রঙে রঙিন সারাদিন
- আনোয়ার হাবিব কাজল
ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ছায়াঘেরা, পাখির কলকাকলিতে মুখর ছায়াসুনিবিড় শান্তিময় সবুজ পরিবেশে আশুলিয়ায় স্থায়ী ক্যাম্পাসে প্রাণ চাঞ্চল্য, হৈচৈ, নাচ-গান ও ছাত্র-ছাত্রীদের মিলন মেলার ভেতর দিয়ে ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয় পঞ্চদশ বছরপূর্তি উদযাপন করল ২৮ জানুয়ারি। খোলামেলা পরিবেশে সবুজ ক্যাম্পাসটি সেদিন সেজেছিল নতুনের বারতা নিয়ে। দিনব্যাপী আয়োজিত বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানমালার মধ্যে র্যালি, পিঠা উৎসব, আলোচনা অনুষ্ঠান, স্বেচ্ছায় রক্তদান কর্মসূচি, বৃক্ষরোপণ, বনভোজন, সেলিব্রেটি শো, খেলাধুলা, প্রজেক্ট প্রদর্শনী, ফান ইভেন্টস, র্যাফেল ড্র ও লাইভ কনসার্ট মাতিয়ে তোলে ১৫০ একরজুড়ে পুরো বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস। কেউ ব্যস্ত ছিল তাদের নিজেদের বিভাগের বৈচিত্র্য অন্য বিভাগের শিক্ষার্থী ও অতিথিদের কাছে তুলে ধরতে। কাউকে দেখা যায় মঞ্চে গান ও নাচ পরিবেশন করতে আবার কেউ অভিনয়ে সবাইকে মুগ্ধ করছে। ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা পুরো দিন রঙিন করে স্মৃতির পাতায় আটকে রাখতে কোনো রকম আয়োজনের কার্পণ্য করেনি।
ছাত্রছাত্রীদের যেমন খুশি তেমন সাজোসহ শেষ বিকেলে ওয়ারফেজের পরিবেশনায় গানের তালে মেতে ওঠে পুরো মাঠ। বিশ সহস্রাধিক নবীন-প্রবীণ শিক্ষার্থীর স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে এটি বর্ণাঢ্য মিলন মেলায় রূপ নেয়। অনুষ্ঠানে যোগ দিতে সকাল থেকেই ধানমণ্ডি ক্যাম্পাসে একে একে জড়ো হতে থাকে পুরো ড্যাফোডিল পরিবার। সকল শিক্ষার্থীর কাছে ক্যাম্পাসের মূল আকর্ষণ ছিল সর্বাধুনিক প্রযুক্তি ও অপূর্ব নির্মাণ শৈলীতে ভাস্বর ও নান্দনিক সৌন্দর্যের আধার বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক, মূল ভবন, প্রশাসনিক ভবন, শহীদ মিনার, মাল্টিপারপাস অডিটরিয়াম ও গলফ কোর্স। এসব এলাকাকে ঘিরে শিক্ষার্থীদের কৌতূহলের অন্ত ছিল না।
চলতে থাকে অবিরাম ফটোসেশন। কেউ কেউ আবার শুরু করে বাস্কেট বল খেলা, কেউ আবার বিশাল দাবা কোর্ট নিয়ে ছিল ব্যস্ত। কর্তৃপক্ষ যেমন নানা আয়োজনের কোনো কমতি রাখেনি, তেমনি শিক্ষার্থীরাও তাদের প্রাণের উচ্ছ্বাস শতধারায় উৎসারিত করে আনন্দ সঞ্জীবনীর অমৃত সুধা গ্রহণে বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেনি। এরপর সবাই একে একে পরখ করে নেয় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের আধার কাঁঠাল বাগান। চলে জম্পেশ আড্ডা। মাঠের এক পাশে স্টলগুলোতে সারাদিন চলে বিভিন্ন বিভাগের প্রদর্শনী, রক্তদান কর্মসূচি ও প্রাথমিক প্রতিবিধানসহ নানা আয়োজন।
সকাল ১০টায় ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির নবীন শিক্ষার্থীদের বরণ করে নেওয়ার মধ্য দিয়ে পঞ্চদশ প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর মঞ্চের পর্দা উন্মোচিত হয়। এরপর ডিআই ইউ কালচারাল ক্লাবে চলে নানা আয়োজন, যা শিক্ষার্থীদের দারুণভাবে মাতিয়ে তোলে। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্রছাত্রীদের সংগঠন ডিআইইউ অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের ‘পজিটিভ বাংলাদেশ’-এর পরিবেশনাও ছিল বেশ আকর্ষণীয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের বিবিএ প্রোগ্রামের শিক্ষার্থী ও চ্যানেল আই সেরা কণ্ঠ ঝিলিকের পরিবেশনা শিক্ষার্থীদের সাগরে ভাসিয়ে নেয়। এরই মাঝে র্যাফেল ড্র অনুষ্ঠান শেষ করে সবাই ওয়ারফেজের লাইভ কনসার্টের অপেক্ষায় থাকে। ওয়ারফেজের সুরের মূর্ছনা শিক্ষার্থীদের দারুণভাবে মাতিয়ে তোলে। গান পরিবেশনের পর সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসতেই বেজে ওঠে বিদায়ের সুর। ভাঙে মিলন মেলা। আবার এক বছর পর এমন আরও একটি সফল আয়োজনের প্রত্যাশা নিয়ে সবাই বাড়ি ফেরে।