স্টুডেন্ট ভাড়ায় বৈষম্য কেন?
তাজবিদুল ইসলাম, গণ বিশ্ববিদ্যালয় ( সাভার)
ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক বাংলাদেশের অন্যতম ব্যস্ত সড়কগুলোর মধ্যে একটি। এই সড়কটি দিয়ে চলে দূরপাল্লার বাস, লোকাল বাস, সিটিং সার্ভিস জাতীয় বিভিন্ন ধরনের বাস। তার মধ্যে কিছু প্রকার বাস যেমন ওয়েলকাম, ইতিহাস সিটিং সার্ভিস নাম করে সিট না থাকা সত্বেও উঠাচ্ছে অতিরিক্ত যাত্রী, নিচ্ছে দ্বিগুণ ভাড়া। রাখছে না স্টুডেন্ট ভাড়া।শুধু এই বাসগুলোই নয় অনেক বাসেই চলছে এরকম দুর্নীতি। গত বছরের ১৭ ডিসেম্বর ইতিহাস বাস এবং তার কয়েক মাস পরেই জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীর সাথে স্টুডেন্ট ভাড়া বিষয়েই আবার ওয়েলকাম নামের একটি বাসের সাথে ঝামেলার সৃষ্টি হলে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বেশ কিছু বাস আটকে রাখে এরপর বাস কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নেয় স্টুডেন্ট ভাড়া নেয়ার। কিন্তু শুধু মাত্র উল্লেখ্য ৪ টি বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্যে(ঢাকাবিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলা বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ, তেজগাঁও বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ)।এখানেও সৃষ্টি হচ্ছে বৈষম্যতা। উল্লেখ্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ছাড়া অন্যান্য স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে স্টুডেন্ট ভাড়া নেয়া হচ্ছে না।
অথচ জ্বালানি তেলের দাম ২৪ এপ্রিল মধ্যরাত থেকেই কমেছে। অকটেন ও পেট্রোল লিটারে কমেছে ১০ টাকা আর ডিজেল কেরোসিন প্রতিলিটারে তিন টাকা করে কমেছে। তাহলে কেন এই দুর্নীতি ?
এক ঘোষণায় মাননীয় সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের- “স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সুবিধার কথা বিবেচনা করে সকল পরিবহনে হাফ ভাড়া নেয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন।এবং হুশিয়ারিও দিয়েছিলেন সরকারি পরিবহন বিআরটিসি সহ অন্যান্য বাসে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে হাফ ভাড়া নেয়ার জন্য। না নিলে সঙ্গে সঙ্গে অভিযোগ করবেন। ব্যবস্থা নেয়া হবে”। মন্ত্রীর নির্দেশ অনুযায়ী বেশ কিছু দিন চললেও, পরে ফের নির্দেশ অমান্য করে শুরু হয় ছাত্র-ছাত্রীদের কাছ থেকে বেশি ভাড়া আদায় প্রক্রিয়া।
এ বিষয়ে গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থী নাছিম উদ্দিন অন্তর বলেন, এটা কি ধরনের পদ্ধতি বুঝে উঠতে পারছিনা। আমরা কি স্টুডেন্ট নই?বাস এ উঠে চেকার আগেই জিজ্ঞাসা করে যে এখানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টুডেন্ট আছে কিনা, আইডিকার্ড দেখেন। এরপর তাদের থেকে স্টুডেন্ট ভাড়া রাখা হয়। অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের থেকে সম্পূর্ণ ভাড়া রাখা হয়। আমাদের দেশে শিক্ষা ক্ষেত্রে বৈষম্যতা আছে জানতাম কিন্তু এখন বাসে স্টুডেন্ট ভাড়া নিয়েও বৈষম্যতার সৃষ্টি ও দুর্নীতি করছেন তারা। নির্ধারিত দূরত্বে সরকার কর্তৃক নির্ধারিত ভাড়ার প্রায় দিগুন আদায় করছে সিটিং সার্ভিসের নামে।আবার সিটিং সার্ভিস বলে সিট সংখ্যার চেয়ে অতিরিক্ত যাত্রী তুলছে বাসগুলো।
এভাবেই ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে উল্লেখ্য বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়া অন্যান্য স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের, যার প্রতিবাদ করতে গেলেও সৃষ্টি হচ্ছে সহিংসতার।