পিআর কেন প্রয়োজনীয়
- ক্যারিয়ার ডেস্ক
২০০৯ সালের কথা। চাকরি ছেড়ে অনেকে কিছু বাদ দিয়ে কনসিটো নামের একটি পিআর কোম্পানি নিয়ে কাজ শুরু হয়। একটু একটু করে আজ সেই কোম্পানির বয়স ৭ বছরে পা দিয়েছে। ৫ জন থেকে এখন ২৫ জন। কথা হয় কনসিটো পিআরের চিফ অপারেটিং অফিসার অ্যান্ড ডিরেক্টর মানজেনো রায়হান খানের সঙ্গে। এই সেক্টরের আগামী দিনের সম্ভাবনা, তাদের কাজ আর দেশে এই ধরনের কোম্পানিগুলোর অবস্থা ছাড়াও আরো অনেক বিষয়ে কথা বলেন তিনি।
>> পিআর কোম্পানি কি সেটা আগে বলুন?
: শুরুর প্রশ্নটা একশ’তে একশ’। কারণ আগে জানতে হবে পিআর কি? আমরা অনেকেই এখনো মনে করি পিআর মানে প্রেস রিলিস কিন্তু আমাদের এই ধারণা ভুল। পিআর মানে পাবলিক রিলেশন। যার বাংলা অর্থ দাঁড়ায় গণযোগাযোগ। এই ধারণা আগে আমাদের নিতে হবে তারপর এই সেক্টর সম্পর্কে জানার আগ্রহ দেখাতে হবে।
>> আমাদের দেশে এই ধরনের কোম্পানিগুলো কেমন করছে?
: আমাদের দেশে পিআর কোম্পানিগুলো এখন ভাল করছে। আগে কেউ এই ধরনের কোম্পানির কাজ বুঝত না। যদি আমাদের মানে কনসিটো পিআরের কথা বলি তবে সেই সময়টা আমাদের জন্য বেশ কঠিন ছিল। আমরা এক ধরনের যুদ্ধ করেই আজকের এই অবস্থানে। তখন এখনকার মতো এত এত পিআর বোঝে এমন প্রতিষ্ঠান ছিল না। তাই তখন কাজও কম পাওয়া যেত। বেশি সমস্যা ছিল কাজের জন্য গেলে আগে বোঝাতে হতো পিআর কি আর এই কোম্পানির কাজ কি?
>> পিআর সেক্টরে জব অপারচুনিটি কেমন?
: আমি এক কথায় বলব, গণযোগাযোগের কাজ আর প্রতিষ্ঠানের কথা বললে, আমাদের দেশের জন্য ‘সম্ভব না নয়, সম্ভাবনাময় এই সেক্টর’। যদি মনোযোগ দিয়ে এই সেক্টরে কাজ করা যায় তবে এখানেও বেটার কিছু করার সুযোগ আছে। আরো সম্ভাবনাময় কথা হলো এখন দেশের কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ে এই বিষয়ের ওপর উচ্চশিক্ষা নেয়ার সুযোগ আছে।
>> দেশের বাইরের পিআর কোম্পানি আর দেশের পিআর কোম্পানিগুলোর মধ্যে পার্থক্য?
: আমরা খুব যে পেছনে তা নয়। আমাদের দেশে যে পিআর কোম্পানি আছে তারা সব ধরনের ক্লায়েন্টদের কাজ করার মতো ক্ষমতা রাখে। আজ দেশে ইন্টারন্যাশনাল ব্র্যান্ডের কোনো কোম্পানি কাজ শুরু করলে আগে আমাদের মতো কোম্পানিগুলোর সঙ্গেই যোগাযোগ করে। তারা বাহিরে থেকে পিআর নিয়ে আসে না। আর থাকলেও আমাদের মতো কোম্পানিই তাদের সাহায্য করে। তবুও কালচার যখন তাদের থেকে এসেছে তখন আমরা সে জায়গাতে পিছিয়ে। তার অন্যতম কারণ এই বিষয়ে আমাদের স্টাডি কম। আমরা কাজ করার আগে বেশি স্টাডি করি না, যেটা করা বেশ জরুরি।
>> সাংবাদিক আর পিআর কোম্পানির মধ্যে সম্পর্ক আপনার মূল্যায়ন?
: কথাটা তিতাও লাগতে পারে। আসলে দুই পক্ষেরই স্টাডি করা দরকার। আমাদের যেমন স্টাডির প্রয়োজন আছে তার চেয়ে বেশি প্রয়োজন সাংবাদিকদের। কারণ তারা মানুষের প্রতিনিধি। তাদের লেখনী, রিপোর্টের জন্য সাধারণ মানুষ প্রতীক্ষা করে। তাই আমি বলব, জানার যেহেতু শেষ নেই, স্টাডিরও শেষ নেই। জানতে হলে পড়াশোনা করতে হবে, সেটি নতুন বা পুরনো যে কোনো বিষয়ে।
কনসিটো পিআর
বার্সন মার্সটেলার যুক্তরাষ্ট্রের একটি স্বনামধন্য পিআর প্রতিষ্ঠান। ভারতেও রয়েছে তাদের শাখা। জেনেসিস বার্সন মার্সটেলার নামে তাদের প্রতিষ্ঠান পরিচালিত হয়। এই প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সহযোগী প্রতিষ্ঠান হিসেবে কাজ করছে দেশের পিআর প্রতিষ্ঠান কনসিটো পিআর। ২০০৯ সালে দেশে কনসিটো পিআরের যাত্রা শুরু হয়। তাদের প্রথম কাজ চ্যানেল আইয়ের পিআর। সিঙ্গাপুর ট্যুরিজম বোর্ড, জেনারেল ইলেক্ট্রনিকস, ইউসিবিএল ব্যাংক লিমিটেড, এয়ারটেল, স্যামসাং, বিক্রয়ডটকম এবং বাংলালিংক যুক্ত হয়।
মানজেনো রায়হান খান ১৯৮১ সালে ঢাকায় জন্মগ্রহণ করেন। সেন্ট জোসেফ স্কুল, নটর ডেম কলেজ এবং নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সম্পন্ন করেছেন শিক্ষাজীবন। কম্পিউটার সায়েন্সে পড়তে গিয়ে মাইনর সাবজেক্ট হিসেবে পড়েছেন মার্কেটিং। সেখান থেকেই ভালোবাসা সৃষ্টি হয় মার্কেটিংয়ের প্রতি। বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃতীয় বর্ষ থেকেই যুক্ত হন গ্রামীণফোনের সঙ্গে খণ্ডকালীন ভিত্তিতে। পড়াশোনা শেষ হতেই পুরোপুরিভাবে যুক্ত হন জিপির মিডিয়া বিভাগে। মার্কেটিংয়ের সঙ্গে এবার যুক্ত হয় গণযোগাযোগ। এখানেই কাটে তিন বছর। ২০০৮ সালে যোগ দেন টপ অব মাইন্ড প্রতিষ্ঠানে। বর্তমানে মানজেনো কনসিটো পিআরের চিফ অপারেটিং অফিসার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন ।