বুয়েটে ভর্তির ১০ পরামর্শ

বুয়েটে ভর্তির ১০ পরামর্শ

  • ক্যাম্পাস ডেস্ক

প্রকৌশলী হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে যাঁরা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন, তাঁদের জন্য পরামর্শ দিয়েছেন ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ভর্তি পরীক্ষায় প্রথম শোয়াইব আহমেদ। শোয়াইব এখন বুয়েটে তড়িৎ ও ইলেকট্রনিকস কৌশল বিভাগে পড়ছেন।


১. প্রশ্নপদ্ধতি ও মানবণ্টন সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণ থাকা চাই: সবাই নিশ্চয়ই জানো, উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার প্রশ্নপদ্ধতির সঙ্গে ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপদ্ধতির বেশ পার্থক্য আছে। যদিও সিলেবাস একই। তাই বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপদ্ধতি ও মানবণ্টন সম্পর্কে শুরু থেকেই সুস্পষ্ট ধারণা নিয়ে নেওয়া উচিত।

২. আত্মবিশ্বাসী হতে হবে: পারব কি পারব না—এই দোটানা মন থেকে দূর করে ফেলতে হবে। আমি আমার সর্বোচ্চ চেষ্টাটুকু করব, শুধু এই প্রতিজ্ঞাটা মনের মধ্যে থাকলেই হলো।

৩. নতুন বই পড়ব, পুরোনোটাও কাজের: নতুন বই আর পুরোনো বইয়ের মধ্যে কোনটি পড়ব? এমন একটা প্রশ্ন সবার মধ্যেই কম বেশি আছে। আমি নিজের অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি, আমাদের সময় বুয়েটে ভর্তি পরীক্ষার সব প্রশ্নই হয়েছিল নতুন বই বা নতুন সিলেবাসের আলোকে। তাই নতুন বইটাই বেশি অনুসরণ করা উচিত। তবে অনেক তথ্য বা সুস্পষ্ট ব্যাখ্যার জন্য পুরোনো বইটাও কিন্তু অনেক কাজের।

শোয়াইব আহমেদ
শোয়াইব আহমেদ

৪. গণিতের জন্য চাই চর্চা: গণিত অংশে ভালো নম্বরের জন্য শুরু থেকেই প্রতিনিয়ত অনেক বেশি চর্চার মধ্যে থাকা উচিত। মনে রাখতে হবে, উত্তরপত্রে উত্তর লেখার জায়গা এবং হাতঘড়িতে সময়—দুটোই খুব কম থাকে। যারা এই দুটি বিষয় মাথায় রেখে যথাযথভাবে চর্চা করতে পারবে, পরীক্ষায় তারাই ভালো করবে।

৫. পদার্থবিজ্ঞানে জরুরি সূত্রের প্রমাণ: পদার্থবিজ্ঞানের ক্ষেত্রে তোমাদের উচিত শুধু সূত্র মুখস্থ না করে সূত্রের প্রমাণগুলো বুঝে পড়ে ফেলা। এতে করে যে ধরনের সমস্যাই আসুক না কেন, ধারণা পরিষ্কার থাকলে উত্তর করা সহজ হবে। যেকোনো বিষয় পড়ার সঙ্গে সঙ্গে তা থেকে সম্ভাব্য কী ধরনের প্রশ্ন আসতে পারে, সে বিষয়ে নিজেই চিন্তাভাবনা করো। আর ভিন্নধর্মী বা কঠিন সমস্যাগুলো খাতায় আলাদা করে লিখে চর্চা করতে হবে অনেক বেশি।

৬. রসায়ন লিখে লিখে পড়ো: রসায়ন বিষয়ে ভালো করার জন্য খুব ভালো স্মৃতিশক্তি প্রয়োজন। আর ভালোভাবে মনে রাখতে চাইলে লেখার কোনো বিকল্প নেই। যেকোনো বিক্রিয়া থেকে শুরু করে গাণিতিক সমস্যা—সবকিছুই লিখে লিখে পড়লে মনে রাখা সহজ হবে।

৭. চোখ রাখো বিগত বছরের প্রশ্নে: প্রশ্ন ব্যাংক সমাধান করতে হবে। যখনই যে অধ্যায় পড়া শেষ হয়ে যাবে, সঙ্গে সঙ্গেই সেই অধ্যায়ে বিগত বছরে আসা প্রশ্নগুলোর সমাধান করে ফেলতে হবে। এতে করে প্রশ্নপদ্ধতি সম্বন্ধে ভালো ধারণা জন্মাবে এবং কোন কোন বিষয় বেশি গুরুত্বপূর্ণ, সেটা বুঝতে পারবে।

৮. মডেল টেস্ট জরুরি: পড়াশোনার পাশাপাশি আমার পরামর্শ থাকবে, ভর্তি পরীক্ষার আঙ্গিকে নিয়মিত পরীক্ষা দাও। পুরোনো প্রশ্নে বাসায় বসে পরীক্ষা দিতে পারো। প্রয়োজনে বন্ধুরা একে অপরের জন্য প্রশ্ন তৈরি করে দাও। তারপর একে অন্যের খাতা মূল্যায়ন করো। এতে করে প্রতিযোগিতামূলক মনোভাব তৈরি হবে, আর নিজের অবস্থান সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যাবে।

৯. সময়ের হিসাব রাখো: প্রশ্ন নির্বাচনের ক্ষেত্রে ‘মডেল টেস্ট’গুলোর মাধ্যমে মূল পরীক্ষার জন্য প্রস্তুত হওয়া উচিত। কোন ধরনের প্রশ্ন সহজ, আগে উত্তর করা উচিত বা কোনগুলো কঠিন অথবা সময়সাপেক্ষ, সে সম্পর্কে ধারণা থাকতে হবে। বারবার মডেল টেস্ট দিতে দিতে নিজেই সময় ব্যবস্থাপনা শিখে ফেলবে। প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ভর্তি পরীক্ষার ক্ষেত্রে এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

১০. পরিশ্রম করতে হবে: সব কথার শেষ কথা, অনেক বেশি পরিশ্রম করতে হবে। প্রতিদিনের পড়া প্রতিদিন করতে হবে। এই সময়ে এক দিন পিছিয়ে পড়লে সেটা কাটিয়ে ওঠা কঠিন। যত বেশি পরিশ্রম করবে, গুরুত্ব দেবে—ভালো ফলাফল করার সম্ভাবনা তত বাড়বে।

সূত্র: প্রথম আলোfavicon59

Sharing is caring!

Leave a Comment