উৎপাদনশীলতা কেন বাড়ে, কেন কমে?
- ক্যারিয়ার ডেস্ক
আপনার গতানুগতিক কর্মদিবস সম্পর্কে একটি মুহূর্তের জন্য ভাবুন। আপনি কি ক্লান্ত অবস্থায় ঘুম থেকে জাগেন? বিছানা ছাড়ার আগেই ই-মেইল চেক করেন? নাস্তা এড়িয়ে যান বা তাড়াহুড়ো করতে গিয়ে এমন কিছু খান যা পুষ্টিকর নয়? দুপুরের খাবারের জন্য খুব কমই ডেস্ক ছেড়ে ওঠেন? বিরতিহীনভাবে একের পর এক বৈঠক করে যান? যে অসংখ্য ই-মেইল পান তার জবাব দেওয়া প্রায়ই অসম্ভব মনে করেন? অফিস থেকে নিজের পছন্দসই সময়ে বের হতে পারেন না? এরপরও সন্ধ্যায় বাসায় ফিরে ই-মেইল চেক করতে বাধ্য হন?
আমাদের বেশির ভাগই কাজের চাপে যেন স্থিতিশীল জীবনযাপন করতে পারছি না। কিন্তু স্ববিরোধী হলেও এটাই সত্য যে আপনি যদি বেশি কাজ সম্পন্ন করতে চান তাহলে আপনাকে কোনো কাজ না করেই বরং আরো বেশি সময় কাটাতে হবে।
এক নতুন এবং বেড়ে চলা বহুমুখী গবেষণায় দেখা গেছে, কৌশলগত পুনর্নবায়ন- দিনের বেলার ব্যায়াম, দুপুরে সংক্ষিপ্ত দিবানিদ্রা, দীর্ঘ সময় ধরে ঘুম, অফিস থেকে আরো বেশি সময় দূরে থাকা এবং দীর্ঘ ও ঘন ঘন ছুটি- কর্ম উৎপাদনশীলতা, চাকরির পারফর্মেন্স এবং স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটায়।
‘বেশি, বড়, দ্রুততর’। শিল্পবিপ্লবের পর থেকে এটিই বাজার অর্থনীতির মূল তত্ত্ব। কিন্তু এই তত্ত্বটি গড়ে উঠেছে একটি অবাস্তব এবং পথভ্রষ্ট অনুমানের ওপর ভিত্তি করে। সেই ভুয়া অনুমানটি হলো- আমাদের সম্পদের উৎস সীমাহীন।
সময় হলো সেই সম্পদটি যার ওপর আমরা নির্ভর করি আরো বেশি বেশি সম্পন্ন করার জন্য। যখন আরো বেশি কিছু করার থাকে আমরা আরো বেশি সময় বিনিয়োগ করি। কিন্তু সময় সীমিত আর আমাদের অনেকেই অনুভব করেন আমাদের সময় ফুরিয়ে আসছে।
তবে কাজের সময় বাড়ানো সম্ভব না হলেও আমরা আমাদের শক্তি বাড়াতে পারি। কারণ শক্তির পুননর্বায়ন করা সম্ভব। এ জন্য যা করতে হবে তা হলো, আরো বেশি বেশি সময় কাজ না করে কাটাতে হবে। সম্ভব হলে দিনে কর্মঘণ্টা আরো কমিয়ে আনতে হবে।
গবেষণায় দেখা গেছে, পর্যাপ্ত ঘুম না হলে কর্মীদের উৎপাদনশীলতা কমে যায়। প্রতিরাতে ৬ ঘণ্টার কম ঘুমালে কর্মস্থলে কর্মীদের উৎপাদনশীলতা ব্যাপকহারে কমে যায়। হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সাম্প্রতিক এক গবেষণায় দেখা গেছে, কর্মীদের ঘুম কম হওয়ার ফলে আমেরিকান কম্পানিগুলোর বছরে ক্ষতি হয় ৬৩.২ বিলিয়ন ডলার।
স্ট্র্যানফোর্ডের একটি গবেষণায় দেখা গেছে, একদল বাস্কেটবল খেলোয়াড়কে রাতে ১০ ঘণ্টা করে ঘুমানোর সুযোগ করে দেওয়ার পর তাদের উৎপাদনশীলতা অনেক বেড়ে গেছে। তাদের পরফর্মেন্স আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে অনেক ভালো হয়।
দিবানিদ্রারও একই উপকারিতা দেখা যায়। দিনের বেলায় দীর্ঘ সময় ধরে ঘুমানোরও উপকারিতা আরো বেশি। বেশি বেশি ছুটি নেওয়াও একইভাবে উপাকারী।