ক্যামেরার কবি
- সজীব হোসাইন, রংপুর
বাস্তব জগতের চলমান ছবি ক্যামেরার মাধ্যমে ধারণ করে দেখানোর স্বপ্ন তাঁর। তিনি চান আলোকচিত্রের মাধ্যমে সমাজের প্রতিবন্ধকতা ও ত্রুটিগুলো তুলে ধরতে। বলছিলাম রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র মো. আশিকুর রহমান সজীবের কথা। বন্ধু আড্ডা আর খেলার মাঠে পরিচিত সে সজীব নামেই।
ক্যামেরার লেন্স দিয়েই পুরো দুনিয়া দেখেন তিনি। সজীব বলেন, সমাজের সকল ক্ষেত্রে বঞ্চিত মানুষদের তিনি তার চলচিত্রে তুলে ধরতে চান। আর তার লক্ষ্যে কাজও করে যাচ্ছেন তিনি। সম্প্রতি তিনি তার নিজস্ব প্রোডাকশন হাউজে নির্মাণ করেছেন প্রথম স্বল্পদৈর্ঘ চলচ্চিত্র ‘হাতঘড়ি’ । কথা বললে সজীব জানান, নিম্নবিত্ত এক যুবকের জীবনের আশা আকাঙ্কা চাহিদা ও অপূর্ণতার উপর নির্মিত তার এই চলচ্চিত্র। এছাড়া তিনি টিউমার, মেহেদীর ড্রিমস নামে বেশ কিছু স্বলদৈর্ঘ্য চলচিত্র নিয়েও কাজ করছেন।
‘বিশ্ববিদ্যালয়ে আশার পর থেকেই মনে জেগে উঠে নতুন কিছু করার চেতনা, আর নতুন কিছু করার বাসনা থেকেই যুক্ত হওয়া পরিচালনায়।’ বলেন সজীব।
চলচ্চিত্র নির্মাণের পাশাপাশি সজীব যুক্ত রয়েছেন একাধিক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সাথে। বর্তমানে তিনি ব্রিটিশ কাউন্সিলের একটিভ সিটিজেন ৪৯ ব্যাচ রংপুর এর সমন্বয়কের দায়িত্ব পালন করছেন। এছাড়াও তিনি বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যলয় জিওগ্রাফারস এসোসিয়েশনের পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক পদেও দায়িত্ব পালন করছেন। এছাড়া তিনি খেলাধুলাতেও পারদর্শী।
চলচ্চিত্র নিয়ে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা জানতে চাইলে সজীব বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের গন্ডি পেরনোর পরেও চলচিত্র নিয়ে কাজ করতে চাই। ক্যামেরায় ধারণ করতে চাই বিশ্বসেরা এক জাতির উত্থানের গল্প। যা মানুষ দেখবে যুগ যুগ ধরে। তিনি আরও বলেন, চলচ্চিত্র হচ্ছে সমাজ পরিবর্তনের অন্যতম হাতিয়ার। কারণ চলচ্চিত্র মানুষকে ব্যাপকভাবে প্রভাবিত করে থাকে।
কুড়িগ্রাম জেলার নাগেশ্বরীতে বড় হয়েছেন সজীব। নাগেশ্বরী ডি এম কলেজ থেকে ২০০৮ সালে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে মাধ্যমিকে জিপিএ-৫ এবং ২০১০ সালে নাগেশ্বরী ডিগ্রি কলেজ থেকে বিজ্ঞান বিভাগে জিপিএ- ৪.৪৬ পেয়ে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করেন।
সখের বসে চলচিত্র নিয়ে কাজ শুরু করলেও ভবিষ্যতে এটাই তার পেশা হিসেবে বেছে নেওয়ায় ইচ্ছা। সজীব বলেন, ‘ভবিষ্যতে বাংলাদেশকে চলচিত্রকে বিশ্ব আসনে আরও বড়ভাবে উপস্থাপনের স্বপ্ন রয়েছে।’
‘কতদূর যেতে চান?’ প্রশ্নের উত্তরে সজীব জানান, ‘আমার আকাশটা অনেক বড়। এই রঙিন আকাশটা সবাইকে দেখাতে চাই। আমি ক্যামেরার লেন্সে যা দেখি, তা যদি সবাইকে দেখাতে পারি, তাহলে আমার জীবন সার্থক।’