আইটির জন্য অস্ট্রেলিয়া
- ক্যারিয়ার ডেস্ক
বাংলাদেশের অসংখ্য শিক্ষার্থী প্রতিবছর বিশ্ববিদ্যালয়গুলো থেকে পড়াশোনা করে টেকনিক্যাল-ননটেকনিক্যাল অনেক ধরনের ডিগ্রী নিয়ে বের হচ্ছে। দেশে যে পরিমাণ গ্র্যাজুয়েট তৈরি হয় সে তুলনায় চাকরি বা কর্মসংস্থানের সুযোগটা অনেকটাই কম। তাই দেশের বাইরে কাজ করাটা একটা অত্যাবশ্যকীয় ব্যাপার হয়ে দাঁড়ায় অনেকের জন্য।
কিন্তু সমস্যা যেটা হয় তা হলো দেশের বাইরে যে জায়গাগুলোতে অনেক হাইলি স্কিল্ড ছেলেমেয়ে লাগবে সেখানে আমাদের অধিকাংশ গ্র্যাজুয়েটরাই দক্ষ নন। তাই দক্ষতা অর্জনের একটা উপায় হচ্ছে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত কোনো ডিগ্রী বা প্রফেশনাল কোর্স করে ফেলা।
প্রথমেই ‘কেন অস্ট্রেলিয়া?’ এই ব্যাপারটা নিয়ে একটু ব্যাখ্যা দেয়া যাক। এই দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে আইটি সেক্টরে মাস্টার্স করতে আসলে কিংবা মাস্টার্স করলে আমাদের ছাত্ররা কয়েকটা জিনিস পাবেই। প্রথমত, তারা একটা ‘ডিজিটাল ফিউচার’ এর জন্য নিজেকে প্রস্তুত করার পথে এক ধাপ এগিয়ে যাবে। কারন এখন সবকিছু ডিজিটাল। ব্যবসা ডিজিটাল, মার্কেটিং ডিজিটাল, ইনফরমেশন পাবার ওয়েজ ডিজিটাল। এখানকার বিশ্ববিদ্যালয়গুলো তাদের ছাত্ররা যাতে এই ডিজিটাল সিচুয়েশন, প্রব্লেমস সল্ভিং এর জন্য প্রস্তুত হতে পারে সে অনুযায়ী গড়ে তোলে। তাদের কোর্সগুলো সেভাবে প্রফেশনালি ডিজাইন করে।
এরপর বলা যায় প্র্যাক্টিক্যাল এবং লেটেস্ট ইন্ডাস্ট্রি রিলেটেড নলেজ এবং টেকনোলজির সাথে পরিচিত হতে পারবে খুব সহজেই। পৃথিবীর বড় বড় ইন্ডাস্ট্রিতে কি ধরণের কাজ হচ্ছে, কি ধরণের টেকনোলজি ব্যবহার করে তারা কাজ করছে, ইনোভেশন করছে এগুলো সম্পর্কে ধারনা হবে। একটা বিদেশী ডিগ্রী, ওয়ার্ল্ড ক্লাস ডিগ্রী অর্জন করে নিলে দেশে তো বটেই পৃথিবীর অনেক বড় বড় ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করা সম্ভব হবে। আর অস্ট্রেলিয়ান ডিগ্রির চাহিদা অনেক। কেউ যদি এশিয়ার দেশগুলোতেও কাজ করতে চায় তাহলেও সেটা করতে পারবে খুব সহজেই।
অস্ট্রেলিয়াতে আসলে টপ প্রফেশনালসদের সঙ্গে কাজ করা, অভিজ্ঞতা বিনিময় করার সুযোগ অনেক। সেখানে পৃথিবীর অনেক নামকরা প্রফেশনাল আছেন। কাজ করেন। আইটি প্রফেশনাল, ইন্ডাস্ট্রি প্রফেশনাল। এদের সাথে কাজ করলে অনেক অভিজ্ঞতা পাওয়া যায় এবং এটা অনেক মূল্যবান।
অস্ট্রেলিয়ার সবগুলো বিশ্ববিদ্যালয় একটা স্ট্রাকচার ফলো করে। সেটা এইরকম যে, ইনফরমেশন টেকনোলজি বা ইনফরমেশন সিস্টেমসে মাস্টার্সের জন্য এটা একটা টু ইয়ার্সের ডিগ্রী হবে, চারটা সেমিস্টার হবে, প্রতি সেমিস্টারে চারটা ইউনিট পড়তে হবে। এইখানে সাবজেক্টকে ইউনিট বলা হয়। যদি কেউ একটা সেমিস্টার করে ফেলে তাকে দেয়া হয় ‘গ্র্যাজুয়েট সার্টিফিকেট অফ ইনফরমেশন টেকনোলজি’। কোথাও কোথাও ‘গ্র্যাজুয়েট সার্টিফিকেট অফ বিজনেস ইনফরমেশন সিস্টেমস’, আবার কোথাও ‘গ্র্যাজুয়েট সার্টিফিকেট অফ বিজনেস আইটি’ দেয়া হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ভেদে সার্টিফিকেটের নাম ভ্যারি করে। এভাবে, কেউ দুইটা সেমিস্টার শেষ করলে তাকে ‘গ্র্যাজুয়েট ডিপ্লোমা’ সার্টিফিকেট দেয়া হবে। যদি কেউ তিনটা বা কোন কোন ক্ষেত্রে চারটা সেমিস্টার কভার করে তাহলে তাকে ‘মাস্টার অফ আইটি’ বা ইকুভ্যালেন্ট ডিগ্রী দেয়া হয়। নামগুলো বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ওপর নির্ভর করে। আর যদি কেউ দুই বছর কভার করে ফেলে তাহলে তাদেরকে ‘প্রফেশনাল মাস্টার্স’ ডিগ্রী দেয়া হয়। এইসব প্রোগ্রামগুলো শুরু হয় বছরে দুইবার। ফেব্রুয়ারি এবং জুলাই মাস থেকে। যারা জুলাইয়ের সেমিস্টার ধরতে চাইবে এপ্রিল-মে থেকে এপ্লিকেশন প্রসেস শুরু করতে হবে। আর ফেব্রুয়ারির সেমিস্টার ধরতে চাইলে নভেম্বর থেকে এপ্লাই করতে হবে। এন্ট্রি পয়েন্ট নিয়ে বলতে গেলে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো বলে দেয় যে কোন ডিসিপ্লিনের শিক্ষার্থীরা এইখানে আসতে পারবে। যদি কোন কোর্সে কোন প্রি-রিকুইজিটস থাকে তাহলে তারা সেগুলো ওয়েবসাইটে দিয়ে দেয়। যে কেউ এই প্রি-রিকুইজিটস পূরণ করে তাদের মেইন কোর্স শুরু করতে পারে।