ভবিষ্যৎ কর্মক্ষেত্রে ‘ডিজিটাল জ্ঞান’ হবে গুরুত্বপূর্ণ
- ক্যারিয়ার ডেস্ক
২০২০ সালে কর্মবাজারে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হবে ডিজিটাল প্রযুক্তিজ্ঞান। তবে কারিগরি দক্ষতার পাশাপাশি ভবিষ্যৎ কর্মক্ষেত্রে মানবিক গুণাবলিও সমানভাবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। নরওয়ের বহুজাতিক টেলিযোগাযোগ সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান টেলিনরের ‘মিলেনিয়াল’ প্রজন্ম নিয়ে করা এক জরিপভিত্তিক গবেষণায় এমন তথ্য উঠে এসেছে। বাংলাদেশের মুঠোফোন অপারেটর গ্রামীণফোনের মূল বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান হলো টেলিনর।
২০০০ সালের আগে-পরে সময়ে জন্ম নেওয়া প্রজন্মকে বলা হয় মিলেনিয়াল প্রজন্ম। বাংলাদেশসহ টেলিনরের ব্যবসা আছে এমন ছয়টি দেশের ১৫ থেকে ২৫ বছর বয়সী ৪ হাজার ২০০ তরুণের মতামতের ভিত্তিতে ‘জবস ফর ফিউচার’ শীর্ষক জরিপভিত্তিক এই গবেষণা করা হয়। এ শতকের তরুণ প্রজন্মের ভবিষ্যৎ কেরিয়ার নিয়ে ভাবনা, প্রযুক্তির প্রভাব এবং ভবিষ্যতে চাকরির জন্য নিজেদের সবচেয়ে ভালোভাবে প্রস্তুত করার ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় দক্ষতা নিয়ে জরিপটি পরিচালিত হয়। ছয়টি দেশের মাধ্যমিক পর্যায়ের বিদ্যালয় ও বিশ্ববিদ্যালয় মিলে ৭০০ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী জরিপে অংশ নেয়।
গবেষণায় বলা হয়েছে, বাংলাদেশে তরুণদের ৬০ শতাংশ ইন্টারনেট ও ডিজিটাল খাতে ভবিষ্যতের সম্ভাবনা নিয়ে রোমাঞ্চিত। ৫৯ শতাংশ বাংলাদেশি তরুণের মতে, ২০২০ সালের মধ্যে ইন্টারনেট বা মোবাইল প্রযুক্তি তাঁদের কেরিয়ারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। ছয়টি দেশের ৬৩ শতাংশ তরুণ সামষ্টিকভাবে এ বিষয়ে একমত হয়েছেন। জরিপে অংশ নেওয়া অন্য দেশগুলো হলো ভারত, পাকিস্তান, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর ও মিয়ানমার।
জরিপের ফলাফল অনুযায়ী, বাংলাদেশের তরুণেরা প্রযুক্তিনির্ভর ভবিষ্যতের প্রতি আগ্রহী। বাংলাদেশ, পাকিস্তান, মিয়ানমার ও ভারতের তরুণেরা মনে করেন, প্রযুক্তি সম্পর্কে যত দূর সম্ভব তাঁরা জানতে চান। জানার এ বিষয়টিকে নিজেদের কেরিয়ারের উন্নয়নের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণও মনে করেন। জরিপে ৩৪ শতাংশ বাংলাদেশি তরুণ মনে করেন, ভবিষ্যতে চাকরি পেতে অন্যদের অনুপ্রাণিত করা ও নেতৃত্ব দেওয়ার মতো মানবিক গুণাবলিও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। ভারতের ৩৬ শতাংশ ও পাকিস্তানের ৩৭ শতাংশ তরুণ চাকরি পেতে এ দুটি মানবিক গুণের ওপর জোর দিয়েছেন। বাংলাদেশের ৯ শতাংশ তরুণ জরিপে জানিয়েছেন, ভবিষ্যতে চাকরির ক্ষেত্রে সবচেয়ে কম গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ ও গবেষণা।
বাংলাদেশসহ অন্য পাঁচ দেশের তরুণেরা মনে করেন, ভবিষ্যতের কর্মক্ষেত্রে রোবট একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে উঠবে। ভবিষ্যতে উৎপাদন ও প্রকৌশল শিল্প খাতে মানুষের অনেক কাজ রোবটকে দিয়ে করানো হবে। সেটি হলেও তা ভবিষ্যতে কাজ পাওয়াতে বড় ধরনের সমস্যা তৈরি করবে না বলে মনে করেন ২১ শতাংশ বাংলাদেশি তরুণ।
গবেষণায় বাংলাদেশের তরুণদের সবচেয়ে বড় যোগ্যতা সম্পর্কে জানতে চাওয়া হলে ২৬ শতাংশ তরুণ জানিয়েছেন, তাঁরা ন্যায়বিচার ও অন্যের অধিকার প্রতিষ্ঠায় সহানুভূতিশীল। মালয়েশিয়ার ২৪ শতাংশ ও সিঙ্গাপুরের ৩২ শতাংশ তরুণ ন্যায়বিচার ও অধিকার প্রতিষ্ঠার বিষয়টিকে নিজেদের বড় যোগ্যতা বলে উল্লেখ করেছেন। ভারতের ২৪ শতাংশ ও মিয়ানমারের ৩০ শতাংশ তরুণ তাঁদের বড় যোগ্যতা হিসেবে সৃষ্টিশীল ও স্বভাবজাত চিন্তাশীলতার বিষয়টি তুলে ধরেছেন। পাকিস্তানের ২৪ শতাংশ তরুণ কৌশলগত দূরদৃষ্টি ও বৃহৎ পরিসরে ভাবতে পারার দক্ষতাকে বড় গুণ মনে করেন। গণিত ও অত্যাধুনিক বিশ্লেষণী দক্ষতায় গবেষণায় অন্তর্ভুক্ত দেশের তরুণেরা নিজেদের দুর্বলতার বিষয়টি স্বীকার করেছেন।