কলম থেকেই জন্মাবে গাছ!
- ক্যারিয়ার ডেস্ক
আজব কলম বটে! লেখা তো হবেই, তবে লেখার কালি শেষ হলেও তার কাজ কিন্তু শেষ নয়। কেননা এই কলম থেকেই জন্ম নিতে পারে আস্ত একটা গাছ। শুনতে অবাক লাগলেও এরকমই আশ্চর্য কলম তৈরি করেছেন ভারতের কেরলার পরিবেশকর্মী লক্ষ্মী মেনন। কীভাবে এই পেন গাছের জন্ম দিতে পারে? কেরলার এই পরিবেশকর্মী এক সংস্থার পরিচালক। যেটির লক্ষ্যই হল প্রাত্যহিক জীবনযাপন যাতে পরিবেশবান্ধব হয়ে ওঠে। এই কাগজের কলম তারই ভাবনাপ্রসূত। লেখার পর তা ফেলে দিলেও পরিবেশের কোন ক্ষতি হচ্ছে না। এতে তো পরিবেশের যা উপকার হওয়ার হচ্ছেই, বাড়তি পাওনা একটি বীজ। তা রাখা আছে কলমের মধ্যেই। পেনের ঠিক পিছনে একটি বীজকে বিশেষ উপায় আটকে রাখা আছে। রাসায়নিকের সাহায্যে সেটিকে এমনভাবে সংরক্ষিত করা হয়েছে, যাতে বীজটি বেশ কিছুদিন তাজা থাকতে পারে। লেখা শেষ হওয়ার পর টবে বীজটি ঠিকভাবে রেখে দিলেই বীজ থেকে চারাগাছ জন্মাবে। প্রতিটি কলমে রাখা থাকছে এক বিশেষ ধরনের গাছের বীজ। ‘হামিংবার্ড ট্রি’ নামেই এই গাছ পরিচিত। আয়ুর্বেদ দুনিয়ায় এ গাছের কদরও তুঙ্গে। তিনি নিজে এই কলমের নাম দিয়েছেন এন্ট্রি. কেননা ইকো ফ্রেন্ডলি হওয়ার পথে এই কলমই প্রবেশদ্বার। এ কলম তৈরিতে কাগজ ব্যবহারের জন্য নতুন কোন কাগজ তৈরি করতে হচ্ছে না। পুরনো খবরের কাগজ ব্যবহার করেই তৈরি হচ্ছে এই কলম। যে মেশিনের সাহায্যে কাগজকে কলমের আকার দেওয়া হচ্ছে সেটি তৈরি করেছেন লক্ষ্মী নিজেই। কলম তৈরি করার ক্ষেত্রে উইমেন এমপাওয়ারমেন্টের বিষয়টি খেয়াল রাখা হয়েছে। কলম তৈরিতে নারী, বিশেষত শারীরিকভাবে অক্ষম নারীদের কাজে লাগানো হচ্ছে যাতে তারা এই কলম তৈরির মাধ্যমে স্বনির্ভর হয়ে উঠতে পারেন। আপাতত এই কলমের দাম ধার্য করা হয়েছে ১২ রুপি। তবে প্লাস্টিকের কলমের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় নামতে গেলে আরও দাম কমাতে হবে তা জানেন তিনি। তার জন্য এই কলমের ব্যবহার বাড়াতে হবে। সেই কারণে বড় ক্যাম্পেনও করতে চান লক্ষ্মী। পরিবেশ রক্ষার ক্ষেত্রে অনেকেই অনেক কথা বলেন, অনেক সভা সমাবেশ হয়। কিন্তু তাতে পরিবেশের যে কতটা উপকার হয় তা বোঝা যায় না। কিন্তু লক্ষ্মীর এই পদক্ষেপ যে পরিবেশ রক্ষায় উল্লেখযোগ্য এক পরিবর্তন আনবে তা বলাই বাহুল্য। ভবিষ্যতে কলমের রিফিলের ক্ষেত্রেও প্লাস্টিক বদলে ফেলা যায় কি না, সে ভাবনাও আছে লক্ষ্মীর।