স্বপ্নময় ক্যারিয়ার পাবলিক হেলথ

স্বপ্নময় ক্যারিয়ার পাবলিক হেলথ

  • ক্যারিয়ার ডেস্ক

পাবলিক হেলথ ম্যানেজমেন্ট বা জনস্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা শিক্ষার বিষয়বস্তু হচ্ছে- মানুষের রোগ নিয়ে গবেষণা ও প্রতিরোধে পদ্ধতি-ব্যবস্থাপনার আবিষ্কার। গোটা জনগোষ্ঠীর রোগ প্রতিরোধমূলক পদ্ধতি গ্রহণ ও স্বাস্থ্য সুরক্ষায় কাজ করাই পাবলিক হেলথের কর্মীদের কাজ। সামগ্রিকভাবে রোগব্যাধির ঝুঁকি কমিয়ে আনাই পাবলিক হেলথ কেয়ারের উদ্দেশ্য। তাই এখানে ডাক্তার, নীতিনির্ধারক, ফার্মাসিস্ট, স্বাস্থ্যকর্মী ও সাধারণের অংশগ্রহণ জরুরি।

প্রসপেক্ট
বর্তমানে উন্নত ও উন্নয়নশীল দেশগুলোতে পাবলিক হেলথ কেয়ার বিষয়ে নানামুখী গবেষণা ও শিক্ষার প্রসার ঘটেছে। বিভিন্ন দেশে এই শিক্ষা পাবলিক হেলথ ম্যানেজমেন্ট কিংবা পাবলিক হেলথ এডুকেশন নামে পরিচিত। এই শিক্ষার মূল উদ্দেশ্যই জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে এবং বিভিন্ন কারণে সৃষ্ট নানাবিধ স্বাস্থ্যঝুঁকি যেমন- বার্ড ফ্লু, সোয়াইন ফ্লু, জিকা, কলেরা, বসন্ত, মহামারি মোকাবেলায় পাবলিক হেলথ বিশেষজ্ঞ ও নেতৃত্ব তৈরি করা। এই লক্ষ্যে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, ইউএনএফপিএ, ইউএনডিপি ছাড়াও জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থা পাবলিক হেলথ নিয়ে গবেষণাকে গুরুত্ব দিচ্ছে। সেখানে বহু লোকজনের কর্মসংস্থানও হচ্ছে। বাংলাদেশসহ উন্নয়নশীল দেশের পাবলিক হেলথের ডিগ্রিধারীরা হাভার্ড, ক্যামব্রিজ, অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে এ বিষয়ে উচ্চতর শিক্ষা ও গবেষণার সুযোগ পাচ্ছে। তাই পাবলিক হেলথের গ্রাজুয়েটদের স্বপ্নময় ক্যারিয়ার গড়ার সুযোগ রয়েছে।

কর্মক্ষেত্র পাবলিক হেলথের বহু গ্রাজুয়েট বর্তমানে জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থায় দেশে-বিদেশে উচ্চ বেতনে চাকরি করছে। দেশের বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ পর্যায়েও প্রতিনিধিত্ব করছে পাবলিক হেলথের ছাত্ররা। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, ইউএনএইডস, ইউএনএফপিএ, জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা, ইউএসএইডের বিভিন্ন প্রকল্পে নিয়োগে বর্তমানে পাবলিক হেলথের ডিগ্রিধারীদের অগ্রাধিকার দেয়া হচ্ছে। আন্তর্জাতিক বেসরকারি সংস্থা (আইএনজিও) যেমন- আইসিডিডিআরবি, সেভ দ্য চিলড্রেন, এফএইচআই-৩৬০, আইডিআরসিতে কর্মসংস্থান হয়েছে এই বিষয়ের শিক্ষার্থীদের। জন হপকিনস বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন গবেষণা প্রজেক্ট, ওয়াটার এইড ও কেয়ারের বিভিন্ন প্রকল্পে কাজের সুযোগ হচ্ছে বাংলাদেশী ডিগ্রিধারীদের। পাবলিক হেলথ ম্যানেজমেন্টের ছাত্ররা জাতিসংঘসহ বিভিন্ন সংস্থা থেকে সবচেয়ে বেশি ফেলোশিপ পাচ্ছে। গত বছর ইউএসএইড বাংলাদেশের পাবলিক হেলথের ১০০ শিক্ষার্থীকে ফেলোশিপ দিয়েছে।

পাবলিক হেলথ শিক্ষার সূচনা : বাংলাদেশে এ বিষয়ে পড়ালেখার হাতেখড়ি ১৯৭৮ সালে ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অব প্রিভেনটিভ অ্যান্ড সোস্যাল মেডিসিনে (নিপসম)। এই প্রতিষ্ঠান থেকে ডিপিএই ডিগ্রি দেয়া হতো। শুধু ডাক্তার, আমলা ও সরকারি কর্মকর্তারা এই ডিগ্রি নেয়ার সুযোগ পেতেন। এসব সীমাবদ্ধতার কারণে পাবলিক হেলথ ম্যানেজমেন্টে পর্যাপ্ত সংখ্যক প্রফেশনাল তৈরি করতে ব্যর্থ হয় নিপসম। পরে ২০০৬ সালে একটি বেসরকারি ইউনিভার্সিটিতে পাবলিক হেলথ বিষয়ক প্রোগ্রাম শুরু হয়। সেই থেকে এখন পর্যন্ত ৩১টি সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ও ইন্সটিটিউটে পাবলিক হেলথ শিক্ষা কিংবা জনস্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা বিষয়ক ডিগ্রি দেয়া হচ্ছে।

কোথায় পড়বেন : দেশে পাবলিক হেলথ শিক্ষায় বেশ কয়েকটি প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় পাইওনিয়ার ভূমিকা রেখে চলেছে। আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি (আইইউবি), নর্থসাউথ, এআইইউবি, ব্র্যাক, ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি সহ বিভিন্ন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে আগ্রহীরা পাবলিক হেলথ ম্যানেজমেন্টে মাস্টার্স পড়তে পারেন।

নেপাল থেকে বাংলাদেশে এমপিএইচ (মাস্টার্স অব পাবলিক হেলথ) করতে আসা এক শিক্ষার্থী জানান, পাবলিক হেলথ শিক্ষার্থীদের জন্য গ্লোবাল ক্যারিয়ার অপেক্ষা করছে। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থায় জনস্বাস্থ্য নিয়ে সরাসরি কাজ করার সুযোগ হয় এ বিষয়ে পড়ে। সেই উপলব্ধি থেকে তিনি পাবলিক হেলথে পড়তে এসেছেন।favicon59-4

Sharing is caring!

Leave a Comment