সফল ব্যবসার শুরু ঘর থেকেই
- ক্যারিয়ার ডেস্ক
গুগল, অ্যাপল, মাইক্রোসফট, অ্যামাজন, ডিজনি এবং হওলেট প্যাকার্ড আজকের বিশ্বের প্রথম সারির কোম্পানি। আপনি কি জানেন এই কোম্পানিগুলোর মধ্যে মিল কোথায়? মাল্টি বিলিয়ন ডলার কর্পোরেশন হওয়ার পাশাপাশি আরেকটি মজার মিল হল, এই ছয়টি কোম্পানির প্রত্যেকটির যাত্রাই শুরু হয়েছিল প্রতিষ্ঠাতার গ্যারেজে!
অবাক হচ্ছেন? এই প্রতিষ্ঠানগুলোই আজকের উদাহরণ, যা বলছে, ব্যবসা ঘর থেকে শুরু হতে পারে কিন্তু সেই ব্যবসাই একসময় চলে যেতে পারে নেতৃত্বের পর্যায়ে। বরং ঘর থেকে শুরু করাই বুদ্ধিমানের কাজ, কারণ মূলধন কম লাগে!
আপনি যদি পরিশ্রমী হন এবং লক্ষ্যে অটল থাকেন তাহলে শুরুটা ঘরেই হতে পারে। একটি স্থায়ী অফিস নেওয়ার আগ-পর্যন্ত এখান থেকেই হতে পারে সব কাজ। আনা জনসন তার গবেষণার ফলাফলে বলছেন, এই পাঁচটি কৌশল মেনে চললে ব্যবসার শুরু যেখানেই হোক, সফল আপনি হবেনই। আনা ওয়াশিংটনের অলিম্পিয়ার একজন ফ্রিল্যান্স রাইটার, গবেষক, বিজনেস কলসাল্ট্যান্ট।
১। ব্যবসায়িক ভিত্তি মজবুত করুন
আপনার ব্যবসার শুরু হয়ত খুবই স্বল্প পরিসরে। কিন্তু এখনই এর ভিত্তি মজবুত করুন। একটি প্রতিষ্ঠান শুরুর ক্ষেত্রে রাষ্ট্রের প্রচলিত নিয়মগুলো সম্পর্কে জানুন, নিয়মমত আপনার কোম্পানিটি নিবন্ধন করান।অনেক সময় দেখা যায়, আপনি একটি নামে কোম্পানি শুরু করেছেন, অনেক দিন পর যখন নামটি নিবন্ধন করতে গেছেন তখন দেখলেন সেই নামে আরেকটি কোম্পানি আগেই নিবন্ধিত হয়ে আছে! হয়ত অন্য এলাকায় বলে আপনি জানতেন না বিষয়টি। অনেক সময় আপনার কোম্পানিকে বিপাকে ফেলার চেষ্টা থেকেও এমন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটতে পারে। তাই শুরুতেই ভিত পাকা করুন, সকল দিক থেকে আপনার প্রতিষ্ঠানকে আইনসঙ্গত করুন।
২। অফিসের সময় নির্দিষ্ট করুন
আপনার নির্দিষ্ট একটি অফিস নেই। কিন্তু তাই বলে কি অফিসের সময় বলে কিছু থাকবে না? আপনি যদি ব্যবসায় দ্রুত সফলতা পেতে চান তাহলে আপনাকে অনেক বেশী ফরমাল হতে হবে। বাসা বা গ্যারেজ যেখানেই হোক শুরু প্রতিষ্ঠানের নিয়ম আরোপ করা শুরু করুন। আপনি হয়ত অল্প কয়েকজন লোক নিয়োগ করেছেন মাত্র। তবু তাদেরকেই অফিসের সময় বেঁধে দিন। শুরু থেকেই সিরিয়াস হতে হবে আপনাকে। আপনার মনে হতে পারে, শুরুর দিকে এত নিয়ম-কানুনের কোন মানে নেই। কিন্তু ব্যবসায়িক বিশ্ব বলে, অর্জন আসে নিয়মের পথে। তাই, নিয়মের বেলায় কোন ছাড় দেওয়া যাবে না।
৩। পর্যাপ্ত জায়গা বের করুন
কাজের জন্য জায়গা খুবই জরুরি। আপনার একটি দরকারি ফাইল হারিয়ে যাওয়া আপনার প্রতিষ্ঠানকে অনেক বড় বিপত্তিতে ফেলতে পারে। তাই সব জিনিস গুছিয়ে রাখা জরুরি। আবার একই সাথে জায়গার স্বল্পতা কর্মীদের মধ্যে অসন্তোষ তৈরি করতে পারে। কারণ নির্দিষ্ট জায়গা না থাকলে আসলেই কাজের সমস্যা হয়। এজন্যই অফিসে প্রত্যেক কর্মীকে আলাদা ডেস্ক দেওয়া হয়। কাজের উপর ভিত্তি করে এই জায়গার প্রয়োজনীয়তার পার্থক্য হতে পারে।
ঘরে আলাদা স্পেস বের করা খুবই সমস্যা হতে পারে। সেক্ষেত্রে ভাঁজ করে রাখা যায় এমন চেয়ার টেবিল ব্যবহার করতে পারেন। একই আসবাব কিন্তু ব্যবহার বিভিন্ন এমন ডিজাইনের আসবাব তৈরি করতে পারেন।
৪। সঠিক প্রযুক্তি ব্যবহার করুন
সঠিক প্রযুক্তি আপনার প্রতিষ্ঠানকে সহজেই অনেক দূর এগিয়ে দেবে। আপনার প্রতিষ্ঠান যদি অনলাইন নির্ভর হয়, তাহলে পত্রিকার সাথে লিফলেট বিলি না করে অনলাইনে বিজ্ঞাপন দেওয়াই বুদ্ধমানের কাজ হবে। ওয়েবসাইট করা, নিজের কোম্পানির ভিন্ন অ্যাপ তৈরি করা আপনার কোম্পানিকে আরও ক্রেতার কাছে পৌঁছে দেবে। অনলাইন ব্যবসা না হলে আপনার প্রযুক্তির অস্ত্রের ব্যবহার হবে ভিন্ন। তখন আপনাকে বেশী নজর দিতে আকর্ষণীয় একটি ব্যানার তৈরির দিকে। এমন একটি লোগো তৈরি করতে হবে যা অনেক দূর থেকেও দেখা যাবে। এমন ছোট ছোট কৌশলে নিজের কোম্পানিকে তুলে ধরুন।
৫। মাইন্ডসেট
সফলতার জন্য জরুরি দৃঢ় প্রতিজ্ঞা, দায়িত্বশীলতা, গতি এবং ধৈর্য্য। বিশ্বের সফল ব্যবসায়ীরা কখনো তাদের মাইন্ডসেট থেকে সরে যান নি। যত প্রতিকূলতাই আসুক তারা একটা কথাই স্মরণ করেছেন, পারতে তাদের হবেই। আপনার আইডিয়াকে সবচেয়ে সুন্দর করে বাস্তবায়ন করতে পারেন আপনি নিজে। আপনার চেয়ে ভাল কেউ পারবে না সেটা। নিজের উপর এই বিশ্বাস রাখুন। আত্মবিশ্বাস বদলে দেয় আমাদের ভাব। আপনার আত্মবিশ্বাসী চোখ আপনার কর্মীদের সিরিয়াসনেস বাড়িয়ে দেবে বহুগুণে।