বাঁশ ও বেত শিল্প
- উদ্যোক্তা ডেস্ক
সম্ভাব্য পুঁজি :
২০০০০ টাকা থেকে ৫০০০০ টাকা পর্যন্ত।
সম্ভাব্য লাভ:
একটি মোড়া তৈরিতে ৮০ থেকে ১২০ টাকা পর্যন্ত খরচ পড়ে। বিক্রি করা যায় ১৫০ থেকে ৩০০ টাকা পর্যন্ত।
যা প্রয়োজন:
বাঁশ, বেত, প্লাস্টিক, ফিতা, রশি, সাইকেলের পুরোনো টায়ার, আঠা, বড় কাঁচি, প্লাস, দা ইত্যাদি।
প্রস্তুত প্রণালি :
বাঁশ বা বেত কেটে শলা তৈরি করতে হয়। এগুলো শুকিয়ে নিয়ে খাঁচার আকৃতিতে মোড়া তৈরি করে নিতে হয়। খাঁচার উপরিভাগে চামড়া বা প্লাস্টিক দিয়ে ভালো করে মুড়িয়ে নিয়ে বেঁধে ফেলতে হবে। মোড়ার নিচের অংশকে টায়ার দিয়ে মুড়িয়ে বিক্রির উপযোগী করা হয়।
বাজারজাতকরণ:
গ্রামগঞ্জেই কেবল নয়, শহরেও মোড়ার চাহিদা রয়েছে। চেয়ারের তুলনায় মোড়া সস্তায় পাওয়া যায়। বহনের সুবিধা থাকায় শহরের প্রায় প্রতিটি বাড়িতে মোড়ার চাহিদা লক্ষ করা যায়। একটু ভালো মানের করে তৈরি করতে পারলে বিদেশে রপ্তানির সুযোগ রয়েছে। ফার্নিচারের দোকানগুলোতে পাইকারি দরে বিক্রি করা যায়। আবার নিজেও শ্রমিক রেখে ফেরি করে বিক্রি করা যায়।
যোগ্যতা :
বিশেষ কোনো যোগ্যতার দরকার নেই। দু-এক দিন প্রশিক্ষণ নিলেই মোড়া তৈরি করা যায়। এ ছাড়া দক্ষ শ্রমিক নিয়েও পণ্য উৎপাদন করা সম্ভব।
কেস স্টাডি :
বাঁশবেতে জীবিকার চাকা সচল-
বাঁশ ও বেতের কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করে আসছেন কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জ পৌরসভার উত্তর আশুতিয়াপাড়া গ্রামের দুই শতাধিক পরিবারের প্রায় এক হাজার লোক। বংশপরম্পরায় এ পেশায় জড়িয়ে আছেন তারা। আর তাদের তৈরি পণ্য দেশের বিভিন্ন এলাকার পাইকাররা এসে বাড়ি থেকেই কিনে নিয়ে যায়। প্রায় ২০০ বছর ধরে এ পেশাকে আঁকড়ে ধরে রেখেছেন এ গ্রামের লোকজন। গ্রামের শিশু থেকে শুরু করে সব বয়সী নারী-পুরুষ অনেকটাই উৎসবের আমেজে সারাদিন আপন আনন্দে কাজ করে থাকেন। এতে যা আয় হয় তা দিয়েই তাদের সংসার চলে।সরেজমিন শনিবার সকালে ওই গ্রামে গিয়ে দেখা গেছে, পুরো গ্রামেই যেন বাঁশ-বেতের কাজের উৎসব চলছে। সারা বছরই সবাই একত্রে বসে মনের মাধুরী মিশিয়ে এ কাজ করছেন। বসে নেই নারী, পুরুষ, বৃদ্ধ-বৃদ্ধা ও শিশুরা। সবাই যেন আপন মনে কাজ করে যাচ্ছেন। কেউবা বাঁশ কাটছে, কেউ বাঁশের ফালি তৈরি করছে আর কেউ মাছ ধরার উইন্না, ফলো, চাইর, বসার মোড়াসহ বিভিন্ন পণ্য তৈরি করছেন। তারা জানিয়েছেন, এক সময় এ গ্রামে শুধু পলো তৈরি করা হতো। খাল-বিল হাওর-বাঁওড়ে মাছ ধরার জন্য দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে লোকজন এখানে পলো কেনার জন্য আসত। সে কারণে এ গ্রামের নাম পলোপাড়া হিসেবে পরিচিতি লাভ করে। তবে কাগজে-কলমে এ গ্রামের নামকরণ করা হয়েছে উত্তর আশুতিয়াপাড়া। এখনও আশপাশের গ্রামের লোকদের কাছে পলোপাড়া হিসেবেই এ গ্রামের পরিচিতি বেশি। তবে হাওর-বিলে মাছের পরিমাণ কমে যাওয়ায় পলোর চাহিদা অনেকটাই কমে গেছে। প্রায় দেড় হাজার লোকের এ গ্রামে এক হাজারের বেশি লোক বাঁশ ও বেতের কাজ করে থাকেন। এটাই তাদের একমাত্র পেশা। বর্তমানে এ গ্রামের লোক মাছ ধরার পলো, উইন্না, চাইর ও বসার মোড়া তৈরি করে থাকে। আর এসব পণ্য কিশোরগঞ্জ, নেত্রকোনা, সুনামগঞ্জ, নরসিংদী, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, সিলেটসহ দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে পাইকাররা বাড়ি থেকে এসে কিনে নিয়ে যান। এ পেশায় জড়িত আবদুর রহিম জানান, তিনি পিতার কাছ থেকে আট বছর বয়সেই এ কাজ শেখেন। এরপর থেকে তিনি এ পেশায় জড়িয়ে আছেন। তিনি তার পুত্রকে নিয়ে আশপাশ এলাকা থেকে বাঁশ কিনে আনেন। এরপর সে বাঁশ কেটে প্রথমে ফালি করেন। এরপর তিনি ও তার স্ত্রী জমিলা, পুত্র আনোয়ার হোসেন, মেয়ে কামরুন্নেছা মিলে সারাদিন কাজ করেন। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত কাজ করে তারা প্রতিদিন ৮টি মোড়া তৈরি করতে পারেন। এতে খরচ হয় ১ হাজার ৩০০ টাকা। আর প্রতিটি মোড়া ২৫০ টাকা করে বাড়ি থেকে কিনে নিয়ে যান পাইকাররা। এতে তাদের প্রতিদিন আয় হয় প্রায় ৭০০ টাকা। এ আয়ের টাকা দিয়েই আবদুর রহিমের সংসার চলে বলে জানা গেছে। আশরাফ আলী জানান, তিনি স্ত্রী ও এক ছেলেকে নিয়ে বাঁশ-বেতের কাজ করে দৈনিক ৫০০ টাকা উপার্জন করতে পারেন। এতে তার সংসার ভালোই চলছে বলে জানান। একই কথা জানালেন আবদুল আলীসহ অনেকেই। আবুল কালাম জানান, সে আট বছর বয়স থেকেই পিতার কাছে বাঁশ-বেতের কাজের হাতেখড়ি। এখন সে তার স্ত্রী হারুনা, পুত্র সবুজ মিয়া, মেয়ে অজুফা ও জীবনা তারা সবাই একাজ করে থাকেন। বিধবা জমিলা জানান, তার স্বামী ২০ বছর আগে মারা গেছেন। এরপর থেকেই দুই সন্তানকে নিয়ে তিনি বাঁশ-বেতের কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করে আসছেন। একই গ্রামের বিধবা আমেনা বেগম জানান, তিনি বাঁশ-বেতের কাজ করেন, পাশাপাশি তিনি ছাগল পালন করে বেশ সুখেই আছেন বলে এ প্রতিবেদককে জানান। এ গ্রামের শিশুরা বিদ্যালয়ের যাওয়ার পাশাপাশি এ কাজ করে থাকেন।
করিমগঞ্জ পৌরভার মেয়র হাজী আবদুল কাইয়ুম জানান, বাঁশ-বেতের কাজ করে আশুতিয়াপাড়ার লোকজন জীবনধারণ করে থাকেন। এ গ্রামের লোকদের আরও স্বাবলম্বী করতে ক্ষুদ্রঋণ দেয়ার চিন্তা করা হচ্ছে বলে তিনি এ প্রতিবেদককে জানান।
বাঁশ ও বেত শিল্পের ওপর চলছে আদিবাসীদের জীবন :
বোরো ধান কাটা-মাড়াইয়ের কাজ চলছে পুরোদমে। ধান মাড়াইতে প্রয়োজন পড়ে বাঁশের তৈরি কুলা, ডালিসহ অন্যান্য জিনিসের। তাই রাত-দিন ব্যস্ত থাকতে হচ্ছে পীরগঞ্জের চতরা ইউনিয়নের মাহালীপাড়া গ্রামের আদিবাসীদের। সুন্দরগঞ্জের মীরগঞ্জ বাজার এবং পীরগাছার কালিগঞ্জ, ইটাকুমারী আদিবাসীদের ১০০টি পরিবারের কয়েক শতাধিক গরিব শ্রেণীর দিনমজুর ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন বাঁশ ও বেত দিয়ে নিত্যপ্রয়োজনীয় এসব জিনিস তৈরিতে। বাঁশ শিল্পের অন্যতম রংপুরের এ এলাকার প্রায় ১০০টি পরিবার বংশপরম্পরায় এ কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করে আসছে। এ ছাড়াও পীরগঞ্জ উপজেলার চৈত্রকোল, টুকুরিয়া ও বড়দরগা ইউনিয়নে বেশ কিছু সাঁওতাল পল্লীতে বাঁশ-বেতের জিনিস তৈরি হয়ে থাকে। আদিবাসী পল্লী মাহেলীপাড়ায় গিয়ে দেখা যায়, কাকডাকা ভোর থেকে প্রতিটি বাড়িতে তাদের পরিবারের সদস্যরা বাঁশ-বেত নিয়ে হরেক রকমের পণ্য তৈরিতে ব্যস্ত। এত নিপুণ ও দ্রুততার সঙ্গে তারা বাঁশের কাজ করে, দেখলে অবাক হতে হয়। মনে হয় বাঁশ নয়, তারা কাগজ নিয়ে কাজ করছে। ওই গ্রামের অরুণ মারডির পরিবারের স্ত্রী, ছেলে, মেয়ে ও ছেলের বউ সবাই খুব ব্যস্ততার সঙ্গে বাঁশ-বেতের পণ্য তৈরি করছেন। অরুণ মারডির স্ত্রী কল্পনা মারডি জানান, তারা বাঁশ ও বেত দিয়ে কুলা, ডালা, ডালি, ঢাকি, চাটাই, খোঁচা, ধান রাখার ডোল, ভাত ঢাকনি, করপা, মুরিচালা, হাতচালনা, খইচালা, চালন, মুরগির খাঁচা, মাছ ধরা ও রাখার খলইসহ বিভিন্ন ধরনের জিনিস তৈরি করেন। বছরের ছয় মাস বেচাকেনা খুব ভালো হয়, তাই ব্যস্ত থাকতে হয় খুব বেশি। বছরের অন্যান্য সময়ও কাজ খারাপ থাকে না। তিনি আরও জানান, স্বামী, স্ত্রী, দুই ছেলে ও এক মেয়ে এবং ছেলের বউসহ ৬ জনের সংসার। তার ছেলে মিথুন হেমরম চতরা ইকলিমপুর আদর্শ উচ্চবিদ্যালয়ে ও মেয়ে ছালমা হেমরম একাদশ শ্রেণীতে পড়ে। আয় যা হয় তা দিয়ে সারা বছর মোটামুটি ভালোই চলে।
একই গ্রামের ৬৫ বছরের বৃদ্ধ মহিলা রত্না মারডি জানান, এ পাড়ায় তার বাবা ও স্বামীর বাড়ি। তিনি দেখেছেন তার মা-বাবা বাঁশ ও বেত শিল্পের কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করতেন। তিনিও এ পেশার সঙ্গে জড়িত। তিনি সুন্দর কারুকাজে আদিবাসীদের সনাতনের বিয়ের ঢালি তৈরি করেন আর এই ঢালি তৈরি করা হয় শুধু বাঁশ দিয়ে। এই ঢালি তৈরি করতে খরচ পড়ে ৮০০ থেকে ৯০০ টাকা। বিক্রি হয় ১২০০ থেকে ১৩০০ টাকায়। বিয়ের একটি ঢালি তৈরিতে সময় লাগে প্রায় চার দিন। তিনি আরও জানান, বাঁশের উৎপাদন দিন দিন কমে যাচ্ছে। তার ওপর দামও বেড়ে যাচ্ছে। ফলে উৎপাদন খরচ আগের চেয়ে বেশি হওয়ায় তাদের পক্ষে পেশায় টিকে থাকা কঠিন হয়ে পড়েছে। বাঁশ শিল্পী হাসু টুডু জানান, উৎপাদিত পণ্যগুলো স্থানীয় চাহিদা মেটানোর পর দূর-দূরান্তে বিক্রি হয়ে থাকে। স্থানীয়ভাবে বেশ কিছু বেপারী এগুলো কিনে নেন। পাইকারি ক্রেতা সুনীল টুডু জানান, এসব পণ্যে তাদের কাছ থেকে কিনে রংপুরের সুন্দরগঞ্জ, মীরগঞ্জ, পীরগাছার ইটাকুমারী, শঠিবাড়ি, মিঠাপুকুরসহ স্থানীয় চাহিদা মেটানোর পর বগুড়াসহ বিভিন্ন জেলা শহরগুলোতে বিক্রি করা হয়।
মেহেদীগঞ্জের বাঁশ-বেত শিল্পের বিপ্লব: দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী নারীরাও কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করছে
নদী-বিল-খাল’ এই তিন নিয়ে জেলা বরিশাল। এই বরিশাল জেলার মেহেদীগঞ্জ উপজেলার চরএখারিয়া, চাঁদপুর ইউনিয়ন ও মেহেদীগঞ্জ পৌরসভার ৩৫ ওয়ার্ডে রয়েছে অনেক প্রতিবন্ধী নারী।
২০০০ সালের পূর্বে প্রতিবন্ধী কি বা কাকে বলে সেটা জানতো না মেহেদীগঞ্জ উপজেলা অধিকাংশ প্রতিবন্ধী ব্যক্তি এবং সাধারণ মানুষ। জানত না প্রতিবন্ধী নারীরা কাজ করতে সক্ষম। ২০০০ ইং সালে বাংলাদেশ প্রতিবন্ধী কল্যাণ সমিতি “বিপিকেএস” নামক একটি জাতীয় বেসরকারি সংস্থা উন্নয়নে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের স্ব-উদ্যোগ (পিএসআইডি) প্রকল্পের কাজ শুরু করেন। মন্থর গতিতে সেখানে গড়ে ওঠে ৩৫টি ছোট-ছোট তৃণমূল প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের সংগঠন। ফলে তৃণমূল প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের সংগঠন সমূহের প্রতিবন্ধী ব্যক্তিরা একত্রিত হয়ে বরিশাল ডিজএ্যাবল্ড পিপলস্ অর্গানাইজেশন টু ডেভেলপমেন্ট “বিডিপিওডি” নামে একটি সংগঠন তৈরী করে। প্রথমে নিজেরা নিয়মিত সাপ্তাহিক সঞ্চয় করা আরম্ভ করে। অতঃপর ‘পিএসআইডি’ এপ্রোচের অন্তর্গত বেসিক ট্রেনিং অন ডিজএ্যাবিলিটি, সেলফ কনফিডেন্স, কান্ট্রি স্টাটাস্, ইনকাম জেনারেটিং এ্যাকটিভিটি, লিডারশিপ, পিএসআইডি অরিয়েন্টেশন, জেন্ডার ইস্যু, একসেসেবুল স্যানিটরি ল্যাট্রং এ্যান্ড টিওবয়েল, প্রোগ্রাম এ্যাকসেলারেইট, এ্যাডভোকেসি এ্যান্ড লবিং, লোকালাইজেশন পাওয়ার এব্যান্ড প্রোগ্রাম এবং ডিপিওডি ডিজএ্যাবল্ড পিপলস্ অর্গানাইজেশন টু ডেভেলপমেন্ট ম্যানেজমেন্ট বিষয়ে মোট ১২ টি ট্রেনিং গ্রহণ করে প্রতিবন্ধী নারীরা আত্ম প্রত্যয়ে বলিয়ান হয়ে উঠে।
প্রশিক্ষণের পর প্রতিবন্ধী পুরুষের পাশাপাশি প্রতিবন্ধী নারীরাও প্রয়োজনানুযায়ী ঋণ নিয়ে আয়বর্ধকমূলক কাজ শুরু করে। ফলে বর্তমানে প্রতিবন্ধী নারীরা বাশের চাঁটাই, মোড়া, মাছ ধরা চাঁই, খাঁচা, কুলাসহ বিভিন্ন রকমের দ্রব্যাদি তৈরী করে থাকে। সকাল থেকে প্রায় ৫টা পর্যন্ত প্রতিদিন একই কাজ করে নিজেদের ভাগ্যের চাকা ঘুরিয়েছে এই সব প্রতিবন্ধী নারীরা।শাহিদা বেগম (৪০) আনোয়ারা বেগম )৪২ (দৃষ্টি প্রতিবন্ধী এবং রওশানয়ারা খাতুন )৩৭ (শারীরিক প্রতিবন্ধী নারী জানান- ২০০৩ সাল থেকে আমরা নিয়মিত কাজ করে সংসার চালাই। সংসার চালিয়ে যে পরিমান টাকা অতিরিক্ত হাতে থাকে তা দিয়ে ঘরের বিভিন্ন জিনিস পত্র ক্রয় করি এবং সঞ্চয় করি।
মেহেদীগঞ্জে শাহিদা, আনোয়ারা এবং রওশানা বেগমের মত অধ-শতাধিক বিভিন্ন ধরণের প্রতিবন্ধী নারী এখন সমাজের বোঝা নয়, কারো করুণার পাত্রও নয়। তারা ভিক্ষার ঝুলি ঘাড়ে নিয়ে দ্বারে দ্বারে না ঘুরে বাঁশের বিভিন্ন দ্রব্যাদি তৈরী করে জীবিকা নির্বাহ করছে। প্রতিবন্ধী নারীদের উৎপাদিত দ্রব্যাদি সমূহ বরিশাল জেলার বিভিন্ন অঞ্চল থেকে ব্যবসায়ীরা পাইকারী দরে নগদ মূল্যে ক্রয় করে নিয়ে যায়।
সরজমিনে প্রত্যক্ষ করা গেছে- স্বাধীনতার পর থেকে শাহিদা বেগম ও রওশানয়ারা বেগমের ঘরের চাল বা ছাদ ছিলো বাঁশ আর খড়ের। কিন্তু বর্তমানে টিন দিয়ে ঘরের চাল বানিয়েছে। বরিশাল ডিজএ্যাবল্ড পিপলস্ অর্গানাইজেশন টু ডেভেলপমেন্ট (বরিশাল-ডিপিওপি) এর পরিচালক শাহ আলম জানান- যে সমস্ত প্রতিবন্ধী নারী বাঁশের জিনিস তৈরী করে, তারা একেবারে দরিদ্র এবং মধ্যবয়সী গ্রামীণ প্রতিবন্ধী নারী। এ বয়সে দ্বারে দ্বারে তাদের ভিক্ষা করার কথা। কিন্তু ‘বিডিপিওডি’র ডাকে স্ব-উদ্যোগে এগিয়ে এসে মেহেদীগঞ্জের প্রতিবন্ধী নারীরা কাজ করে সংসার চালাচ্ছে।
বর্তমানে সরকারিভাবে ওসব প্রতিবন্ধী নারীদের ব্যাংক ঋণ এবং উন্নতমানের আধুনিক প্রশিক্ষণ দেয়া হলে তাদের উৎপাদিত দ্রব্যাদি বিদেশে রপ্তানী করে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা সম্ভব হতে পারে।