কৃষি নিয়ে পড়া, কৃষিতে পেশা
- ক্যারিয়ার ডেস্ক
বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের অর্থনৈতিক মুক্তি আনয়ন এবং খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনের লক্ষ্যে কৃষি সম্পর্কিত যাবতীয় শাখাসমুহের পাশাপাশি কৃষিতে আধুনিক প্রকৌশল প্রযুক্তি একান্ত অপরিহার্য। এটি উপলব্ধি করে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৯৬৪সালে এগ্রিকালচারাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের যাত্রা শুরু হয়।
এর সিলেবাস ফিজিক্যাল, বায়োলজীক্যাল ও সোস্যাল সাইন্স এর সম্মিলন যা সিভিল, ওয়াটার রিসোর্স, মেক্যানিক্যাল, ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড এনভাইরোনমেন্টাল ইঞ্জিনিয়ারিংকে সংযুক্ত করে। এর মুল বিষয়গুলো হলো ফার্ম মেশিনারি, ইরিগেশন অ্যান্ড ওয়াটার ম্যানেজমেন্ট, ল্যান্ড ড্রেনেজ অ্যান্ড রিক্লেমেশান, সারফেস অ্যান্ড গ্রাউন্ড ওয়াটার রিসোর্স, ইন্টিগ্রেটেড ওয়াটার রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট, ক্লাইমেট অ্যান্ড এগ্রিকালচার, পোস্ট হারভেস্ট টেকনোলজি, রিনিউএবল এনার্জি অ্যান্ড বায়োরিসোর্স, সিমুলেশান অ্যান্ড মডেলিং, লো-কস্ট হাউজিং, ফার্ম এনভায়রোনমেন্ট অ্যান্ড স্ট্রাকচার, স্টোরেজ ফ্যাসিলিটিস অ্যান্ড কম্পিউটার প্রোগ্রামিং।
কোথায় পড়বেন
তিনটি বিশ্ববিদ্যালয়ে এই বিষয়ে পড়ানো হয়:
১. বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়য়ে (বাকৃবি) ১৯৬৪ সাল থেকে এ বিষয়ে পড়ানো হয়। বর্তমানে প্রতিবছর বি.এস.সি কোর্সে ১০০ জন করে শিক্ষার্থী পড়াশোনা করছে। বাকৃবিতে এম.এস.সিতে ৩টি ডিপার্টমেন্টের আওতায় এই উচ্চশিক্ষার সুযোগ রয়েছে। সেগুলো হল:
- ইরিগেশন অ্যান্ড ওয়াটার ম্যানেজমেন্ট
- ফার্ম পাওয়ার অ্যান্ড মেশিনারি
- ফার্ম স্ট্রাকচার
২. হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (হাবিপ্রবি) ইঞ্জিনিয়ারিং ফ্যাকাল্টির আওতায় ২০০৯ সাল থেকে বি.এস.সি ইন এগ্রিকালচারাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে শিক্ষার্থীরা পড়াশোনা করে আসছে। বতর্মানে প্রতিবছর ৬০ জন ছাত্র-ছাত্রী এই বিষয়ে অধ্যয়ন করছে।
৩. সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (সিকৃবি) ২০১২ সাল থেকে এগ্রিকালচারাল ইঞ্জিনিয়ারিং এ বি.এস.সি কোর্সে প্রতিবছর ৬০ জন করে ভর্তি হচ্ছে।
বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) এ এম.এস.সি করার যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে। এছাড়া শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে এগ্রিকালচারাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের আওতায় গবেষণা কর্ম চলছে এবং ভবিষ্যতে এখানে আরও প্রোগ্রাম চালু হবে।
প্রকৌশলী হিসেবে আপনি
সারাদেশের ইঞ্জিনিয়ারদের নিবন্ধন ও তাদের সব ধরণের কার্যক্রম পরিচালনা করে ইঞ্জিনিয়ার’স ইন্সটিটিউশন, বাংলাদেশ (আই.ই.বি)। এই প্রতিষ্ঠান থেকে অনুমোদন প্রাপ্তরা নিজেকে একজন ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে দাবি করতে পারেন।
আই.ই.বি এর মোট ৭ টি ডিভিশন বা বিভাগ রয়েছে। সেগুলো হল:
- সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং
- মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং
- ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং
- কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং
- এগ্রিকালচারাল ইঞ্জিনিয়ারিং
- কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং
- টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং
এর মধ্যে একটি অন্যতম বিভাগ হলো এগ্রিকালচারাল ইঞ্জিনিয়ারিং যা ১৯৯৪ সাল থেকে আই.ই.বি তে একটি স্বতন্ত্র বিভাগ হিসেবে তার কর্মকান্ড পরিচালনা করে আসছে।
বিদেশে উচ্চশিক্ষা
বিদেশে উচ্চশিক্ষার জন্য এগ্রিকালচারাল ইঞ্জিনিয়াররা অনেক সুযোগ পেয়ে থাকেন। অ্যাপ্লাইড সায়েন্স সম্পর্কিত বিদেশে এমন কোনো বিশ্ববিদ্যালয় নেই এই বিষয়ে পড়ানো হয় না। বতর্মানে প্রচুর শিক্ষাথী বেলজিয়াম, সুইডেন, ইংল্যান্ড, আমেরিকা, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, চায়না, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, মালেয়শিয়া, ইন্ডিয়া ও বিভিন্ন দেশে উচ্চশিক্ষা নিচ্ছে। তাছাড়া একজন ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে বিজ্ঞানের অন্য বিষয়েও প্রচুর পড়াশোনার ও গবেষণার সুযোগ রয়েছে।
বাংলাদেশে কর্মক্ষেত্র
- বাকৃবি, হাবিপ্রবি, সিকৃবি এবং অনান্য কৃষি, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (শিক্ষকতা)
- বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএডিসি)
- বরেন্দ্র বহুমূখী উন্নয়ন কতৃপক্ষ (বিএমএ)
- কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর (ডিএই)
- বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট (বারি)
- বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিরি)
- বাংলাদেশ গম গবেষণা ইনস্টিটিউট
- বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অফ নিউক্লিয়ার এগ্রিকালচার (বিনা)
- বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল
- পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড
- বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড
- বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন একাডেমি (বার্ড)
- বাংলাদেশ ইক্ষু গবেষণা ইনস্টিটিউট
- বাংলাদেশ সুগার এন্ড ফুড ইনডাস্ট্রিস কর্পোরেশন
- রুরাল ডেভেলপমেন্ট একাডেমি (আর.ডি.এ)
- নদী গবেষণা ইনস্টিটিউট
- ওয়াটার রিসোর্সেস প্লানিং অরগানাইজেশন
- পল্লী বিদ্যুত সমিতি
- টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজ
- টেকনিক্যাল এডুকেশন বোর্ড
- পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট
- টেকনিক্যাল এডুকেশন ডিরেক্টরেট
- বিভিন্ন সরকারি ও বে-সরকারি ব্যাংক
- বে-সরকারি প্রতিষ্ঠান (ব্রাক,প্রোশিকা,আর.ডি.আর.এস)
- প্রাইভেট এগ্রো-বিজনেস ইনস্টিটিউট
- এগ্রো-ইনডাস্ট্রিস (এসিআই মটরস, প্রাণ ও অনান্য)
- বিভিন্ন ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কশপ