শরীরী ভাষার ভুল প্রয়োগ এবং…

শরীরী ভাষার ভুল প্রয়োগ এবং…

  • মিন্ডা জেটলিন

আপনি সত্য বা মিথ্যা যাই বলেন না কেন, শারীরিক ভাষা প্রয়োগের কিছু বদঅভ্যাস রয়েছে যা  অন্যদের নিকট অগোচরে বা অসর্তকভাবে হলেও আপনার বিশ্বাসযোগ্যতা কমাতে সংকেত দেয়। আপনি সহকর্মী বা অন্যদের নিকট বিশ্বস্ত  হতে চাইলে অবশ্যই নিচের বিষয়গুলো এড়িয়ে চলার চেষ্টা করবেবন।


১.       মাথা পেছন দিকে নিয়ে কথা বলা

মাথা পেছন দিকে নিয়ে থুতনি উপর দিকে রেখে কথা বললে বা শুনলে কর্মীরা এটাকে তাদের প্রতি আপনার অবজ্ঞা বা ঔদ্ধত্য প্রকাশ ভেবে নিতে পারে। তাদের প্রতি আপনার ভালো মনোভব জোরালো করার জন্য মাথা সমানের দিকে হালকা ঝুঁকে নাকটি সামান্য নিচু করে কথা বলূন।

২.       চোখে চোখ না রেখে কথা বলা

এক গবেষণায় দেখা গেছে, কথা বলার জন্য শতকরা প্রায় ৫০ভাগ ও কথা শোনার জন্য শতকরা প্রায় ৭০ ভাগ সময় চোখে চোখ রেখে কথা বলা বা শোনা দরকার অন্যথায়, তাঁদের নিকট আপনার কপটতা বা অনাগ্রহ প্রকাশ পেতে পারে।

৩.      মুখের করুণভাব প্রদর্শণ

এটা আরেক ধরনের বদঅভ্যাস কথা বলার সময় মুখে হাত রাখলে করুণভাব ফুটে উঠতে পারে, তাছাড়া, নাক চুলকিয়ে কথা বলা বা ক্লান্ত চোখে কথা বলা উচিত নয়।

৪.       মাথা নাড়িয়ে ‘না’ বা ‘হ্যাঁ’ বলা

কথা বলার সময় মাথা নাড়ানো অনেকেরই স্বভাব কিন্তু আপনি যদি মাথা ডান-বাম বা এপাশ-ওপাশ করে সাড়া দেন তাহলে বিরুদ্ধ ইচ্ছা প্রকাশ পায়, তাই কথা বলার সময় মাথা এপাশ-ওপাশ করা ঠিক নয়।

৫.      পকেটে হাত রেখে বা  পিছনে হাত রেখে কথা বলা

আপনি হয়তো স্বাভাবিক ভাবেই এমন করছেন, কিন্তু এর থেকে এমন সংকেত আসতে পারে যাতে মনে হতে পারে যে আপনি কথা গুলো হয়তো বিশ্বাস করছেন না বা কিছু লুকাতে চাইছেন। তাই পকেটে হাত রেখে বা পেছনে হাত রেখে কথা বলা উচিত নয়।

৬.      অতিরিক্ত অঙ্গভঙ্গি

অনেকেই আছেন যারা শরীর, বুক ও কাঁধ থেকে মাথা অনেকটা সামনের দিকে বাঁকিয়ে কথা বলেন ফলে এর থেকে  কিছু লুকাতে চাচ্ছেন এমন ভাব প্রকাশ পেয়ে থাকে।

৭.       একহাতের পিঠের উপর অন্য হাতের তালূ দিয়ে ধরে রাখা

অনেকেই আবার দুহাত একত্র করে পরিহিত প্যান্টের সন্মুখভাগে ছেড়ে রাখেন হয়তো সন্মান প্রদর্শনের লক্ষ্যে বা একটু আরামের জন্য। যাহোক এটা একটা ভয়ের চিহ্ন বা হয়তো কোনো কিছু গোপন করতে চাইছেন এমন ভাব প্রকাশ পেয়ে থাকে। এসব অভ্যাস পরিহার করতে হবে।

৮.      হাত মুষ্টিবদ্ধ  করে রাখা

হাত মুষ্টিবদ্ধ করে কথা বলা বা শোনার প্রক্রিয়া আক্রমনাত্মক বা মনোভাবে উগ্রতার চিহ্ন প্রকাশ করে ।  সম্পর্ক উন্নয়ন করতে চাইলে এই অভ্যাস পরিত্যাগ করতে হবে।

৯.      হাত নাড়ানো

অধিকাংশ লোকই মনে করেন যারা কথা বলা বা শোনার সময় কোন রকমের অঙ্গ-ভঙ্গি না করেন তারা সৎ নন। আসলে মিথ্যা বলার অভ্যাস যাদের রয়েছে তারা একদমই নিরব থাকতে চায়।

১০.    জড়সড় অবস্থা

আপনার বাহু বা হাত ভাঁজ করে বুকে বেঁধে রাখা, দুই পা গুটিয়ে রাখা, মনের ভেতর জড়সড় অবস্থা থাকা ইত্যাদির অর্থ হচ্ছে আপনি শান্ত, স্নায়ুচাপ বা লজ্জা পাচ্ছেন। এ ধরনের আচরনও ত্যাগ করতে হবে।

১১.     সামনের কোন কিছু ধরে রাখা

আপনার শরীরের সামনে থাকা কোনো কিছু এক হাত বা দুই হাত দিয়ে ধরে রাখা নিজেকে গুটিয়ে রাখার আরেকটি চিহ্ন-মনে করেন আমেরিকানরা। এশিয়ার কিছু দেশে এটিকে সন্মান দেখানোর আরেকটি ধাপ মনে করা হয়ে থাকে(বিভিন্ন পরিবেশে সব ধরনের শারিরিক ভাষা একই অর্থ বহন করে না)।

১২.     এক কাঁধ বাকিয়ে কথা বলা

এক কাঁধ বাঁকিয়ে কথা বলা একটা খারাপ ধারনা। এতে আপনাকে অন্যরকম লাগতে পারে, কোনো বিষয় সম্পর্কে আপনার অজানা বা অসুখি দেখাতে পারে এবং এর থেকে আপনি যা বলছেন তা সত্য হলেও সেটিকে সন্দেহজনক মনে হতে পারে।

১৩.    হাত শক্ত করে ধরে রাখা

শক্ত করে নিজ হাত বা শরীরের অন্য অংশ ধরে রাখা, এর অর্থ হলো কোন কথায় আপনি বিস্মিত হয়ে যাচ্ছেন। সুতরাং হাত ছেড়ে দিয়ে স্বাভাবিক হয়ে বসুন।

১৪.     পেছন দিকে ঝুঁকে বা হেলান দিয়ে বসা

আপনি যদি অন্যের সামনে, কোন সভা বা সেমিনারে এভাবে বসেন তাহলে তা খুবই বাজে দেখাবে। এরকম কোন কাজে এভাবে বসা উচিত হবে নয়।

১৫.    এদিক সেদিক ঘুরাফেরা করা

এটাও হেলান দিয়ে বসার মতো একটা খারাপ দিক। কাউকে আমন্ত্রণ জানিয়ে বা কোনো সভা বা সেমিনারে গিয়ে এমনটি করা ঠিক নয়। এর ফলে অন্যদের সাথে একটা দুরত্ব সৃষ্টি হতে পারে।

১৬.    অন্যের মুখোমুখি বসা

আপনি যখন কোনো আমন্ত্রণে বা কারোর অফিসে সাক্ষাৎ করতে যাবেন সেখানে কোন কিছুতে আপনার মতো করে পছন্দ করতে যাবেন না। কিন্তু যদি পারেন ৪৫ ডিগ্রি কোনাকুনি বসুন। এতে আপনার আলোচনা আরো অধিক সৌহার্দপূর্ণ, ফলপ্রসূ এবং আপনি যে রকম বিশ্বস্ততার সর্ম্পক চান তা গড়ে ওঠার প্রথম পদক্ষেপ হয়ে উঠতে পারে।

twitter-cropমিন্ডা জেটলিন : প্রেসিডেন্ট, আমেরিকান সোসাইটি অব জার্নালিস্ট। ব্যবসায় ও প্রযুক্তি বিষয়ক লেখক।
অনুবাদ : শিমি আক্তার
সূত্র : ইনকর্পোরেট ডট কম।favicon59

Sharing is caring!

Leave a Comment