলয় বলেন, আমরা আমাদের দলটি গঠন করি গত বছরের মাঝামঝি। লক্ষ্য ছিল নভেম্বরে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া এসিএম আইসিপিসি প্রতিযোগিতা। সেটাকে সামনে নিয়েই আমাদের কঠোর চর্চা চলতে থাকে এবং আমরা সেই প্রতিযোগিতাটিতে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করি। আগামীতে আমরা থাইল্যান্ডে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া এসিএম আইসিপিসি – ২০১৬’র চূড়ান্ত পর্বে অংশগ্রহণ করব। তার আগে এই প্রতিযোগিতাটি ছিল আমাদের কাছে নিজেদের আরও একবার দেখে নেওয়ার সুযোগ। লক্ষ্য চূড়ান্ত পর্বে তথা ওয়ার্ল্ড ফাইনাল প্রতিযোগিতায় ভালো করা।’
তিনি আরও বলেন, ‘এমন বড় কোনো প্রতিযোগিতায় বিজয়ী হতে পারলে কার না ভালো লাগে। অবশ্যই আমার অনেক বেশি ভালো লাগছে। জাতীয় পর্যায়ে বিজয় অর্জন করতে পারা অবশ্যই আমার এবং আমার দলের জন্যে অনেক বড় একটি অর্জন।’
এবার প্রস্তুতি নিয়ে কথা বলেন দলের আরেক সদস্য নিলয় দত্ত। তিনি বলেন-‘আমাদের লক্ষ্যই ছিল চ্যাম্পিয়ন হওয়া। দলের অন্য সদস্য নাফিস সাদিক ও রাইয়াত জামানও খুব দক্ষ ছিল। আমাদের দলের সমন্বয়ই আমাদের সাফল্য পেতে সহযোগিতা করেছে।’
পরীক্ষার ধরণ সম্পর্কে নাফিস জানান, পাঁচ ঘন্টার মধ্যে ১২ টি সমস্যার সমাধান করতে হবে। শুধু সমাধান করলেই হবে না। করতে হবে সবার আগে। আমরা ‘জেইউ ও-এন-কিউব’দল, এর মধ্যে ১১টিরই সমাধান করেছিলাম।
প্রথম ও দ্বিতীয় রানার্সআপ হয়েছে যথাক্রমে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের দল এনএসইউ বাগ লাভার্স এবং বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের দল বুয়েট রায়ো।
দলের কোচ হিসেবে ছিলেন আইআইটি ইন্সটিটিউটের পরিচালক একেএম আক্কাস আলী। তার দলের সাফল্যের কথা বলতে গিয়ে বলেন, ‘আমরা আগামী মে মাসে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করতে যাচ্ছি। ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ে বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে আমাদের হাত ধরে। এটাই প্রত্যাশা।’