পেশা গড়ি হার্ডওয়্যার অ্যান্ড নেটওয়ার্ক ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে
- এস এম রাসেল
একজন সফল হার্ডওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারের গল্প শুনাবো আপানদের। গল্পটা তার নিজের মুখেই শুনুন:
আমার নাম ফেরদৌস। জন্ম কুড়িগ্রাম জেলায়। আমার বাবা একজন কৃষক ছিলেন এবং মা গৃহিণী। আমরা দুই ভাই এক বোন। আমি যখন নবম শ্রেণিতে পড়ি তখন হৃদরোগে আক্রাত্ন হয়ে বাবা মারা যান। এরপর থেকে সংসারের হাল ধরতে হয় আমাকে। আমাদের কোনো জমিজামা ছিল না। অনেক কষ্টে এক বিঘা জমি বর্গা নিই। কিন্তু ফসল চাষ করার টাকা কোথায় পাবো? শেষে আমার মা তাঁর বিয়ের গহনা বিক্রি করে আমাকে কিছু টাকা দিলেন। দুর্ভাগ্য! ওই বছর ভালো ফসল হয়নি। জমির মালিক তাতে খুশী হননি। এর পরের বছর আমাকে আর জমি চাষ করতে দিলো না। ছোট ভাই ও বোনকে নিয়ে খুব চিন্তায় পড়ে গেলাম।
আমার স্বপ্ন ছিল পড়ালেখা করে অনেক বড় ইঞ্জিনিয়ার হবো। আমার আর পড়ালেখা হলো না। আমার স্কুলের বন্ধুর ভাই ঢাকা থাকেন। তিনি একটি প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়েন কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে। এক ঈদের ছুটিতে তিনি বাড়ি এলে তার সাথে দেখা করি। তিনি আমাকে পরামর্শ দিলেন কম্পিউটার হার্ডওয়্যার অ্যান্ড নেটওয়ার্ক ইঞ্জিনিয়ারিং শিখতে।তার পরামর্শে আমি ঈদের পর ঢাকায় গিয়ে ধানমন্ডির ডিআইআইটিতে শর্ট কোর্সে ভর্তি হই। কোর্স শেষ না হতেই আমি বিসিএস কম্পিউটার সেন্টারে হার্ডওয়্যার কোম্পানিতে চাকরি পেলাম ৭ হাজার টাকার বেতনে। কোর্স শেষ করে আমি সার্টিফিকেট অর্জন করে আরেকটি হার্ডওয়্যার কোম্পানিতে ১৫ টাকা বেতনের চাকরী পেলাম। এখন আমার বেতন ৩০ হাজার টাকা।
ফেরদৌসের মতো আরও অনেক তরুণ কম্পিউটার হার্ডওয়্যার অ্যান্ড নেটওয়ার্ক ইঞ্জিনিয়ারিং শিখে বদলে ফেলেছেন নিজের ভবিষ্যৎ। চাইলে আপনিও পড়তে পারেন কম্পিউটার হার্ডওয়্যার অ্যান্ড নেটওয়ার্ক ইঞ্জিনিয়ারিং।
কোথায় পড়বেন
ড্যাফোডিল ইনস্টিটিউট অব আইটিতে (ডিআইআইটি) তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ে এক বছরমেয়াদি প্রফেশনাল কোর্সগুলোয় সীমিত সংখ্যক আসনে ছাত্রছাত্রী ভর্তি চলছে। কোর্সগুলো হলো: হার্ডওয়্যার ও নেটওয়ার্ক ইঞ্জিনিয়ারিং, ওয়েব অ্যান্ড ই-কমার্স, সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং এবং থ্রিডি এনিমেশন অ্যান্ড ভিজ্যুয়াল এফ/এক্স। প্রতি বছর চারটি সেশনে (মার্চ-জুন ও সেপ্টেম্বর-ডিসেম্বর) এবং তিনটি শিফটে (সকাল-বিকেল-সান্ধ্যকালীন) এই ডিপ্লোমা প্রোগ্রামগুলোয় ভর্তি নেওয়া হয়। ডিআইআইটি পরিচালিত কোর্সগুলো সম্পূর্ণভাবে ব্যবহারিক ক্লাসভিত্তিক, যা সার্টিফায়েড প্রফেশনাল প্রশিক্ষকদের সার্বিক তত্ত্বাবধানে পরিচালিত হয়ে থাকে। কোর্সগুলোর অন্য একটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য হচ্ছে, কোর্স শেষে বাধ্যতামূলক রিয়েললাইফ প্রজেক্ট ওয়ার্ক ও ১-৩ মাসমেয়াদি ইন্টার্নশিপ; যা একজন শিক্ষার্থীকে হাতে-কলমে কাজ শিখতে সাহায্য করে। ডিআইআইটি পরিচালিত বিভিন্ন প্রশিক্ষণ কোর্সে দরিদ্র ও মেধাবী ছাত্রছাত্রীদের ড্যাফোডিল ফাউন্ডেশন বৃত্তি প্রদান করে থাকে। নূ্যনতম এসএসসি পাস যে কোনো বয়সের যে কেউ এই কোর্সগুলোয় ভর্তি হতে পারবে।
যোগাযোগ :
প্রধান ক্যাম্পাস : ১৯/১, পান্থপথ, ধাকা-১২০৫। ফোন : +৮৮ ০২ ৯১৩৮১৩৯, ০১৭১৩৪৯৩১৬৩। ইমেইল: info@diit.info
এছাড়া দেশে আরও বেশ কিছু আইটি প্রতিষ্ঠান রয়েছে যেখানে কম্পিউটার হার্ডওয়্যার অ্যান্ড নেটওয়ার্ক ইঞ্জিনিয়ারিং বিষয়ে ডিপ্লোমা ডিগ্রি প্রদান করা হয়।
কাজের ক্ষেত্র
কম্পিউটার নেটওর্য়াকিং ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে কাজ করার সুযোগ রয়েছে আইএসপি অর্থাৎ ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার কোম্পানিগুলোতে। এছাড়া মোবাইল কোম্পানি, ব্যাংক, এয়ারলাইন, ট্রাভেল এজেন্সি, শেয়ার মার্কেট, মাল্টিন্যাশনাল ও ন্যাশনাল কোম্পানি, বায়িংহাউজ অর্থাৎ যেখানে কম্পিউটার নেটওর্য়াক আর ইন্টারনেট ব্যবহার করা হয় সেখানেই রয়েছে চাকরির সুযোগ । দিনে দিনে এই চাকরির বাজারটি বড় হচ্ছে। অতএব আর দেরি না করে কোনো একটি প্রতিষ্ঠান থেকে কম্পিউটার হার্ডওয়্যার অ্যান্ড নেটওয়ার্ক ইঞ্জিনিয়ারিং বিষয়ে ডিপ্লোমা কোর্সে ভর্তি হোন।