একটি সর্বাধুনিক বিশ্ববিদ্যালয়ের গল্প
- ক্যাম্পাস ডেস্ক
দেশের অন্যতম সেরা বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি (ডিআইইউ)। এই বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে এবারের বিশেষ আয়োজন।
২০০২ সালের ২৪ জানুয়ারি যাত্রা শুরু করেছিল ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি (ডিআইইউ)। প্রথম বছরে অনুষদ ছিল মাত্র দুটি, ছাত্র-ছাত্রী ছিল ৬৮ জন।
এখন ধানমণ্ডি, আশুলিয়া ও উত্তরায় তিনটি ক্যাম্পাস আছে। প্রধান ক্যাম্পাসটি ঢাকার মিরপুর রোডের ধানমণ্ডির শুক্রাবাদে। শিক্ষক আছেন ৬০০ জন। সাভারের আশুলিয়ায় ১৫০ একরেরও বেশি জায়গার ওপর স্থায়ী ক্যাম্পাস আছে। তাতে শিক্ষা, প্রশাসনসহ অনেক ভবন আছে। সব ছাত্র-ছাত্রীর জন্য আবাসিক সুবিধাও আছে। কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের দশম সেমিস্টারের ছাত্রী রেহনুমা ইসলাম বললেন, ‘যেন তথ্য-প্রযুক্তিনির্ভর হয়ে উঠি, সে জন্য দ্বিতীয় সেমিস্টারেই বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আমাদের একটি করে ল্যাপটপ ফ্রি দেয়, কম্পিউটারাইজড ক্লাসরুমে ক্লাস হয়। স্যাররা সব সময় লেখাপড়ায় উৎসাহিত করেন। কোনো কিছু না বুঝলে আবার বোঝান। ’
বেশ কয়েক দিন আগে পাস করে গেলেও এখনো বিশ্ববিদ্যালয়ের কথা ভুলতে পারেননি হাসান যোবায়ের। তিনি বললেন, ‘আমাদের সব নোটিশ বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে থাকে। বেতন দেওয়া থেকে শুরু করে অ্যাসাইনমেন্ট জমা, পরীক্ষার ফলাফল প্রদান—সবই অনলাইনে করা যায়। ‘ডিআইইউ স্মার্ট স্টুডেন্ট’ নামের অ্যানড্রয়েট অ্যাপের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা নোটিশ, ক্লাস রুটিন চেক করতে পারে। পরীক্ষার ফলাফল জানতে পারে, টিউশন ফিও জানা যায়। তবে এই অ্যাপ ব্যবহার করতে হলে অবশ্যই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দেওয়া মেইল আইডি ও পাসওয়ার্ড দিয়ে লগইন করতে হয়। ভর্তি হলেই সব ছাত্র-ছাত্রীকে একটি মেইল অ্যাড্রেস দেওয়া হয়। ‘স্টুডেন্ট পোর্টাল’ নামের সাইটে গিয়ে লগইন করতে হয়। এরপর ড্যাশবোর্ড থেকে কোর্স রেজিস্ট্রেশন, কোর্স ফি, রেজাল্ট চেক করা, নিজের প্রফাইল আপডেট, শিক্ষকদের ফিডব্যাক দেওয়াসহ লেখাপড়াসংক্রান্ত সব কাজ ঘরে বসেই করা যায়। গুগল ক্লাসরুমে নিয়মিত প্রজেক্ট জমাদানসহ আরো অনেক কাজই করা যায়। এখন শিক্ষার্থীদের স্মার্টকার্ড দেওয়া হচ্ছে। স্মার্টকার্ডের মাধ্যমে তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের কার পার্কিং, জিম, ক্যান্টিন, ফটোকপি, প্রিন্টিং সার্ভিস অনায়াসেই নিতে পারবে। তাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে আসা-যাওয়া ট্র্যাকিং করা যাবে, লাইব্রেরি ম্যানেজমেন্ট করা যাবে, ড্যাফোডিল ‘কিওসক’ দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসের টিকিটও কাটা যায়।
আছে আরো অনেক সুবিধা। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি, বেতন প্রদানসহ সব কাজই কম্পিউটারে করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ে ইন্টারনেট সার্ভিস প্রভাইডার (আইএসপি) সেটআপ আছে। ফলে সব ছাত্র-ছাত্রী বিনা খরচে ক্যাম্পাসে ‘ওয়াই-ফাই’ ব্যবহার করতে পারে, ইন্টারনেটসেবা পায়। তাদের লেখাপড়ায় উৎসাহিত করতে প্রতি সেমিস্টারে ফলাফলের ওপর ১০ থেকে ৫০ শতাংশ শিক্ষাবৃত্তি দেওয়া হয়। যারা ৩.৮০ সিজিপিএ পায়, তাদের ১০ শতাংশ, যারা ৪-এর ৪ সিজিপিএ পায় তাদের জন্য ৫০ শতাংশ বৃত্তি আছে। মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের শতভাগ বৃত্তি আছে। বিশ্বের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে শিক্ষাবিনিময় কার্যক্রম আছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ বিভাগের ঊর্ধ্বতন সহকারী পরিচালক আনোয়ার হাবিব কাজল বললেন, ‘এখানে ক্যারিয়ার ডেভেলপমেন্ট সেন্টার (সিডিসি) আছে। এটি তাদের পেশাগত পরামর্শ দেয়। কোথায় ইন্টার্নি করতে হবে সে পরামর্শ ও সহযোগিতা করে। চাকরির সিভি তৈরি থেকে শুরু করে সব সহযোগিতা করে। ’ স্টুডেন্ট অ্যাফেয়ার্সের (এসএ) পরিচালক সৈয়দ মিজানুর রহমান বলেন, ‘আমরা ফাউন্ডেশন ডে-তে সমস্যা শুনে গ্রাম-মফস্বল থেকে আসা ছাত্র-ছাত্রীদের পরিবেশগত সমস্যার সমাধান করি, মানসিক সমস্যায় সাহায্য করি। পার্টটাইম চাকরি, টিউশনির ব্যবস্থা করি। তাদের মধ্যে মনোমালিন্য হলে মিটিয়ে দিই। ’ এইচএসসিতে ‘গোল্ডেন জিপিএ’ পাওয়া ছাত্র-ছাত্রীরা বিনা খরচে পড়তে পারে। একই পরিবারের সদস্যরা ভর্তি হলে মোট খরচের ওপর ৪০ শতাংশ ছাড় পায়। প্রতি সেমিস্টারে গড়ে ৩.৯ বা তার চেয়ে বেশি নম্বর পেলে অ্যাওয়ার্ড আছে।
একনজরে ড্যাফোডিল
ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি (ডিআইইউ) ছাত্র-ছাত্রীদের আন্তর্জাতিক মানের শিক্ষা দিতে চেষ্টা করে। সে জন্য আছে দুই শর বেশি শ্রেণিকক্ষ। এগুলোর পাঁচটি ডিজিটালাইজড। বিশ্ববিদ্যালয়ে মোট পাঁচটি অনুষদ আছে। বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি অনুষদে কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং, সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং, মাল্টিমিডিয়া টেকনোলজি অ্যান্ড ক্রিয়েটিভ আর্টস, পরিবেশবিজ্ঞান ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা পড়ানো হয়। বাণিজ্য ও অর্থনীতি অনুষদে বিবিএ, এন্ট্রারপ্রেনারশিপ, রিয়েল এস্টেট ও এমবিএ পড়ানো হয়। মানবিক ও সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদে এলএলবি, ইংরেজি, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ আছে। প্রকৌশল অনুষদে ইলেকট্রনিকস অ্যান্ড টেলিকমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং, ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিকস ইঞ্জিনিয়ারিং, টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং, আর্কিটেকচার ও সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ আছে। অ্যাপ্লাইড হেলথ সায়েন্সেস অনুষদে আছে—ফার্মাসি, নিউট্রিশন অ্যান্ড ফুড ইঞ্জিনিয়ারিং ও পাবলিক হেলথ। এই অনুষদের অধীনে লাইফ সায়েন্স, জেনেটিক অ্যান্ড বায়োটেকনোলজি ও মেডিক্যাল আল্ট্রা সাউন্ড বিভাগ খোলার প্রস্তাবনা ইউজিসিতে জমা দেওয়া আছে। তারা অনুমতি দিলেই বিভাগগুলো চালু হবে। ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য চারটি হল আছে—ছাত্রীদের জন্য বেগম রোকেয়া ছাত্রীনিবাস, উত্তরা ইন্টারন্যাশনাল গার্লস হোস্টেল, ছাত্রদের জন্য প্রফেসর আমিনুল ইসলাম ছাত্রাবাস, ইউনূস খান স্কলারস গার্ডেন আছে। হোস্টেলগুলোতে চার বেডের জন্য ছয় হাজার, দুই বেডের জন্য ছয় হাজার ৫০০ টাকা লাগে। দুই-তিন বছরের পুরনোরা পাঁচ হাজার টাকায় থাকতে পারে। উত্তরা ইন্টারন্যাশনাল হোস্টেলের বাসিন্দা তাহমিনা আক্তার জুঁই বলেন, ‘হোস্টেলে ২৪ ঘণ্টা নিরাপত্তাকর্মী আছে। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন প্রতিটি ফ্লোর, সিঁড়িতে সিসি ক্যামেরা আছে। সন্ধ্যা ৬টার পর বাইরে বেরোনো যায় না। রাতে ঘুমানোর আগে খাতায় উপস্থিতি স্বাক্ষর দিতে হয়। বাড়ি গেলেও স্বাক্ষর করে যেতে হয়।’
ভিসি স্যার বললেন
আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের ৮০ শতাংশ ছাত্র-ছাত্রী ঢাকার বাইরে থেকে লেখাপড়া করতে আসে। বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে শিক্ষাগ্রহণের বিষয়াবলি ও শহুরে পরিবেশের সঙ্গে সহজেই খাপ খাওয়ানোর জন্য তাদের মাসব্যাপী ফাউন্ডেশন ক্লাস করানো হয়।
এ ছাড়া নবীন শিক্ষকদের জন্য আছে পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণ কর্মশালা, যাতে তাঁরা নিজেদের মানসম্মত শিক্ষাদানের উপযোগী করে গুছিয়ে নিতে পারেন। অন্যদিকে শিক্ষকরা এক্সচেঞ্জ প্রগ্রামের মাধ্যমে বিশ্বের নামকরা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে নিয়মিত প্রশিক্ষণ গ্রহণ ও পাঠদান করে থাকেন। জাপান, আমেরিকা, যুক্তরাজ্য, চীন, কোরিয়া, ভারত, মালয়েশিয়াসহ বিভিন্ন দেশে এক্সচেঞ্জ প্রগ্রাম ও সামার ক্যাম্পসহ নানা প্রগ্রামে পাঠানোর মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের দক্ষতা বৃদ্ধি করা হয়। চার শর বেশি বিদেশি শিক্ষার্থীর জন্য ড্যাফোডিল ইনস্টিটিউট অব ল্যাঙ্গুয়েজে বিভিন্ন ভাষার পাশাপাশি বাংলা ভাষা প্রগ্রাম চালু আছে। ৭০ একর জমির ওপর আশুলিয়ায় আমাদের স্থায়ী ক্যাম্পাসটিকে বিশ্বমানের আধুনিক শিক্ষার সব সুবিধাসহ সবুজ ক্যাম্পাস হিসেবে গড়ে তোলা হচ্ছে। স্থায়ী ক্যাম্পাসে ভর্তি হলে ২০ শতাংশ ছাড় আছে। সেখানে যাতায়াতের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব ২৫টি বাস নিয়মিত চলাচল করছে। শিগগিরই আরো ১৭টি বাস পরিবহনপুলে যুক্ত হচ্ছে এবং তা ক্রমেই এক শ ছাড়িয়ে যাবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের হোস্টেলে ছয় হাজার ছাত্র-ছাত্রীর আবাসনব্যবস্থা আছে। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে মাল্টিমিডিয়া ও ক্রিয়েটিভ টেকনোলজি, রিয়েল এস্টেট, ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ ও এন্টারপ্রেনারশিপ ডিপার্টমেন্টের মতো সময়োপযোগী নতুন বিভাগও চালু হয়েছে, যা বাংলাদেশে প্রথম ও অনন্য। ফলে এ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা পাস করে সহজেই চাকরি পায়। যুগোপযোগী, মানসম্মত শিক্ষা ও পর্যাপ্ত গবেষণা কার্যক্রমের মাধ্যমে ড্যাফোডিল একটি পূর্ণাঙ্গ ও বিশ্বমানের আধুনিক বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিণত হয়েছে।
চেয়ারম্যানের বক্তব্য
শিক্ষার প্রতি অনুরাগ আমার সব সময়ই ছিল। আজকের যে ড্যাফোডিল কম্পিউটারস, সেটি শুরুতে ছিল আইটি ট্রেনিং সেন্টার।
কম্পিউটার ব্যবসায় সাফল্য আসার পর আবার শিক্ষা নিয়ে কাজ শুরু করলাম। ১৯৯৭ সালের শেষের দিকে ডিআইআইটি (ড্যাফোডিল ইনস্টিটিউট অব আইটি) প্রতিষ্ঠা করলাম। ডিআইআইটির অনেক সাফল্যের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য হলো—এই প্রতিষ্ঠানের কোনো ছাত্র-ছাত্রীই বেকার ছিল না এবং এদের বিরাট অংশ ক্রেডিট ট্রান্সফার করে বিদেশে চলে যায়, সেখানেও তারা সফলভাবে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করতে সক্ষম হয়। ফলে আমরা জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাফিলিয়েশন নিতে উদ্বুদ্ধ হলাম। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিদর্শক দলই তখন প্রথম আমাদের জানালেন, একটি পূর্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার সব ধরনের যোগ্যতাই আমাদের আছে। এ ছাড়া আরো অনেক শিক্ষানুরাগী, যাঁদের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক ছিল, তাঁরাও আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নিতে উদ্বুদ্ধ করলেন। তাঁদের সবার পরামর্শ ও সহযোগিতায় ২০০১ সালে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার জন্য আমরা আবেদন করলাম এবং পরের বছরের ২৪ জানুয়ারি আনুষ্ঠানিকভাবে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি সরকারের অনুমোদন লাভ করে।
এই বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে আমার স্বপ্ন—এখান থেকে পাস করা কোনো ছাত্র-ছাত্রীই যেন বেকার না থাকে। তারা যেন ছাত্র-শিক্ষকের সম্মিলিত প্রচেষ্টা ও গবেষণায় নব নব উদ্ভাবন সৃষ্টিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে সক্ষম হয়। এ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা যেন বাংলাদেশের একটি ব্র্যান্ড ইমেজ সারা বিশ্বে ছড়িয়ে দেয়। ড্যাফোডিল আমাদের পতাকাকে বিশ্বে তুলে ধরবে—এটিই চাওয়া। আমরা সারা বিশ্বের বিভিন্ন দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সঙ্গে একটি চমৎকার নেটওয়ার্ক তৈরি করতে চাই। সে জন্য ২০০টির বেশি বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে গবেষণা, ফ্যাকাল্টি এক্সচেঞ্জ প্রোগ্রামসহ নানা ধরনের সম্পর্ক তৈরি করার চেষ্টা করা হচ্ছে। প্রতিবছর এই ক্যাম্পাসে চার থেকে পাঁচ শ শিক্ষক-গবেষক ছাত্র-ছাত্রী ও প্রফেশনাল আসছেন। বাংলাদেশে এককভাবে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত অন্য কোনো সংগঠনের পক্ষে এত বেশি বিদেশির সমাগম নিশ্চিত করা সম্ভব নয়। তাই এটাও আমাদের বড় ধরনের সাফল্য। কারণ, হলি আর্টিজানের ঘটনার পর যেখানে জাপানিরা আসতে ভয় পাচ্ছিল, সেখানে জাপান, আমেরিকা, ব্রিটেন ও কানাডা থেকে বিদেশিরা এ বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতিনিয়ত আসছেন। তাঁদের কনফিডেন্স তৈরি হয়েছে যে প্রয়োজনীয় কমপ্লায়েন্সগুলো এ বিশ্ববিদ্যালয় পুরোপুরি মেনটেইন করে। আমাদের মূল টার্গেটই হলো, বাংলাদেশের শিক্ষাব্যবস্থায় একটা চমৎকার রোল মডেল হিসেবে ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়কে প্রতিষ্ঠিত করা।
আমরা আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়কে একটি পূর্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে গড়ে তুলতে চাই, কোচিং সেন্টার হিসেবে নয়। একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে খেলার মাঠ থাকবে, চমৎকার লাইব্রেরি থাকবে, গবেষণাগার থাকবে, ছাত্র-ছাত্রীদের নলেজ শেয়ারিংয়ের জায়গা থাকবে, গবেষণার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট উপকরণগুলো থাকবে, বিদেশি ছাত্র-ছাত্রী ও শিক্ষকদের ক্যাম্পাসে থাকার ব্যবস্থা থাকবে। ছাত্র-ছাত্রীরা স্বাভাবিকভাবেই যত্রতত্র থাকতে চাইবে না। সে বিষয়টি মাথায় রেখেই আমরা ছাত্র-ছাত্রীদের থাকার জন্য স্থায়ী ক্যাম্পাসে, এমনকি ঢাকায়ও হল তৈরি করেছি। ছেলে ও মেয়েদের জন্য হল করেছি, বিদেশি শিক্ষার্থীদের থাকার জায়গাও নিশ্চিত করেছি। স্থায়ী ক্যাম্পাসে ছাত্র-ছাত্রী ও শিক্ষকদের জন্য ২৫টি বাস আছে। আরো ১০০টি বাস যুক্ত হবে। আমাদের উদ্দেশ্য—ড্যাফোডিলকে একটি পূর্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে গড়ে তোলা, যেখানে এ টু জেড সলিউশন থাকবে, শুধু সার্টিফিকেটের জন্য কেউ আসবে না। সারা পৃথিবীতে যেমন অনেক বিশ্ববিদ্যালয় অনেক ডেভেলপমেন্টের ক্ষেত্রে একটি দেশের মানদণ্ড হিসেবে কাজ করে, আমরাও সেভাবে আমাদের ক্যাম্পাসকে সাজাচ্ছি।