৩৮তম বিসিএস : লিখিত পরীক্ষার প্রস্তুতি

৩৮তম বিসিএস : লিখিত পরীক্ষার প্রস্তুতি

  • ক্যারিয়ার ডেস্ক

বিসিএস পরীক্ষায় চূড়ান্তভাবে নির্বাচিত হওয়ার দ্বিতীয় ধাপ হচ্ছে লিখিত পরীক্ষা। এ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে পারলেই মুখোমুখি হতে হবে ভাইভার। আর তাই লিখিত পরীক্ষা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষার্থীদের জন্য। সঠিকভাবে প্রস্তুতি নিতে পারলে এ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়া খুব কঠিন নয়। এ বিষয়ে আরও পরামর্শ দিচ্ছেন ৩৩তম বিসিএসে সম্মিলিত মেধা তালিকায় প্রথম হওয়া রিদওয়ান ইসলাম


৩৭তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষা শুরু হচ্ছে আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি। ইতিমধ্যে যারা লিখিত পরীক্ষায় অংশ নেবেন তারা চূড়ান্ত প্রস্তুতি নিচ্ছেন। এর আগে আমরা মানবণ্টন নিয়ে আলোচনা করেছিলাম। লিখিত পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য প্রার্থীকে প্রথমেই চিহ্নিত করতে হবে কোন কোন বিষয়ে তার ধারণা কম। সে বিষয়েই বেশি জোর দিতে হবে। গাণিতিক যুক্তি ও মানসিক দক্ষতা বিষয়টা একটু ভিন্ন ধরনের। এ বিষয় পুরোপুরি নির্ভর করে চর্চার ওপর। তাই কখনোই বিরতি দেওয়া যাবে না। গণিতের ক্ষেত্রে অনুশীলনের বিকল্প নেই। সূত্রগুলো একটি খাতায় একসঙ্গে লিখে রাখতে পারেন। বিশ্বজুড়ে সমসাময়িক যেসব ঘটনা ঘটছে সেগুলোর ব্যাপারে পরিষ্কার ধারণা রাখলে আন্তর্জাতিক বিষয়ে ভালো করা অনেক সহজ হয়। বেশি বেশি সংবাদপত্র পড়া ও খবর শুনতে হবে। সব পত্রিকায় বিশ্বের চলমান ঘটনা নিয়ে অনেক আর্টিকেলই থাকে। পাশাপাশি বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা, আন্তর্জাতিক আইন ইত্যাদি বিষয়ে ধারণা নিলে পরীক্ষায় অনেক ভালো করা সম্ভব। বাংলাদেশ বিষয়াবলির জন্য দেশীয় অঙ্গনে ঘটে যাওয়া সমসাময়িক গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা, দেশের ভূ-প্রকৃতি, জলবায়ু, ইতিহাস, অর্থনীতি, সরকার ব্যবস্থা, আর্থ-সামাজিক অবস্থা, শিক্ষানীতি, দেশের জন্ম ইতিহাস ও সংবিধান ইত্যাদি বিষয়ে পরিপূর্ণ ধারণা নিলে পরীক্ষায় ভালো করা যায়। গুরুত্বপূর্ণ কিছু তথ্য খাতায় একসঙ্গে লিখে রাখলে পরীক্ষার আগের রাতে রিভিশনে বেশ সুবিধা হয়। যেমন- আমাদের মুক্তিযুদ্ধ এবং তার ঐতিহাসিক পটভূমি সংশ্লিষ্ট গুরুত্বপূর্ণ তারিখগুলো। আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক সংগঠন সম্পর্কিত তথ্য। রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি, সংবিধানের ১১টি ভাগের মূল বিষয় এবং গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি ধারা। বাংলা বিষয়ে প্রস্তুতির জন্য সাহায্য নেওয়া যেতে পারে বিগত সালের পরীক্ষায় আসা নানা প্রশ্নের।

এসব পরীক্ষায় আসা ব্যাকরণ এবং বিভিন্ন ধরনের পত্র লেখার নিয়ম জেনে নেওয়া যেতে পারে। প্রবন্ধ পয়েন্ট এবং সাব-পয়েন্ট দিয়ে লিখতে হয়। সব রচনায় ভূমিকা, মূল অংশ এবং উপসংহার থাকেই। তাছাড়া মূল অংশে কিছু কমন পয়েন্ট থাকে (যেমন :কী, কারণ, প্রভাব, করণীয় ইত্যাদি)। রচনা মুখস্থের কিছু নেই; কারণ দেখবেন, আপনি যা জানেন, তা-ই লিখে শেষ করতে পারছেন না। বরং লেখায় লাগাম টানা জরুরি। ইংরেজি বিষয়ে দুর্বলতা সবারই থাকে। ইংরেজি গ্রামারের বেসিক নিয়ম চর্চা করতে হবে। অনুবাদের জন্য বিগত পরীক্ষায় আসা অনুবাদগুলো চর্চা করলে খুব ভালো হয়। পাশাপাশি ফ্রিহ্যান্ড লেখার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। দশম থেকে ছত্রিশতম বিসিএসের ব্যাকরণ অংশটি ভালো করে পড়ে নিন। কম্প্রিহেনশন যত পারেন পড়ুন। ইংরেজি পত্রিকার সমসাময়িক তাৎপর্যপূর্ণ কলাম বা লেখা পড়তে পারেন। ৩৫তম বিসিএস পত্রিকায় একটি খবর থেকেই প্যাসেজ এসেছিল। ব্যাকরণ অংশে প্রিলিতে যা পড়েছেন তা-ই সই! সেসব পড়াই বারবার রিভিশন দিন।

প্যাসেজ থেকেই সামারি করতে হয়। এ ক্ষেত্রে নিজের মতো করে লিখতে হবে। সম্পাদকের কাছে চিঠি পড়ার তেমন কিছু নেই। শুধু নিয়ম-কানুন জেনে রাখুন। তাতেই হবে। আর দুই পৃষ্ঠার বেশি লিখবেন না। যত পারা যায় শব্দের অর্থ শিখুন। প্রচুর অনুশীলন করুন। ফ্রিহ্যান্ড রাইটিংয়ের জন্য অনুশীলন অনেক কাজে দেয়। Essay, Amplification এবং Translation-এর জন্য ইংরেজি সংবাদপত্র এবং বই বুঝে পড়ূন। যে শব্দগুলো নতুন শিখলেন, সেগুলো আলাদা একটি খাতায় তুলে রাখলে রিভিশনে সুবিধা হবে। যেমন : কিশোর অপরাধ নিয়ে লিখতে গেলেন; কিন্তু এর ইংরেজিই যদি না জানেন, তাহলে লিখবেন কীভাবে? তাই সংবাদপত্র ঘেঁটে এ ধরনের শব্দগুলো কয়েকদিন টুকলেই দেখবেন অনেক কিছু জানা হয়ে গেছে । সাধারণ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ে সঠিক তথ্য সুন্দরভাবে উপস্থাপন করতে পারলে গণিতের মতোই ভালো নম্বর তুলতে পারবেন।

প্রশ্নের উত্তর বিস্তৃত না করে প্রয়োজনীয় চিত্র, উদাহরণ, রাসায়নিক সংকেত ও চিহ্ন ব্যবহার করতে হবে। প্রথমেই সিলেবাস ও বিগত বছরের প্রশ্নগুলো ভালোমতো দেখে নিতে হবে। বিগত বছরের প্রশ্নের ধরন দেখলে ঠিক কী ধরনের প্রশ্নের উত্তর চাওয়া হয়, সে সম্পর্কে আপনার ভালো একটি ধারণা হয়ে যাবে।

সূত্র: সমকালfavicon59-4

Sharing is caring!

Leave a Comment