’অবসরপ্রাপ্ত পেশাজীবিদের সংগঠন প্রতিষ্ঠার উপায়’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠক
- ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি
বিভিন্ন পেশার দক্ষতাসম্পন্ন অবসরপ্রাপ্ত পেশাজীবিদের কর্মজীবনে অর্জিত বাস্তব অভিজ্ঞতা, মেধা ও প্রজ্ঞাকে গবেষণা ও উন্নয়ন কাজে প্রয়োগের উদ্দেশ্যে তাদের সমন্বয়ে একটি সংগঠন প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি এইজিং সাপোর্ট ফোরামের সহযোগিতায় আজ (২৪ সেপ্টেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যাঙ্কুয়েট হলে “বাংলাদেশে অভিজ্ঞ অবসরপ্রাপ্ত পেশাজীবিদের সংগঠন প্রতিষ্ঠার উপায়” শীর্ষক গোল টেবিল বৈঠকের আয়োজন করে। এ গোল টেবিল বৈঠকে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান কাজী রিয়াজুল হক এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন এফবিসিসিআই এর সাবেক সভাপতি ও স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক লিমিটেডের চেয়ারম্যান কাজী আকরাম উদ্দিন আহমেদ। ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান মো. সবুর খানের সভাপতিত্বে আয়োজিত এ গোল টেবিল বৈঠকে সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গিভেন্সি গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান খতিব আবদুল জাহিদ মুকুল এবং গোল টেবিল বৈঠক সঞ্চালনা করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. ইউসুফ এম ইসলাম এবং প্রতপাদ্য বিষয়ের উপর মাল্টিমিডিয়া উপস্থাপনা তুলে ধরেন বাণিজ্য অনুষদের সহযোগী অধ্যাপক মাসুদ ইবনে রহমান।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন বাংলাদেশের চেয়ারম্যান কাজী রিয়াজুল হক বলেন, জাতিসংঘের সংজ্ঞা অনুযায়ী, ৬০ বছরের উর্দ্ধে বয়ষ্ক মানুষকে প্রবীণ বা সিনিয়র সিটিজেন বলা হয়। বাংলাদেশেও এই সংজ্ঞা অনুসরণ করা হয়। এই সংজ্ঞা অনুযায়ী ২০২০ সালের মধ্যে বাংলাদেশে প্রবীণদের সংখ্যা হবে মোট জনসংখ্যার ২০%। অর্থাৎ জনসংখ্যার একটা বড় অংশ খুব শিগগিরই বয়ষ্কদের কাতারে চলে যাবে। এই বিপুল জনগোষ্ঠীকে যথাযথভাবে কাজে লাগানোর জন্য এখনই উদ্যোগ গ্রহণ করা উচিত। এ ব্যাপারে বাংলাদেশ সরকারের কিছু কার্যক্রম রয়েছে, যেমন বয়ষ্ক ভাতা প্রকল্প। এই প্রকল্পের অধীনে প্রায় ২৭ লাখ মানুষকে ভাতা প্রদান করা হয়। কিন্তু এই উদ্যোগই যথেষ্ট নয়। প্রবীণদের আর্থিক সহায়তার পাশাপাশি অন্যান্য সহযোগিতারও প্রয়োজন রয়েছে। কারণ মানবাধিকার সবার জন্য প্রযোজ্য। এ জন্য সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানেরও এ ব্যাপারে উদ্যোগ গ্রহণ করা উচিত। আমি অত্যন্ত আনন্দিত যে ড্যাফোডিল ইউনিভার্সিটি সেই সময়োপযোগী উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। এমন উদ্যোগ গ্রহণ করার জন্য ড্যাফোডিল ইউনিভার্সিটিকে সাধুবাদ জানাই।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে এফবিসিসিআই এর সাবেক সভাপতি ও স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকের চেয়ারম্যান কাজী আকরাম উদ্দিন আহমদ, বলেন, একজন মানুষ দীর্ঘদিন পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে করতে সেই পেশায় বিশেষজ্ঞ হয়ে ওঠে। কিন্তু অবসরে যাওয়ার পর তার কিছুই করার থাকে না। আমরা তাদেরকে কোনো কাজ দেই না। অথচ আমরা চাইলেই তার কাছ থেকে পরামর্শ নিতে পারি। আপনারা জানেন, আমাদের দেশে অনেক প্রতিষ্ঠানে চীন, জাপান, শ্রীলংকা থেকে বিশেষজ্ঞ এনে চাকরি দেয়া হচ্ছে। এতে করে দেশের অনেক টাকা বিদেশে চলে যাচ্ছে। আমরা চাইলেই আমাদের অবরপ্রাপ্ত পেশাজীবীদের এসব প্রতিষ্ঠানের কাজে ব্যবহার করতে পারি। এতদিন এই অবসরপ্রাপ্ত পেশাজীবীদের কোনো সংগঠন ছিল না। ড্যাফোডিল ইউনিভার্সিটি এ ব্যাপারে উদ্যোগ গ্রহণ করেছে বলে তাদেরকে সাধুবাদ জানাই। এটি যদি একটি সফল সংগঠনে পরিণত হয় তবে এর মাধ্যমে সরকারের কাছে আমরা নানা প্রস্তাব উত্থাপন করতে পারব।
গোল টেবিল বৈঠকের সভাপতি ও ও ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির চেয়ারম্যান মো. সবুর খান বলেন, আমাদের দেশে অনেক ধরনের ক্লাব আছে, সংগঠন আছে। কিন্তু অবসরপ্রাপ্ত পেশাজীবীদের কোনো সংগঠন নেই যদিও তাদের সমাজ ও দেশের জন্য এখনো অনেক কিছু দেয়ার আছে। আমরা যদি বিভিন্ন শ্রেণীপেশার অবসরপ্রাপ্ত মানুষদের এক প্ল্যাাটফর্মে আনতে পারি তবে তাদের কাছ থেকে নানা ধরনের পরামর্শ পাওয়া যেতে পারে। তাদের পরামর্শ কাজে লাগিয়ে লাভবান হতে পারে অনেক ব্যাক্তি ও প্রতিষ্ঠান। আবার তারাও এ সুযোগকে কাজে লাগিয়ে ব্যক্তিগত জীবনে সুস্থ জীবন যাপন করতে পারে। এই উদ্দেশ্যেই আমরা দক্ষ অবসরপ্রাপ্ত পেশাজীবীদের সংগঠিত করতে চাই, তাদের নেটওয়ার্ককে শক্তিশালী করতে চাই এবং তাদের বার্ধক্যকে উপভোগ করার পাশাপাশি সমাজ ও দেশের জন্য অবদান রাখার সুযোগ তৈরী করে দিতে চাই। এজন্য আমরা বিভিন্ন পেশার দক্ষও অভিজ্ঞ অবসরপ্রাপ্ত পেশাজীবিদের ক্যাটাগরি ভিত্তিক শক্তিশালী ডাটা বেইস তৈরীর মাধ্যমে তাদের অভিজ্ঞতা ও দক্ষতাকে কাজে লাগাতে চাই।
গোল টেবিল বৈঠকে আরো উপস্থিত ছিলেন অগ্রনী ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর খন্দকার বজলুল হক, ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনল ইউনিভার্সিটির উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. এস এম মাহাবুবুল হক মজুমদার, বাণিজ্য ও অর্থনীতি অনুষদের ডীন অধ্যাপক রফিকুল ইসসলাম, পাবলিক হেলথ ডিপার্টমেন্টের অধ্যাপক ড. এস এম কেরামত আলী, এডজাঙ্কট প্রফেসর ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অবঃ) মির্জা বাকের, এইজিং সাপোর্ট ফোরামের সভাপতি জনাব মোঃ হাসান আলী, বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালসের এডজাঙ্কট প্রফেসর ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অবঃ) মোঃ আনিসুজ্জামান ভ‚ইয়া, স্যার উইলিয়াম বেভারেজ ফাউন্ডেশনের কান্ট্রি ডিরেক্টর মেজর জেনারেল(অবঃ) জীবন কানাই দাস,গিভেন্সী গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজ এবং বয়স্ক পূনর্বাসন কেন্দ্রের পরিচালক মিসেস মাসুমা খাতুন লিপা, জাপান বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশীপ হাসপাতালের সার্জারী অধ্যাপক সরদার এ নাইম, উদয়ন উচ্চ মাধ্যমিক স্কুলের অধ্যক্ষ ড. উম্মে সেলিমা বেগম, ঢাকা সিটি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মোঃ শাজাহান খান, অতিরিক্ত সচিব ( অব.) মো. মোরশেদ আলম ও চাঁদপুর সরকারি কলেজের প্রাক্তন অধ্যক্ষ প্রফেসর মো. ইকবাল হোসেন।![]()
