পড়তে পারেন লেদার টেকনোলজি
- ক্যারিয়ার ডেস্ক
নিত্য ব্যবহার্য জিনিসের চাহিদার সঙ্গে দীর্ঘ হচ্ছে বেকারত্বের মিছিল। উচ্চশিক্ষা নেয়া লাখ লাখ শিক্ষার্থী প্রতিবছরে এই মিছিলে যোগ দিচ্ছেন। এই মিছিলের দৈর্ঘ্য কমাতে কিছুটা সচেষ্ট রয়েছেন লেদার টেকনোলজির শিক্ষার্থীরা। বাজারের চাহিদা আর কারিগরি শিক্ষার সমন্বয়ে প্রতিনিয়ত তৈরি হচ্ছে এ খাতের নতুন সম্ভাবনা। তাই অনেকেরই আগ্রহের বিষয় হয়ে উঠছে লেদার টেকনোলজি।
কোথায় পড়বেন : বাংলাদেশে প্রধানত লেদার ইঞ্জিনিয়ারিং সাবজেক্টটা পড়ানো শুরু হয় ১৯৫২ সাল থেকে ইস্ট পাকিস্তান লেদার টেকনোলজি নামক প্রতিষ্ঠানের হাত ধরে। বর্তমানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ইনস্টিটিউট অফ লেদার ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজিতে লেদার টেকনোলজি পড়ানো হয়। এতে ৩টি সাবজেক্ট রয়েছে লেদার ইঞ্জিনিয়ারিং, ফুটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং এবং লেদার প্রোডাক্ট ইঞ্জিনিয়ারিং। এছাড়া খুলনা প্রকৌশল এবং প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুয়েট) ২০১০ সালে ৬০টি সিট নিয়ে লেদার ইঞ্জিনিয়ারিং বিষয় চালু হয়। কুয়েটেও এই তিনটি বিষয় পড়ানো হয়। এ দুটি প্রতিষ্ঠান থেকে প্রতিবছর পাস করে বের হয় মোট (১২০+৬০)=১৮০ জন লেদার ইঞ্জিনিয়ার।
ভর্তির যোগ্যতা : বাংলাদেশ কলেজ অব লেদার ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে চার বছর মেয়াদি বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ানো হয়। এতে ভর্তি হওয়ার জন্য অবশ্যই এসএসসি ও এইচএসসি বিজ্ঞান বিভাগে দুটি মিলে জিপিএ-৭.৫ থাকতে হবে। এছাড়া এইচএসসি অথবা সমমানের পরীক্ষায় অবশ্য জিপিএ-৪ থাকতে হবে। চতুর্থ বিষয় বাদ দিয়ে জিপিএ হিসাব করা হয়। সঙ্গে পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন এবং গণিত থাকতে হবে। ভর্তি পরীক্ষায় লিখিত বিষয় ও নম্বর: রসায়ন ৮০, পদার্থবিদ্যা ৫০, গণিত ৫০, ইংরেজি ২০ নম্বরে।
আসন বিন্যাস : তিনটি কোর্সে আসন রয়েছে ১২০টি। বিএসসি ইন লেদার ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে ৩০টি, বিএসসি ইন ফুটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে ৩০টি ও বিএসসি ইন লেদার প্রোডাক্টস ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে ৩০টি। মোট আসনের ১০ ভাগ মেয়েদের ও ৫ ভাগ আদিবাসীদের জন্য বরাদ্দ দেয়া হয়।
সুযোগ-সুবিধা : শিক্ষার্থীদের জন্য লাইব্রেরি, উন্নতমানের ল্যাব ও গবেষণা, ইন্টারনেট ব্যবহারের জন্য রয়েছে একটি সাইবার সেন্টার। ইনস্টিটিউট অব লেদার ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড টেকনোলজিতে ছাত্র-ছাত্রীর জন্য দু’টি ছাত্রাবাসে মোট ৩০০ জন ও একটি ছাত্রীবাসে ৩০০ জন থাকার ব্যবস্থা আছে। এছাড়াও টিচার্স কোয়ার্টারে ৫২ জন ছাত্রী থাকতে পারে এবং একটি প্রাথমিক চিকিত্সা কেন্দ্র রয়েছে । ভর্তির সময় শিক্ষার্থীকে ১১ হাজার টাকা দিয়ে ভর্তি হতে হবে। এছাড়া প্রতিবছর ক্রেডিট ফি দিতে হয়।
কর্মক্ষেত্রে সুযোগ : বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিটিএ) ও বাংলাদেশ প্রস্তুত চামড়া, চামড়াপণ্য ও পাদুকা রপ্তানিকারক সমিতির তথ্য অনুযায়ী, প্রতিবছর দেশে ২২ কোটি বর্গফুট চামড়া উত্পাদিত হয়। চামড়া সবচেয়ে বেশি রপ্তানি হয় ইতালি, দক্ষিণ কোরিয়া, জাপান, চীন, হংকং ও তাইওয়ানে। চামড়ার তৈরি পণ্য বিক্রয় ও বিপণনে যুক্ত আছেন অনেকে। এসব বিষয়ে দক্ষ ও ইংরেজিতে পারদর্শীদের এখানে অগ্রাধিকার দেয়া হয়। এছাড়া মান নিয়ন্ত্রণ (কিউসি), মার্চেন্ডাইজার, প্ল্যানিং, পার্চেজ, সেলস, মার্কেটিং কর্মকর্তার পদে এখানে লোক নেয়া হয়। এই ক্ষেত্রেও বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব লেদার টেকনোলজি থেকে পাস করা শিক্ষার্থীদের অগ্রাধিকার দেয়া হয়। এছাড়াও বিদেশেও লেদার টেকনোলজিস্টদের চাহিদা রয়েছে। বাটা, এপেক্স, ক্রিসেন্ট ফুটওয়্যার ও লেদার প্রোডাক্টসসহ বিভিন্ন দেশি-বিদেশি প্রতিষ্ঠানে আকর্ষণীয় বেতনে চাকরির সুযোগ রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের চাহিদা অনুযায়ী শেষ বর্ষে থাকতেই ৫০%-৬০% ছাত্রদের চাকরি হয়ে যাচ্ছে।