জনপ্রিয় হচ্ছে মোবাইল সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং
- ক্যারিয়ার ডেস্ক
আজকাল প্রযুক্তির উত্থান ঘটছে খুব দ্রুততার সাথে। নিত্য সংস্করণ আর পরিবর্তনের তোড়ে এই খাতে পরবর্তি ছয় মাসে কি ঘটবে তাও আটকে যাচ্ছে জটিল হিসেবের ঘেরাটোপে। প্রযুক্তি প্রতিনিয়ত পরিবর্তন ঘটাচ্ছে আমাদের লাইফস্টাইলে।
এ ক্ষেত্রে সবচেয়ে এগিয়ে মোবাইল ফোন যা মানব সভ্যতার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ হিসেবে জায়গা করে নিয়েছে।
মোবাইল ফোন ছাড়া আজ আমাদের এক মূহুর্তও চলে না। মোবাইল ফোন শুধু টেলিফোন হিসেবে ব্যবহার করাই আজ আর একমাত্র কাজ নয়। বিনোদন, ব্যবসায়িক ও সাংগঠনিক যোগাযোগ এবং এমনকি ব্যক্তিগত সহকারীর ভূমিকায়ও ব্যবহার করা যাচ্ছে। আর এতো সব কার্যকারিতার পিছনে মূল ভূমিকা পালন করে মোবাইল সফটওয়্যার বা অ্যাপ্লিকেশন।
মোবাইল এপ্লিকেশন তৈরিতে এন্ড্রয়েট, আইফোন, ব্লাকবেরী, উইনডোজ মোবাইল সর্বাধিক ব্যবহ্রত হচ্ছে। একটি মোবাইল ফোন ততবেশী কার্যকর, যেটির এপ্লিকেশন যতবেশী অর্থপূর্ণ ও সহজে ব্যবহারযোগ্য। এই সহজ ব্যবহার্য ও অর্থপূর্ণ অ্যাপ্লিকেশন তৈরিতে প্রয়োজন দক্ষ ও উদ্ভাবনী ক্ষমতা সম্পন্ন মোবাইল সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার, যা এ মূহুর্তে বিশ্বব্যাপী ব্যাপক সংকট। কেননা মোবাইল সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারদের একদিন ও বেকার থাকতে হয় না। তাছাড়া উচ্চ সম্মানী ও বেতনতো রয়েছেই।
ওয়াল স্ট্রিট জার্নালে সাম্প্রতিক এক সমীক্ষা প্রতিবেদনে প্রকাশ, ‘‘দি ইনটেন্স কম্পিটিশন ফর মোবাইল ইঞ্জিনিয়ারস হুইচ অ্যাফেক্টস লার্জ কোম্পানিজ এন্ড ফাষ্ট গ্রোয়িং স্টার্টআপ এলাইক, ইজ ইমার্জিং এজ এ কী বটলনেক এজ কোম্পানিজ টু ক্যাপিটালাইজ অন দ্যা ফাষ্ট গ্রোথ অব স্মার্ট ফোনস্ এন্ড আদার মোবাইল ডিভাইসেস’।
বিশ্বখ্যাত ডাইস সার্ভে উল্লেখ করেছেন মোবাইল এপ্লিকেশন ডেভেলপারদের গড় বেতন বছরে প্রায় ৭৬০০০ ডলার। বাংলাদেশী টাকায় মাসে প্রায় পাঁচ লাখ টাকা।
মোবাইল এপ্লিকেশন ডেভেলপারদের উত্তরোত্তর চাহিদার কারণে কোম্পানিজ গুলো প্রতিনিয়ত বেতন বৃদ্ধি করে চলছে। কেউ কেউ তাদের কাছে আউট সোর্স করছে অথবা অফশোর ডেভেলপমেন্ট হাউজ স্থাপন করে তাদের কাজ করিয়ে নিচ্ছে।
আমরা বাংলাদেশে উন্নত বিশ্বের মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন তৈরিতে পরবর্তী দুইটি অপশন কাজে লাগিয়ে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করতে পারি। কর্মসংস্থান হতে পারে বহু ইয়ং টেলেন্টদের। দেশ হতে পারে অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধ। কিন্তু বড় কথা হচ্ছে মোবাইল এপ্লিকেশন ডেভেলপ করার জন্য প্রশিক্ষিত জনবল কোথায়? আমাদের দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে কম্পিউটার সাইন্স ও ইঞ্জিনিয়ারিং বিষয়ে মোবাইল অ্যপ্লিকেশন ডেভেলপমেন্ট বিষয়ক তেমন কোন কোর্স পড়ানো হয় না।
ফলে মোবাইল এপ্লিকেশন ডেভেলপারের দারুন সংকট চলছে বাংলাদেশেও। এ লক্ষ্যে দক্ষ ডেভেলপার প্রস্তুত করার জন্য দু একটি প্রতিষ্ঠান সম্প্রতি এন্ড্রয়েট ও আইফোন সম্পর্কিয় প্রশিক্ষণ দেয়ার উদ্যোগ গ্রহণি করেছে। এর মধ্যে ডেফোডিল ইনষ্টিটিউট অব আইটি অন্যতম। ডিআইআইটি চার মাস মেয়াদী শর্ট কোর্স এবং পাশাপাশি এক বছর মেয়াদী ডিপ্লোমা ইন মোবাইল এপ্লিকেশন ডেভেলপমেন্ট কোর্সে প্রশিক্ষণ প্রদান শুরু করেছে। এইচএসসি/ অনার্স শিক্ষার্থীরা এ কোর্সে অংশগ্রহন করতে পারবেন। পূর্ব অভিজ্ঞতার প্রয়োজন নেই। অধিকতর যোগ্যতা সম্পন্নরাও আবেদন যোগ্য।
কম্পিউটারের মৌলিক বিষয়াবলী থেকে শুরু করে সিস্টেম ডিজাইন ও ডেভেলপমেন্ট, বিজনেস কমিউনিকেশন, এন্ড্রয়েট, লিনাক্স ইত্যাদি বিষয় শিখানো হবে। ডিআইআইটির উক্ত প্রোগ্রামটির মান নিয়ন্ত্রন ও সহযোগিতায় রয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইউনিভার্সিটি এন্ড ইন্ডাষ্ট্রি এলাইন্স।
জানা গেছে এই কোর্সের প্রশিক্ষক হিসেবে থাকছেন লন্ডন মেট্রোপলিটন বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্র্যাজুয়েট, আউটসোসিং কাজে বিশেষজ্ঞ, যুক্তরাজ্য ভিত্তিক প্যাক্ট পাবলিশিং কর্তৃক প্রকাশিত জাভা বিষয়ক ‘আই রিপোর্ট ভার্সন ৩.৭” ও ‘‘গুগল ওয়েব টুলকিট এপ্লিকেশন ডেভেলপমেন্ট কুকবুক” গ্রন্থের লেখক ও ডিআইআইটির কোর্স কো-অর্ডিনেটর জনাব সামসুদ্দিন আহমেদ এবং বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্র্যাজুয়েট, একটি সফটওয়্যার কোম্পানির প্রধান নির্বাহী ও বিশিষ্ট সফটওয়্যার বিশেষজ্ঞ জনাব আহসানুল করিম। চার মাস মেয়াদী প্রোগ্রামটিতে বিশ্ববিদ্যালয়ে অন্যান্য প্রোগ্রামে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থী বা কর্মজীবীদের জন্য রয়েছে সন্ধ্যাকালীন ব্যাচ। চার মাস মেয়াদী শর্টকোর্সের ফি ১৫০০০ টাকা ও ১ বছর মেয়াদী ডিপ্লোমা ইন মোবাইল এপ্লিকেশন কোর্সেও ফি ৬০ হাজার টাকা যা মাসিক কিস্তিতে পরিশোযোগ্য।