হতে পারেন ভাষা চিকিৎসক

হতে পারেন ভাষা চিকিৎসক

  • ক্যারিয়ার ডেস্ক

ইউরোপ-আমেরিকায় পরিচিত হলেও ‘কমিউনিকেশন ডিসঅর্ডারস’ বিভাগটি বাংলাদেশে চালু হয়েছে সম্প্রতি। ‘সামাজিক জীব হিসেবে মানুষ যোগাযোগ বা সংজ্ঞাপনের মাধ্যমেই অন্যের কাছে তার আবেগ, সংবেদন, প্রয়োজন, বাসনা বা ইচ্ছাকে প্রতিনিয়ত তুলে ধরে। কিন্তু প্রতিটি ভাষিক সমাজেই এমন কিছু মানুষ রয়েছে যাদের এ ধরনের যোগাযোগে রয়েছে নানা ধরনের অক্ষমতা, বিকার বা বৈকল্য। এই ব্যার্থতার স্বরূপ সন্ধানসহ তার প্রতিবিধান করে একে সহনীয় মাত্রায় নিয়ে এসে তাদের মূলধারায় ফিরিয়ে আনার জন্যই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে চালু হয়েছে নতুন বিভাগ “কমিউনিকেশন ডিসঅর্ডারস” বা “যোগাযোগ বৈকল্য”।’ এভাবেই নতুন এই বিষয়টিকে পরিচয় করিয়ে দিলেন বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. হাকিম আরিফ।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এই বিভাগে বর্তমানে দুই বছর মেয়াদি একটি পেশাগত মাস্টার্স প্রোগ্রাম চালু আছে। ভবিষ্যতে ভাষা ও বাচন চিকিত্সক হিসেবে কাজ করার জন্য এই প্রোগ্রামে বিভিন্ন বিষয়ের ছাত্রছাত্রীসহ ১২ জন এমবিবিএস ডাক্তার পড়ছেন। এ বছরও প্রথম বর্ষ স্নাতক পর্যায়ে ৪০ জন শিক্ষার্থী ভর্তি করা হবে। তাই উচ্চমাধ্যমিক পেরিয়ে যেসব শিক্ষার্থী নিজেদের ভবিষ্যতের বাচন ও ভাষা চিকিত্সক হিসেবে গড়ে তুলতে চান তাঁরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘কমিউনিকেশন ডিসঅর্ডারস’ বিভাগে ভর্তি হতে পারেন। ভর্তি পরীক্ষায় ‘ঘ’ ইউনিটের মাধ্যমে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে পাসকৃত শিক্ষার্থীদের উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ে ‘জীববিজ্ঞান’ বিষয় থাকতে হবে। আর ‘খ’ ইউনিটে যাঁরা নির্বাচিত হয়েছে, উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ে মনোবিজ্ঞান, সমাজবিজ্ঞান অথবা সমাজকল্যাণ বিষয় থাকতে হবে। এ ছাড়া ভর্তি পরীক্ষায় ‘বাংলা’ ও ‘ইংরেজি’ বিষয়ে কমপক্ষে ১২ নম্বর পেতে হবে।

বিষয়বৈচিত্র্য

এই বিভাগে ভাষাবিজ্ঞান ও যোগাযোগশাস্ত্রের বিভিন্ন মৌলিক বিষয় যেমন পড়ানো হয়, তেমনি এতে অন্তর্ভুক্ত আছে অ্যানাটমি ও ফিজিওলজিসহ স্নায়ুতত্ত্ব-বিষয়ক বিভিন্ন কোর্স। এ ছাড়া শিশু ও বয়স্কদের বিভিন্ন বাচন ও ভাষা বৈকল্যবিষয়ক কোর্স, যেমন: অটিজম, অ্যাফেজিয়া, পাঠবৈকল্য, লিখনবৈকল্য, তোতলামি, শ্রবণ-সমস্যা ইত্যাদি বিষয়ে পড়ার সুযোগও এখানে রয়েছে। বৈকল্য সম্বন্ধে তত্ত্বীয় জ্ঞান লাভের পাশাপাশি বিভিন্ন হাসপাতাল বা ক্লিনিকে রোগী দেখেও শিক্ষার্থীরা অভিজ্ঞতা অর্জন করবেন।

চাকরির সুযোগ

‘কমিউনিকেশন ডিসঅর্ডার’ শিক্ষার্থীরা ‘বাচন ও ভাষাথেরাপি বা চিকিত্সা’ সনদ পাবেন। এই ডিগ্রি বাইরের দেশগুলোতে বেশ প্রচলিত। তাই এই বিভাগ থেকে পাস করে শিক্ষার্থীরা দেশের পাশাপাশি বিদেশেও ও ভাষা চিকিত্সক হিসেবে কাজ করতে পারবেন। স্কুল ও বিভিন্ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানেও বাচন ও ভাষা চিকিত্সক হিসেবে কাজ করার সুযোগ রয়েছে।

বিদেশে পড়ার সুযোগ

ইউরোপ ও আমেরিকার বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে বাচন ও ভাষা চিকিত্সায় স্নাতক, স্নাতকোত্তর ও পিএইচডি পর্যায়ে পাঠদান ও গবেষণা হয়। ফলে এই বিভাগ থেকে পাস করে ইংল্যান্ড, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড, নেদারল্যান্ডস, জার্মানি, ফ্রান্স, ডেনমার্ক, সুইডেনসহ পৃথিবীর বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চশিক্ষা নেওয়া ও গবেষণা করা যায়। favicon59

Sharing is caring!

Leave a Comment