ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্তর্জাতিক সিম্পোজিয়াম
- ক্যাম্পাস ডেস্ক
ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ইন্সটিটিউশনাল কোয়ালিটি অ্যাস্যুরেন্স সেলের (আইকিউএসি) আয়োজনে ‘উচ্চশিক্ষায় গুণগত মান নিশ্চিকরণে আঞ্চলিক সহযোগিতার তাৎপর্য’ শীর্ষক এক আন্তর্জাতিক সিম্পোজিয়াম মঙ্গলবার (৬ জুলাই) ভার্চুয়াল প্ল্যাটফর্মে অনুষ্ঠিত হয়েছে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেন প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে এ সিম্পোজিয়ামের উদ্বোধন করেন। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ অ্যাক্রিডিটেশন কাউন্সিলের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মেজবাহউদ্দীন আহমেদ। এতে প্রধান পৃষ্ঠপোষক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান ড. মো. সবুর খান। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য অধ্যাপক ড. এসএম মাহবুব উল হক মজুমদার এবং স্বাগত বক্তব্য রাখেন সিম্পোজিয়াম চেয়ার ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্সটিটিউশনাল কোয়ালিটি অ্যাস্যুরেন্স সেলের পরিচালক অধ্যাপক ড. এ কে এম ফজলুল হক। সিম্পোজিয়ামে তিনটি সেশনে ভারত, নেপাল, মায়েশিয়া, তুরস্ক, চীন ও বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় বিশ্ববিদ্যালয়সমূহ থেকে থেকে ১২ টি পেপার উপস্থাপন করা হয়।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ড. একে আব্দুল মোমেন বলেন, আঞ্চলিক সহযোগিতা ও সম্পর্ক উন্নয়নের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ সরকার অত্যন্ত সচেতন। ইতিমধ্যে উচ্চশিক্ষাসহ জলবায়ু পরিবর্তন, নারীর ক্ষমতায়ন, অর্থনৈতিক উন্নয়ন ইত্যাদি বিষয় নিয়ে আঞ্চলিক সংঘ সমূহের সঙ্গে সরকার কাজ করছে। এই সহযোগিতা আরও বাড়াতে হবে বলে মন্তব্য করেন তিনি। পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এ ধরনের সেমিনার ও সিম্পোজিয়াম উচ্চশিক্ষার উন্নয়নে আঞ্চলিক সহযোগিতাকে ত্বরান্বিত করবে।
ড. একে আব্দুল মোমেন আরও বলেন, বাংলাদেশে এখন উন্নয়নশীল দেশের তালিকায় প্রবেশ করেছে। সরকার এসডিজির লক্ষ্যগুলো খুব ভালোভাবে পূরণ করার চেষ্টা করছে। এসডিজির অন্যতম এক লক্ষ্য গুণগতমানের উচ্চশিক্ষা। এই লক্ষ্য পূরণে সরকার সরকারি ও বেসরকারি সকল বিশ্ববিদ্যালয়ে আইকিউএসি প্রতিষ্ঠা করেছে।
করোনা মহামারি বিশ্বের অনকে কিছু বদলে দিয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, কোভিডের কারণে সারা পৃথিবীর শিক্ষা ব্যবস্থা বদলে গেছে। প্রায় সকল দেশ অনলাইন শিক্ষার উপর নির্ভরশীল হতে বাধ্য হয়েছে। এক্ষেত্রে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি এগিয়ে আছে। তারা বিএলসি, স্মার্ট এডু, ল্যাপটপ কর্মসূচি ইত্যাদির মাধ্যমে অত্যন্ত সফলভাবে কোভিড চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করেছে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে অধ্যাপক ড. মেজবাহউদ্দীন আহমেদ বলেন, বাংলাদেশে অর্থনৈতিক উন্নয়ন বেশ ভালোভাবেই হচ্ছে। সামাজিক বিভিন্ন সূচকেও বাংলাদেশ উন্নতি করছে। এখন গুণগত শিক্ষার দিকে নজর দেওয়া জরুরি। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে অবশ্যই গুণগত শিক্ষা নিশ্চিত করতে হবে। এ ক্ষেত্রে আঞ্চলিক সহযোগিতাও জরুরি বলে তিনি মন্তব্য করেন।
ড. মেজবাহউদ্দীন আহমেদ আরও বলেন, বিমসটেক, সার্কসহ বিভিন্ন আঞ্চলিক সংঘগুলো পর্যটন, কৃষি, জলবায়ু ইত্যাদি নিয়ে কাজ করলেও শিক্ষাকে খুব একটা গুরুত্ব দিচ্ছে না। উচ্চশিক্ষার গুণগত মান নিশ্চিতকরণে আঞ্চলিক সহযোগিতা বাড়াতে হবে। দিল্লিতে সার্ক বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলে, এই বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে সকল বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বয় বড়াতে হবে। তিনি আরো বলেন, আমরা এখন বিশ্বনাগরিক। আমাদের শিক্ষার্থীদেরকেও বিশ্বনাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। এজন্য বিশ্বের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ওপেন ব্রাঞ্চ, স্টাডি সেন্টার, অনলাইন কোর্স ইত্যাদি শুরু করতে হবে।
বিশ্ববিদ্যারয়ের ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান ড. মো. সবুর খান বলেন, উচ্চশিক্ষার গুণগত মান নিশ্চিতকরণে আঞ্চলিক সহযোগিতার বিকল্প নেই। এ জন্য ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয় শুরু থেকেই বিশ্বের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে শিক্ষার্থী বিনিময়, শিক্ষক বিনিময়, সামার প্রোগ্রাম, যৌথ গবেষণা ইত্যাদি কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয় আন্তর্জাতিক মানের শিক্ষার্থী তৈরি করতে চায়। এই লক্ষ্যে বিএলসি, স্মার্ট, এডু, গো এডু ইত্যাদি প্ল্যাটফর্ম তৈরি করেছে। শিক্ষার্থীদেরকে প্রযুক্তিগত দিক থেকে দক্ষ করে গড়ে তুলতে ওয়ান স্টুডেন্ট ওয়ান ল্যাপটপ কার্যক্রম পরিচালনা করছে। এসব কারণে ড্যাফেডিল বিশ্ববিদ্যালয় বিশ্বের সকল র্যাংকিয়ে প্রথম দিকে জায়গা করে নিয়েছে বলে তিনি জানান।
গুণগত শিক্ষা নিয়ে কাজ করেন এমন খ্যাতিমান শিক্ষাবিদ, শিক্ষা অনুশীলনকারী এবং সরকারি কর্মকর্তারা এই সিম্পোজিয়ামে অংশগ্রহণ করেন এবং মানসম্মত শিক্ষার বিভিন্ন ক্ষেত্র নিয়ে আলোচনা করেন। কীভাবে বিমসটেক, সার্ক ও এইউএপির মতো সংঘগুলোকে কেন্দ্র করে আঞ্চলিক সহযোগিতা বাড়ানো যায় ও শিক্ষার গুণগত মান নিশ্চিত করা যায় সেসব নিয়েও তারা আলোচনা করেন। অনুষ্ঠানটি সরাসরি সম্প্রচারিত হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ফেসবুক পেজ এবং ক্যাম্পাস টিভিতে।