ভালো সিভি মন্দ সিভি
- ক্যারিয়ার ডেস্ক
চাকরির আবেদনের ক্ষেত্রে ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে সিভি বা কারিকুলাম ভাইটা। এটিকে ‘রিজিউম’ বলেন অনেকে। চাকরি প্রার্থী সম্পর্কে প্রয়োজনীয় তথ্য দিয়ে সাজানো থাকে একেকটি সিভি। চলুন, জেনে নিই ভালো সিভি ও মন্দ সিভির ১০টি করে বৈশিষ্ট্য:
যেভাবে লিখবেন ভালো সিভি
১. সিভির ভঙ্গিমা হোক আত্মবিশ্বাসী ও ভাষা হোক ইতিবাচক।
২. আপনার দায়িত্ববোধ নয়, বরং নিজের অর্জনের একটা নির্যাস রাখুন। যেমন, এ পর্যন্ত কী কী কাজ করেছেন, কোনো পুরস্কার পেয়েছেন কি–না ইত্যাদি উল্লেখ করুন।
৩. যে চাকরির জন্য আবেদন করবেন, সেটির সঙ্গে সম্পৃক্ত কোনো কাজের অভিজ্ঞতা থাকলে তা এড়িয়ে যাবেন না।
৪. যে বিষয়ে আপনার অভিজ্ঞতা ও দক্ষতা বেশি, সে বিষয়গুলোর ওপর জোর দিন; যেন চাকরিদাতা আপনার সম্পর্কে একটা সঠিক অনুমান করে নিতে পারে।
৫. যেসব ক্ষেত্রে আপনার অর্জন আছে, সেগুলোর একটা বস্তুনিষ্ঠ অথচ সংক্ষিপ্ত তথ্য জাহির করুন। তবে খেয়াল রাখবেন, বিষয়গুলো যেন অহেতুক টেনে বড় করা না হয়, বা ঘুরিয়ে পেঁচিয়ে লেখা না হয়।
৬. ভাষা ও কম্পিউটার সংশ্লিষ্ট অন্যান্য দক্ষতারও একটি তালিকা সংযুক্ত করুন।
৭. সিভিটিতে যথাসম্ভব সংক্ষিপ্ত, সম্ভব হলে দুই পৃষ্ঠার মধ্যে সুসম্পন্ন করার চেষ্টা করুন। খেয়াল রাখবেন, বানান ও ব্যাকরণগত কোনো ভুল যেন না থাকে।
৮. অনলাইনে সিভি ড্রপ করার ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট কী–ওয়ার্কগুলো নিশ্চিত করুন।
৯. চাকরির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ও গুরুত্বপূর্ণ তথ্যগুলোকে জায়গা দিন সিভির শুরুতে।
১০. এক্সট্রা কারিকুলাম এক্সিটিভিজ লেখার ক্ষেত্রে সিভিকে বালখিল্য না করে বরং আপনার দক্ষতাকে প্রকাশ করে_ এমন বিষয় উল্লেখ করুন।
যেভাবে লিখলে মন্দ হয়ে যাবে
১. সিভিতে কোনো মিথ্যা বা ভুল তথ্য উপস্থাপন করলে তা হিতে বিপরীত ডেকে আনবে।
২. খুবই স্বল্পমেয়াদি কোনো ট্রেনিং কোর্সের উল্লেখ করলে আপনার দক্ষতা সম্পর্কে নেতিবাচক ধারণা জন্মাবে।
৩. সিভির সঙ্গে আকর্ষণীয় বা রঙচঙা ভঙ্গিমার ছবি সংযোজন করলে প্রশ্নের সম্মুখীন হবে আপনার ব্যক্তিত্ব।
৪. অতিরিক্ত বড় আকারের ও নানারঙের ফন্ট ব্যবহার করলে আপনার রুচিবোধ নিয়ে প্রশ্ন ওঠা অস্বাভাবিক নয়।
৫. অতি গোপনীয় ও সংবেদনশীল তথ্য, যেমন জাতীয় পরিচয়পত্র কিংবা পাসপোর্ট নম্বর সিভিতে উল্লেখ করলে চাকরিদাতা প্রতিষ্ঠানটির দৃষ্টিতে আস্থার সংকটে পড়তে পারেন আপনি।
৬. একই প্রতিষ্ঠানে যদি একাধিক পদে চাকরির জন্য আবেদন করেন, আর সে ক্ষেত্রে প্রত্যেকটি পদের জন্য আলাদা আলাদা ফরমেটের সিভি পাঠান, তাহলে হিতে বিপরীত হওয়ার আশঙ্কা প্রবল। কেননা, কর্তৃপক্ষের দৃষ্টিতে অস্থিরচেতা হিসেবে বিবেচিত হতে পারেন আপনি।
৭. সিভিতে বিভ্রান্তিমূলক কোনো তথ্য দিলে কিংবা একই তথ্য একাধিকভাবে সংযোজন করলে তা চাকরিদাতার কাছে আপনাকে বিরক্তিকর করে তুলতে পারে।
৮. ‘রেফারেন্স’-এর ক্ষেত্রে রাষ্ট্রের সবিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির উল্লেখ করলে সেটি আপনার এক ধরনের প্রভাব খাটানো মানসিকতার প্রকাশ করবে_ যা মোটেও ইতিবাচকভাবে নেবে না কোনো চাকরিদাতা প্রতিষ্ঠান।
৯. প্রত্যেকটি বাক্য একই রকম গৎবাঁধা, যেমন_ আমি, আমার ইত্যাদি শব্দ দিয়ে লিখলে আপনার ভাষা–দক্ষতা প্রশ্নবিদ্ধ হবে।
১০. ‘আপনার একান্ত অনুগত’ ইত্যাদি ধরনের বহুল ব্যবহৃত ক্লিশে টার্মগুলো ব্যবহার করলে আপনার মধ্যে নতুনত্বের অভাব ফুটে উঠবে।