শর্টকাটে সুখ্যাতি
- স্বর্ণা কাজী
জীবনে চলার পথে সুখ্যাতি পেতে কে না চায়? কিন্তু ‘সুখ্যাতি’ যেন সোনার হরিণ। আমি আপনাকে কিছু টিপস্ দিতে পারি যা আপনাকে এই সোনার হরিণ পেতে সাহায্য করবে। এজন্য আপনাকে শুধু কিছু সময় ব্যয় করতে হবে। এতে করে আপনি পাবেন তিনটি উপকারিতা যা আপনার জীবনকে বদলে দিতে পারে।
উপকার তিনটি হল:
১। আপনার কাজে পাবেন এমন সফলতা যা নিজ প্রজ্জলিত নিয়ন আলো দিয়ে অন্যদেরকে আপনার সম্পর্কে ভাবতে বাধ্য করবে। আপনি আবির্ভূত হবেন অন্যতম এক উজ্জ্বল তারকা হিসাবে যে কিনা নিজের কাজটি খুব ভালোই বুঝে- এমন বিশ্বাস অন্যদেরকে বাধ্য করবে আপনার সাথে কাজ করতে।
২। আপনার ব্যবসায় উন্মোচিত হবে নতুন দিগন্ত। আগাম যোগ্যতাসম্পন্ন সম্ভবনাগুলোকে কাজে লাগান এবং যদি আপনি চান আপনার লাভজনক বচনভঙ্গি, অর্জিত শিক্ষা এবং পরামর্শকে কাজে লাগাতে পারেন এক্ষেত্রে।
৩। আপনি হয়ে উঠতে পারেন আপনার পরিবারের গর্ব এবং অন্যদের কাছে ঈর্ষনীয় ব্যক্তিত্ব।
এসব কিছু কীভাবে পেতে পারেন ভাবছেন নিশ্চয়ই? আসুন দেখা যাক কিভাবে এগুলো আপনি অর্জন করতে পারেন:
সময় নষ্ট না করে লিখে ফেলুন একটি বই। কেননা একটি বই আপনাকে সবচেয়ে দ্রুত সাফল্য এবং খ্যাতি এনে দিতে পারে। আর অবশ্যই চেষ্টা করবেন সেই বই এমন কোনো একটি নামকরা প্রকাশনা থেকে প্রকাশ করতে যারা আপনার লেখক হিসাবে আত্নপ্রকশে সহায্যে এগিয়ে আসবে।
- আপনি হয়তো ইংরেজী ভাষায় এতো পারদর্শী নন। কোনো সমস্যা নেই। বাংলাতেই লিখে ফেলুন। ভুলে যাবেন না, মাইকেল মধুসূদন দত্তও বাংলা লিখে খ্যাতি অর্জন করেছিলেন।
- হয়তো আপনার দম ফেলারও সময় নেই। এতোটাই ব্যস্ত আপনি। তারমধ্যেই একটু সময় বের করুন এবং লিখে ফেলুন বইটি। এই বই-ই আপনাকে সাহায্য করবে দ্রুত খ্যাতি অর্জন করতে।
- হয়তো ভাবছেন পরে কোনো একদিন বসবেন লেখা নিয়ে? কেন সময় নষ্ট করবেন? শুরু করে দিন এখন থেকেই।
ভাবছেন একটা গোটা বই কীভাবে লিখবেন? বিক্রি করার জন্য সম্পূর্ণ বইটি আপনার একার লেখার দরকারও নেই, আর সেটা উচিতও হবেনা। ব্যাপারটা অন্যরকম হতে পারে।
যেমন ধরুন, আপনি কোনো একটি বইয়ের ‘শুরুর কথা’র লেখক হিসাবে শুরু করতে পারেন। বিশেষ করে নন-ফিকশন বইগুলোর ক্ষেত্রে। কারণ এই বইগুলো বিক্রিই হয় ‘শুরুর কথা’ অংশটির উপর ভিত্তি করে যেখানে উল্ল্যেখ থাকে বইটির বিষয়বস্তু এবং সংক্ষিপ্ত বিবরণ থাকে গল্পের। এমন অনেক লেখকই আছে যারা এই অংশটি ভালো লিখতে পারেন না। অথচ কিছু ছোট টিপস্ এবং অনুশীলন আপনাকে এ ব্যাপারে পারদর্শী করে তুলতে পারে।
মনে রাখবেন, বইয়ের ‘শুরুর কথা’ অংশটি শুধু পাঠক আকৃষ্টের জন্যই নয়, প্রকাশকের জন্যও। প্রকাশকেরাও এই অংশটি পড়েই প্রকাশনার জন্য বই নির্বাচন করে, কেননা এর সাথে তাদের ব্যবসার লাভ-লোকসান জড়িত। তাই একবার যদি আপনি এই কাজটি আয়ত্ত করতে পারেন, ব্যস- আপনি নিজেই আত্নপ্রকাশ করতে পারেন একজন সাহিত্যিক নিযুক্তক হিসাবে।
আপনার লেখাটি নিয়ে বিভিন্ন প্রকাশনীতে যেতে পারেন। অথবা ডিজিটাল যুগে ইন্টারনেটের সাহায্য নিতে পারেন। প্রকাশনীগুলো আপনার লেখা পড়ে আকৃষ্ট হলে আপনি পেয়ে যেতে পারেন তাদের সাথে কাজ করার সুযোগ এবং পারিশ্রমিক।
এরপরে আপনি আপনার সহকর্মী এবং সম্পাদক মিলে যদি এরকম কোনো প্রকাশনী পেয়ে যান, তবে বইটি লেখার কাজ শুরু করে দিন। পরবর্তী নয় থেকে বার মাসের মধ্যে যেন তা সমাপ্ত হয়। আপনাকে শুধু খেয়াল রাখতে হবে যে বইয়ের থেকে উপার্জিত অর্থের যেন যথার্থ ব্যবহার হয়। কারণ তা আপনার পরবর্তী ব্যবসায়িক পুঁজি অথবা ব্যবসা প্রসারের জন্য কাজে লাগতে পারে।
আপনার বই হয়ে উঠতে পারে আপনার জন্য সবচেয়ে বড় এবং দীর্ঘস্থায়ী ব্যবসার উপাদান। ঠিকই ধরেছেন, একটি বই আপনার আরও কয়েক বছরের উপার্জনের অবলম্বন হতে পারে। আপনার মর্যাদা প্রতিষ্ঠিত হবে দৃঢ়ভাবে এবং মানুষের কাছে আপনার বিশ্বাসযোগ্যতা হয়ে উঠবে অনবদ্য। বই লেখা আপনার জন্য প্রাথমিক অবস্থায় একটি চ্যালেঞ্জ হলেও আপনার সততা, নিষ্ঠা এবং পরিশ্রম আপনাকে নিয়ে যেতে পারে খ্যাতির চূড়ায়। ‘সুখ্যাতি’ নামক সোনার হরিণ তখন ধরা দিবে আপনারই কাছে।