বিনা খরচে কোডিং শিখতে…
- ক্যারিয়ার ডেস্ক
বর্তমান সময়ে কোডিং জানা একটি দরকারি গুণ যেমন, তেমনি দক্ষ ডেভেলপারেরও চাহিদা প্রচুর। আজকাল প্রায় সব প্রতিষ্ঠানেরই নিজস্ব ওয়েবসাইট আছে কিংবা তৈরি হচ্ছে। দক্ষ ডেভেলপাররা তৈরি করছেন নানাধরনের ওয়েবসাইট, বিভিন্নরকম ওয়েব অ্যাপ্লিকেশন। আবার অন্যদিকে দেখা যায়, এ ক্ষেত্রগুলোতে ভালো ডেভেলপারেরও অভাব আছে। এসব দিক চিন্তা করে কোডিংয়ে আগ্রহী তরুণদেরকে বিনা খরচে কোডিং শেখাতে মুহাম্মদ সুমন মোল্লা সেলিম প্রতিষ্ঠা করেন তার প্রতিষ্ঠান লেট’স লার্ন কোডিং। মূলত আর্থিকভাবে অসচ্ছল, পড়ালেখায় অনিয়মিত বা ঝড়ে পড়া শিক্ষার্থীদেরকে তিনি কোডিং শেখাচ্ছেন। পরবর্তীতে বিভিন্ন ওয়েব ডেভেলপার প্রতিষ্ঠানে তাদেরকে ইন্টার্নশিপে কাজ করার সুযোগ দেওয়া হচ্ছে। বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটিতে ৪ জন পূর্ণকালীন কাজ করছেন এবং ২০ জনস্বেচ্ছাসেবীর একটি দল রয়েছে।
২০০৯ সালে উচ্চমাধ্যমিক পাস করেন সুমন। তখন থেকে ইন্টারনেট ব্যবহার ও কোডিং সম্পর্কে জানা শুরু। একপর্যায়ে অনলাইনেই শিখতে শুরু করেন কোডিং। মাঝে বছর দেড়েক জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে গণিতে পড়েছেন। পরে সেটা ছেড়ে একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে কম্পিউটার সায়েন্সে ভর্তি হন। আর থার্ড ইয়ারে ওঠার পর অন্যদেরকে কোডিং শেখানোর ভাবনা তার মাথায় আসে, সেখান থেকেই লেট’স লার্ন কোডিংয়ের শুরু।
সুমন জানান, লেট’স লার্ন কোডিংয়ের শুরু হয় মূলত কমিউনিটি প্রতিষ্ঠান হিসেবে এবং শুরুতে তাদের লক্ষ্য ছিল বিনামূল্যে সবার জন্য উন্মুক্ত ওয়ার্কশপ আয়োজন করে কোডিং ও প্রোগ্রামিংয়ের প্রচার করা। এ পর্যন্ত প্রায় ৫০-টিরও বেশি ওয়ার্কশপ আয়োজন করেছেন তারা, যার মধ্যে ৩টি Hour of Code ইভেন্ট ছিল। তিনটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গেও তারা সম্মিলিতভাবে কাজ করেছেন। ২০১৪ সালে লেট’স লার্ন কোডিংয়ের প্রথম ইভেন্ট অনুষ্ঠিত হয়। আর মিরপুর ডিওএইচএসে তাদের অফিসে প্রতি সপ্তাহে নিয়মিত কর্মশালা আয়োজন করা হয়।
তাছাড়া স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের মাঝে প্রোগ্রামিং এবং কোডিংয়ের প্রসারের লক্ষ্যে ঢাকার বাইরের বিভিন্ন স্কুলে সেমিনার আয়োজন করেছেন তারা। এ বছরের শুরু থেকে ৩০ জনকে বিনামূল্যে ৭ মাসের ওয়েব ডেভেলপমেন্ট ট্রেনিং দেওয়া হচ্ছে।আর এতে আর্থিক সহায়তা দিচ্ছে বিওয়াইএলসি এবং ইউকেঅ্যাইড।
সুমন বলেন, ‘একেক ওয়েবসাইটের কাজ একেক রকম। আমরা কোনো ওয়েবসাইটে খবর পড়ি, কোনো ওয়েবসাইটে বন্ধুদের সঙ্গে যোগাযোগ করি আবার কোনো ওয়েবসাইটে পরীক্ষার ফলাফল দেখি। এরকম আমাদের নানা দৈনন্দিন কাজের সঙ্গে জড়িয়ে আছে হাজারো ওয়েবসাইট। কোডিং শিখলে যে কেউ নিজেও ওয়েবসাইট তৈরি করতে পারবে। ওয়েব ডেভেলপমেন্টের জন্য প্রাথমিক জ্ঞান বলতে কম্পিউটার আর ইন্টারনেট ব্যবহার জানলেই চলবে।’
ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা হিসেবে তিনি জানান, প্রতি বছর কমপক্ষে ৩০ জন আর্থিকভাবে অসচ্ছল শিক্ষার্থীদের বিনামূল্যে কোডিং ও প্রোগ্রামিংয়ে দক্ষ করে তোলা এবং তাদের জন্য পর্যাপ্ত কাজের সুযোগ সৃষ্টি করে দেওয়ার লক্ষ্যে তারা কাজ করবেন। পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন স্কুল ও কলেজে আইসিটি এবং কোডিংয়ের প্রচার ও প্রসার নিয়েও আমাদের কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে। লেট’স লার্ন কোডিংকে আর্থিকভাবে স্থিতিশীল রাখার জন্য বর্তমানে কোডেও লিমিটেডের অঙ্গ হিসেবে এটি চালাচ্ছেন। সেই প্রতিষ্ঠান থেকে বিভিন্ন ধরনের ওয়েব এবং প্রযুক্তিগত সমস্যার সমাধান নিয়ে কাজ করছেন।
সুমন বলেন, ‘দক্ষ প্রোগ্রামার হতে হলে লেগে থাকতে হবে। পেশা হিসেবে প্রোগ্রামিংকে বেছে নিলে ভালো করার অনেক সুযোগ আছে।’