শুধু ডিগ্রি নয়, চাকরি পেতে চাই দক্ষতাও
- বিপ্লব শেখ
‘তোরা যে যা বলিস ভাই, আমার সোনার হরিণ চাই।’ কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের এই সোনার হরিণকেই বর্তমান বাজারে চাকরির সাথে তুলনা করা হয়। চাকরিকে সোনার হরিণ বলা হবে না কেন? কারণ অধিকাংশ মানুষের কাছে চাকরি পাওয়াটা খুব সহজ ব্যাপার নয়। এখানে প্রতিযোগী অনেক। চাকরির একটা আসনের পিছনে ছোটে বেশ কয়েকজন। আবার কখনও শত শত জন। কিন্তু চাকরি পেতে কী দরকার?
আমরা অনেকেই মনে করি পড়ালেখা শেষ অর্থাৎ আমি চাকরির জন্য তৈরি। কিন্তু ভাবুন তো, আপনি একটা ডিগ্রি অর্থাৎ শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়ে চাকরির আবেদন করলেন, অন্য দিকে আরেকজন শিক্ষাগত যোগ্যতার পাশাপাশি অতিরিক্ত কিছু দক্ষতা নিয়ে আবেদন করল, তাহলে চাকরির জন্য কার গ্রহণযোগ্যতা বেশি হবে?
নিশ্চই যার অতিরিক্ত দক্ষতা আছে সে বেশি গ্রহণযোগ্যতা পাবে। তাই শুধু ডিগ্রি অর্জনই নয়, চাকরি পেতে আপনাকে অতিরিক্ত দক্ষতাও অর্জন করতে হবে। আপনাকে প্রমাণ করতে হবে আপনি অন্যের থেকে সেরা। কিন্তু কীভাবে? কী ধরনের যোগ্যতা দরকার? মনের মধ্যে এমন প্রশ্ন আসাটাই স্বাভাবিক। তবে উত্তরটা আপনার আশপাশেই রয়েছে।
যেমন বর্তমান বিশ্ব প্রযুক্তিনির্ভর। আর প্রতিনিয়তই এই প্রযুক্তি আপডেট হচ্ছে। কাজেই সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে আপনাকেও প্রযুক্তিগতভাবে নিজেকে উন্নত করতে হবে। এটা হতে পারে এমএস ওয়ার্ড, পাওয়ারপয়েন্ট, এক্সেল, ইন্টারনেট ব্রাউজিং এবং যোগাযোগের মতো দক্ষতা যেটা আপনার সিভিকে ভারী করবে।
এছাড়াও সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দক্ষতা অর্জন হতে পারে আপনার চাকরি সংশ্লিষ্ট । অর্থাৎ আপনি যে ধরনের চাকরি করতে চান ওই বিষয় সম্পর্কিত কিছু দক্ষতা অর্জন। এর জন্য আপনি নিজেকে আলাদাভাবে উপস্থাপন করতে পারবেন। কারণ চাকরিক্ষেত্রে যখন আপনি দেখাতে পারবেন উক্ত বিষয়ে আপনি আগে থেকেই দক্ষ বা পরিচিত তখন অন্যদের তুলনায় আপনার গ্রহণযোগ্যতা বেশি থাকবে অর্থাৎ চাকরিটা পাওয়ার দৌড়ে আপনি এগিয়ে থাকবেন।
নিজের দক্ষতা বাড়াতে হবে যেভাবে
দক্ষতা বাড়াতে সমসাময়িক কিছু কোর্স করা যেতে পারে। অথবা গুগল নামক সার্চ ইঞ্জিনে আপনি পেয়ে যাবেন আপনার চাহিদা অনুযায়ী অনেক কিছুই। যেখান থেকে বিভিন্ন টিউটরিয়াল, ক্লাস দেখে প্র্যাকটিসের মাধ্যমেও নিজের দক্ষতা বাড়ানো যেতে পারে।
এছাড়াও শিক্ষা জীবনে অনেক শিক্ষার্থী শুধুমাত্র একাডেমিক পড়াকেই একমাত্র কাজ মনে করে। এর বাইরে তারা অবসর সময় পার করে। কিন্তু দক্ষতা অর্জন করতে হলে নিজেকে প্রশ্ন করতে হবে, আমি কী চাই? আর তার জন্য প্রয়োজনীয় দক্ষতাগুলো কী কী। এই দক্ষতাগুলো খুঁজে তা চর্চা করলেই আপনি হতে পারেন অন্যদের থেকে আলাদা। আর নিয়োগকর্তাকে আপনার দক্ষতাগুলো প্রমাণসহ উপস্থাপন করতে পারলেই চাকরির দৌড়ে আপনি অনেকটাই এগিয়ে থাকবেন।
বর্তমান বাজারে চাকরি অমূল্য সম্পদ। এই অমূল্য সম্পদের নাগাল না পেয়ে বেকারত্বের অভিশাপ কাঁধে বয়ে বেড়াচ্ছে হাজার হাজার ডিগ্রি অর্জনকারী যুবক। অদক্ষতা এই বেকারত্বের অন্যতম একটি কারণ। তাই নিজেকে এমনভাবে তৈরি করুন যেখানে আপনি চাকরিকে নয় বরং চাকরি আপনাকে খুঁজে নেবে।