সিএমআইএ’তে ক্যারিয়ারের সুযোগ
- ক্যারিয়ার ডেস্ক
বর্তমানে বিশ্বব্যাপী সমাদৃত চার্টার্ড প্রফেশনাল কোয়ালিফিকেশনগুলোর মধ্যে প্রথমসারির একটি কোয়ালিফিকেশন হিসেবে সুনাম কুড়িয়েছে চার্টার্ড ইনস্টিটিউট অব ম্যানেজমেন্ট অ্যাকাউন্ট্যান্টস (CIMA)। ১৯১৯ সালে লর্ড লিভার হিউম-এর হাত ধরে ইংল্যান্ডে যাত্রা শুরু করা এই কোয়ালিফিকেশন ২০১১ সালে বাংলাদেশে তাদের কার্যক্রম শুরু করে। বাংলাদেশে CIMA’র বিভিন্ন কার্যক্রম এবং অবস্থান নিয়ে কথা বলেছেন CIMA বাংলাদেশের কান্ট্রি ম্যানেজার জারিফ তামান্না মাতিন।
চার্টার্ড ইনস্টিটিউট অব ম্যানেজমেন্ট অ্যাকাউন্ট্যান্টস (CIMA) মূলত ইংল্যান্ডভিত্তিক একটি প্রফেশনাল ডিগ্রি। ব্যবসা ক্ষেত্রের ব্যবস্থাপনা হিসাব বিদ্যায় পারদর্শী করে গড়ে তোলা এই প্রফেশনাল কোয়ালিফিকেশনের মূল লক্ষ্য।
জারিফ তামান্না মাতিন জানান, ২০১২ সালে CIMA তাদের যৌথ শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনার জন্য চুক্তিবদ্ধ হয় আমেরিকান ইনস্টিটিউট অব সার্টিফায়েড পাবলিক অ্যাকাউন্ট্যান্ট (AICPA)-এর সঙ্গে। বাংলাদেশে CIMA’র কার্যক্রম শুরু হয় মূলত ২০১১ সালের আগস্ট থেকে। কিন্তু তারও আগে ২০১০ সালে CIMA’র লার্নিং পার্টনার LCBS Dhaka সর্বপ্রথম এই কোয়ালিফিকেশন বাংলাদেশে নিয়ে আসে। বর্তমানে বাংলাদেশ ছাড়াও বিশ্বের ৩০টি দেশে CIMA’র অফিস রয়েছে এবং ১৭৩টি দেশে প্রায় দুই লাখ ৩০ হাজারের মতো শিক্ষার্থী রয়েছে। বাংলাদেশে CIMA’র বর্তমান শিক্ষার্থী সংখ্যা পাঁচ শতাধিক এবং সদস্য রয়েছেন ১৫ জন।
CIMA বাংলাদেশের কান্ট্রি ম্যানেজার জারিফ তামান্না মাতিন জানান উচ্চ মাধ্যমিক, এ-লেভেল উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীরা তাদের শিক্ষার মাধ্যম হিসেবে CIMAকে বেছে নিতে পারে। এর মাধ্যমে তারা অর্জন করতে পারবে ব্যবস্থাপনা হিসাব বিজ্ঞানের পূর্ণাঙ্গ এবং মজবুত ভিত্তি। বর্তমানে বাংলাদেশে CIMA’র লার্নিং পার্টনার হিসেবে রয়েছে LCBS Dhaka এবং Page Mark Education। CIMA’র কোয়ালিফিকেশনের ১৫টি বেসিক কোর্স রয়েছে যার মধ্যে প্রধানত পাঁচটি মূল বিষয়ের ওপর গুরুত্বারোপ করে। পাঁচটি বেসিক বা ফাউন্ডেশন কোর্স শেষে CIMA Certificate in Business Accounting সার্টিফিকেট দেওয়া হয়। এ ছাড়া CIMA প্রফেশনাল কোয়ালিফিকেশনের সিলেবাস Enterprise Pillar, Performance Pillar এবং Financial Pillar এই তিনটির ওপর ভিত্তি করে গঠিত।
এ ছাড়াও রয়েছে তিনটি লেভেল। অপারেশন লেভেল, ম্যানেজমেন্ট লেভেল এবং স্ট্র্যাটেজিক লেভেল। প্রত্যেকটি লেভেল শেষ করার পর শিক্ষর্থীদের সার্টিফিকেট দেওয়া হয়। প্রথম লেভেল (CIMA Certificate in Business Accounting) সম্পন্ন করার পর CIMA Diploma in Management Accounting-এ সার্টিফিকেট দেওয়া হয়। এর পরের লেভেলে Advance Diploma in Management Accounting-এর উপর সার্টিফিকেট দেওয়া হয়। সবশেষ CIMA Test of Professional Competence পরীক্ষা ও কেস স্টাডির মাধ্যমে চূড়ান্ত কোয়ালিফাইড বাছাই করা হয়।
জারিফ তামান্না মাতিন জানান, CIMA শিক্ষার্থীরা পৃথিবীর যেকোনো প্রান্ত থেকে CIMA Approval Exam Center-এর মাধ্যমে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারবে। তবে পরীক্ষার্থীকে অবশ্যই CIMA রেজিস্টার্ড এবং তার পেমেন্ট ক্লিয়ার হতে হবে এবং প্রতিটি পরীক্ষা CIMA’র অফিসিয়াল ওয়েবসাইটের মাধ্যমে দিতে হবে। CIMA কোয়ালিফিকেশন শুধু অ্যাকাউন্টিং কিংবা ফিনান্সিয়াল বিষয়েই নয়, ব্যবসার ম্যানেজমেন্ট অ্যাকাউন্টিংয়ের উপরও গুরুত্বারোপ করে থাকে। CIMA’র সঙ্গে লার্নিং পার্টনার হিসেবে UK’র তিনটি বিশ্ববিদ্যালয়ও রয়েছে, যারা CIMA কোয়ালিফাইড শিক্ষার্থীদের দিচ্ছে টপ অব ডিগ্রি সুবিধা (Top of Degree)।
এমবিএ হোল্ডার হিসেবে অথবা হিসাব বিজ্ঞানে ম্নাতকোত্তর ডিগ্রিধারীরা CIMA’র স্ট্র্যাটেজিক পর্যায়ে অ্যাডমিশন নেওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন। এ ক্ষেত্রে Gateway পরীক্ষায় কৃতকার্য বা CIMA Advance Diploma Level-এর Certificate পেয়ে থাকেন। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় প্রশাসনের শিক্ষার্থীরাও Operational পর্যায়ে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পান। কিন্তু যারা শুধুমাত্র উচ্চমাধ্যমিক কিংবা এ-লেভেল উত্তীর্ণ, তাদের Basic বা Foundation পর্যায়ে ভর্তি হতে হয়।
সিনিয়র শিক্ষার্থীদের সুবিধার্থে CIMA সিলেবাসের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ স্নাতক ডিগ্রিধারী অথবা এমবিএ কিংবা হিসাব বিজ্ঞানে স্নাতকোত্তর ডিগ্রিধারী অথবা ICAB/ICMAB ফিনালিস্ট ও ACCA সদস্যদের এক্সাম্পশন সুবিধা দিচ্ছে।
CIMA বাংলাদেশের কান্ট্রি ম্যানেজার জারিফ তামান্না মাতিন জানান, একজন CIMA সদস্য তার কর্মক্ষেত্র হিসেবে বিশ্বময় বিস্তৃত এক সুবিশাল নেটওয়ার্কের অন্তর্ভুক্ত হন। কর্মক্ষেত্রে ফাইন্যান্সিয়াল ম্যানেজার, ফাইন্যান্সিয়াল অ্যানালিস্ট, বিজনেস প্রজেক্ট ম্যানেজার এমনকি প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে কাজ করার সুযোগ পেয়ে থাকেন। এই কর্মক্ষেত্র হতে পারে ইন্ডাস্ট্রি, ব্যাংক, সরকারি খাত, নন-প্রফিট অর্গানাইজেশনসহ যেকোনো ধরনের প্রতিষ্ঠান।