সময়ের চাহিদা অ্যাপারেল মার্চেন্ডাইজিং
- ক্যারিয়ার ডেস্ক
দেশে প্রায় ১১ হাজারের মতো গার্মেন্ট ফ্যাক্টরি রয়েছে। আছে অসংখ্য বায়িং হাউস, সোয়েটার ফ্যাক্টরি, টেক্সটাইল ইন্ডাস্ট্রি এবং কোয়ালিটি কন্ট্রোল প্রতিষ্ঠান ও ফ্যাশন ডিজাইন হাউস। এসব প্রতিষ্ঠানে মার্চেন্ডাইজারের আছে চাকরির বিশাল ক্ষেত্র। আপনি গ্র্যাজুয়েশন শেষ করে এখানে ক্যারিয়ার গড়তে পারেন অনায়াসে। গার্মেন্ট শিল্পে বায়িং অ্যান্ড মার্চেন্ডাইজিং বিষয়ে প্রশিক্ষণ নিয়েও ভালো বেতনে চাকরি করতে পারেন। তা ছাড়া পোশাক শিল্পে ক্যারিয়ার গড়তে চাইলে মার্চেন্ডাইজিংয়ে উচ্চতর ডিগ্রি নিয়ে পড়াশোনাও করতে পারেন। এতে ক্যারিয়ার আরও পোক্ত করতে পারবেন। বর্তমান চাকরির বাজারে পেশাভিত্তিক পড়াশোনার কদরও বেশ। তা ছাড়া বিশ্বে আমাদের দেশ থেকে রফতানিকৃত পোশাকের কদরটাই আলাদা। তাই বলা যায়, ক্যারিয়ার গঠনে ফলপ্রসূ প্র্রশিক্ষণ কোর্স হচ্ছে গার্মেন্ট বায়িং অ্যান্ড মার্চেন্ডাইজিং।
ডিগ্রি ও প্রশিক্ষণ
পোশাক শিল্পের পরিধি বিস্তৃতির কারণে অন্যসব পেশার চেয়ে এ পেশায় চাকরি পাওয়াটা বেশ সহজও বটে। একেকটি পোশাক শিল্প এবং বায়িং হাউসে প্রচুর পরিমাণে দক্ষ লোক নিয়োগ করা হয়। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এ পেশাদারদের উচ্চ বেতনে কর্মসংস্থান সুবিধা রয়েছে। আপনি যে বিষয়েই পড়াশোনা করেন না কেন, যদি নিজের মনে ইচ্ছাশক্তি থাকে তবে আপনিও হতে পারেন একজন মার্চেন্ডাইজার। মার্চেন্ডাইজিং বিষয়ে এখন তিন মাস, ছয় মাস এবং এক বছর মেয়াদি শর্ট কোর্স করার ব্যবস্থা আছে। তবে কেউ যদি এ বিষয়েই পড়াশোনা করতে চান, তবে এ বিষয়ে অনার্স-মাস্টার্স করতে পারেন। ফ্যাশন ডিজাইনিং এবং মার্চেন্ডাইজিংয়ে পড়াশোনার জন্য বিভিন্ন ইনস্টিটিউট রয়েছে। যেমন : ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল প্রফেশনাল ট্রেনিং ইন্সটিটিউট, রেডিয়েন্ট ইনস্টিটিউট অব ডিজাইন, ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ডিজাইন, স্কাই হাই ইনস্টিটিউট, পার্ল ইনস্টিটিউটসহ অনেক প্রতিষ্ঠান বিভিন্ন মেয়াদি প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকে। বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে এ বিষয়ে পড়াশোনা করা যাবে। দু’বছর মেয়াদি ডিপ্লোমা কোর্সও করা যাবে। এ ছাড়া উচ্চতর পড়াশোনার জন্য রয়েছে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনার সুযোগ। এখানে বিএসসি অনার্স ইন ফ্যাশন ডিজাইন অ্যান্ড টেকনোলজি, অ্যাপারেল মার্চেন্ডাইজিং, এমবিএ ইন অ্যাপারেল মার্চেন্ডাইজিং রয়েছে। আর এখানে ডিপ্লোমা ইন অ্যাপারেল মার্চেন্ডাইজিংয়ের কোর্সে পড়তে গ্র্যাজুয়েশন করা থাকলেই চলবে। তবে এক্সিকিউকিভ মার্চেন্ডাইজিংয়ে ভর্তি হতে এইচএসসি সার্টিফিকেটই যথেষ্ট! জানতে হবে একজন মার্চেন্ডাইজারকে ফ্যাশন ও টেক্সটাইল বিষয়ে খুঁটিনাটি জানতে হয়। এই কোর্সগুলোতে সাপ্লাই চেইন ম্যানেজমেন্ট পেশার সূচনা, ফেব্রিক, নিটওয়্যার, ফেব্রিক, সোয়েটার ডিজাইন, টেক্সটাইল, ফিনিশিং, প্রিন্টিং অ্যান্ড টেস্টিং, মান ব্যবস্থাপনা, প্যাটার্ন মেকিং, উৎপাদন পরিকল্পনা ও ব্যবস্থাপনা, কমার্শিয়াল প্রসিকিউটর, প্রিন্টিং ফ্যাশন, স্ট্যাডিজ প্ল্যানিং, ফেব্রিক ডিজাইন, কালার মিক্সিং, বিপণন, টেক্সটাইল সায়েন ইত্যাদি বিষয়ে ব্যবহারিক ও তত্ত্বীয় শিক্ষা পাবেন। যা আপনার পেশাগত জীবনটাকে আরও গতিময় করে তুলবে।
কাজের ক্ষেত্র
মার্চেন্ডাইজিং দায়িত্বপূর্ণ একটি পেশা। একজন মার্চেন্ডাইজার সব সময় তার ক্রেতা বা বায়ারের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন ও রক্ষণাবেক্ষণ করেন। শুধু যোগাযোগই নয়, পোশাক তৈরির অর্ডার নেওয়া থেকে শুরু করে ও অর্ডার অনুযায়ী পোশাক সরবরাহ এবং মান নিয়ন্ত্রণের কাজটিও করে থাকেন তিনি। তা ছাড়া একজন ক্রেতা বা বায়ারের চাহিদামতো তৈরি পণ্যটি সঠিক মানসম্পন্ন হয়েছে কি-না তা দায়িত্বের সঙ্গে নিশ্চিত করে থাকেন একজন মার্চেন্ডাইজার। আর তাদের কর্মক্ষেত্র হচ্ছে দেশি পোশাক শিল্পকারখানা, ইপিজেড, ফ্যাশন হাউস, টেক্সটাইল ইন্ডাস্ট্রিগুলো। সম্ভাবনা দুনিয়াব্যাপী শুধু দেশে নয়, বর্তমান বিশ্ববাজারে পোশাক শিল্পের বিপুল চাহিদার কারণে অন্যসব পেশার চেয়ে এতে চাকরি পাওয়াটা বেশ সহজও বটে। একেকটি পোশাক শিল্প এবং বায়িং হাউসে প্রচুর দক্ষ লোক নিয়োগ করা হয়। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এসব পেশাদারের উচ্চ বেতনসম্পন্ন কর্মসংস্থান সুবিধা রয়েছে। এসব প্রেক্ষাপটে এ পেশার ব্যাপক দক্ষ জনবল চাহিদার কারণে আমাদের দেশেই গড়ে উঠেছে বেশ কিছু শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান। আপনি চাইলে এসব প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমেই দেশের বইরে চাকরি খুঁজে নিতে পারেন। আর দেশের অসংখ্য প্রতিষ্ঠান তো বসেই আছে আপনার চাকরি নিয়ে।
বেতনভাতা
তবে মার্চেন্ডাইজারদের বেতননির্ভর করবে কাজের অভিজ্ঞতা ও দক্ষতার ওপরে। শুরুটা ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকায় হলেও অভিজ্ঞতা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে একজন মার্চেন্ডাইজারের বেতন এক থেকে দেড় বছরে বেতনে অঙ্ক লাখের কোটায় নিয়ে যেতে পারে। তা ছাড়া চার থেকে ছয় বছরের মধ্যে অন্যান্য সুযোগ-সুবিধাসহ বেতন প্রায় দুই থেকে তিন লাখে পৌঁছে যায়। এক্ষেত্রে একজন মার্চেন্ডাইজারের ইংরেজি জ্ঞান ও যোগাযোগের ওপর নির্ভর করে তার কাজের দক্ষতা। সে সঙ্গে শুধু উচ্চারণে কথা বলতে পারা ও স্মার্টনেস আপনার কাজের গতিকে আরও বাড়িয়ে দেবে।