আবাসন খাতে ক্যারিয়ার

আবাসন খাতে ক্যারিয়ার

  • ক্যারিয়ার ডেস্ক

দেশের সম্ভাবনাময় ক্যারিয়ারের দৌড়ে রিয়েল এস্টেট সেক্টর বেশ দাপট দেখাচ্ছে কয়েক বছর ধরেই। বিশেষ করে রাজধানীসহ দেশের বড় শহরগুলোতে রিয়েল এস্টেট অ্যান্ড কনস্ট্রাকশন ইন্ডাস্ট্রিজ গড়ে উঠেছে প্রতিনিয়ত। আবাসন খাত নিয়েই এদের কাজ। এই রিয়েল এস্টেট কোম্পানিগুলো শহরে আবাসন তৈরির পাশাপাশি ক্যারিয়ার গড়ার সম্ভাবনাও তৈরি করে দিচ্ছে তরুণদের। শুধু দেশেই নয়, আপনি চাইলে বিদেশেও গড়তে পারেন এ খাতে ক্যারিয়ার।

ভূসম্পত্তি বিষয়ে স্নাতক সম্পন্নকারী ব্যক্তি মূলত বিভিন্ন রিয়েল এস্টেট কোম্পানি, হাউজিং, বীমা, সরকারি-বেসরকারি ব্যাংক, কনস্ট্রাকশন কোম্পানি, হাউজিং অ্যান্ড বিল্ডিং রিসার্চ ইনস্টিটিউট ইত্যাদি প্রতিষ্ঠানে কাজ করে থাকেন। এ ছাড়াও ভূমি মন্ত্রণালয়, রাজউকসহ রাজ্যের প্রতিষ্ঠানে ক্যারিয়ার গড়তে পারেন চোখ বন্ধ করে। এ কর্মক্ষেত্রে আসতে পারেন গ্র্যাজুয়েশন ও পোস্ট গ্র্যাজুয়েশন করেও। কিছুদিন চাকরির পর নিজেও মালিক হতে পারেন ফ্ল্যাট ও প্লটের!

কাজের ধরন
অন্ন, বস্ত্র আর বাসস্থান- এই তিনটি মৌলিক চাহিদার কথা কে না জানে! খাবার আর পোশাকের পরই যার গুরুত্ব, সেই খাতে যদি ক্যারিয়ার গড়তে পারেন, তাহলে পেশাটা অবশ্যই আপনার মনে অন্যরকম এক ভালো লাগা জাগিয়ে দেবে।

দেশে বেসরকারি উদ্যোগে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে মানুষের আবাসন চাহিদা মেটাতে বিভিন্ন শ্রেণীগোষ্ঠীর জন্য রাজ্যের পরিকল্পনা নিয়ে রিয়েল এস্টেট ক্ষেত্রের আবির্ভাব। তাও খুব বেশি দিন আগের কথা নয়। ক্রমবর্ধমান চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে সামান্য পরিসরে শুরু হওয়া সম্ভাবনাময় এ ক্ষেত্রটি খুবই দ্রুত প্রসারিত হয়েছে চোখের সামনে; এবং এখনও প্রতিনিয়ত প্রসারিত হচ্ছে।

শুরুতে হাতেগোনা কিছু ডেভেলপার কোম্পানি ঢাকাকেন্দ্রিক এ ক্ষেত্রটি নিয়ন্ত্রণ করলেও বর্তমানে ঢাকা ও এর বাইরের বড় শহরগুলোতে ছড়িয়ে পড়া রিয়েল এস্টেট কোম্পানির সংখ্যা হাজারের কোঠায় গিয়ে ঠেকেছে। এসব কোম্পানিতে সৃষ্টি হচ্ছে অসংখ্য পদ। তবে রিয়েল এস্টেটের ওপর পড়াশোনা করে এলে সহজেই ভালো করা যায় এখানে।

প্রস্তুতিকাল
সময়ের হাত ধরে পরিবর্তনের হাওয়া লাগছে সব কিছুতেই। এই হাওয়া বদলের খেলায় বাণিজ্যিক মাত্রা ছাড়িয়ে ক্রেতার সংস্থাপন সংক্রান্ত বিভিন্ন চাহিদা, দুর্যোগ মোকাবেলায় ভবনের দৃঢ়তা, দীর্ঘস্থায়িত্ব, দর্শনীয় নান্দনিকতাসহ বিভিন্ন দিক দ্রুত প্রসারমান রিয়েল এস্টেট ক্ষেত্রটিতে বিজ্ঞানসম্মতভাবে পূরণ করার ওপর জোর দিয়ে যাচ্ছে। স্বল্প সম্পদ ও পরিমিত আবাসযোগ্য জমির এ দেশের ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার চাপ সামলাতে সফলভাবে পরিকল্পনা মাফিক নগরায়ন ও স্যাটেলাইট সিটি স্থাপন রিয়েল এস্টেট ইন্ডাস্ট্রিগুলোর সামনে এক বড় চ্যালেঞ্জই বটে!

এক্সপেরিমেন্টাল বিজনেস হিসেবে শুরু হওয়া এক সময়ের রিয়েল এস্টেট ইন্ডাস্ট্রিগুলোকে ক্রেতামুখী ও যুগোপযোগী করে তোলার লক্ষ্যে এ ক্ষেত্রটির উদ্যোক্তারা রিয়েল এস্টেট বিষয়ের ওপর প্রাতিষ্ঠানিক তত্ত্বীয় ও ব্যবহারিক পড়াশোনা জানা লোকবলের ব্যাপক প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করছেন। বাংলাদেশের অসংখ্য রিয়েল এস্টেট কোম্পানিতে কাজ করার মতো বিষয়ভিত্তিক পর্যাপ্ত লোকবলের চাহিদা পূরণের মতো কর্মী পাওয়া যাচ্ছে না!

ইউরোপসহ এশিয়ার কয়েকটি দেশ নিজ নিজ দেশের চাহিদা পূরণকল্পে এরই মধ্যে এ ক্ষেত্রটির বিশেষজ্ঞ তৈরির লক্ষ্যে রিয়েল এস্টেট বিষয়টির ওপর উচ্চশিক্ষা কার্যক্রম শুরু করেছে।

অপার সম্ভাবনার কথা মাথায় রেখে বাংলাদেশেও প্রথমবারের মতো ২০০৮ সালে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি [ডিআইইউ] রিয়েল এস্টেট বিষয়টির ওপর উচ্চশিক্ষা কার্যক্রম চালু করেছে। চার বছর মেয়াদি স্নাতক পর্যায়ের এ বিষয়ে ভর্তির ক্ষেত্রে প্রার্থীকে অবশ্যই এসএসসি ও এইচএসসি উভয় পরীক্ষায় নূ্যনতম জিপিএ ২.৫ পেতে হবে। তাছাড়া জিপিএ ২.৫ নিয়ে কমপক্ষে ও-লেভেলে পাঁচটি এবং এ-লেভেলে দুটি বিষয় সম্পন্নকারীরাও ভর্তির আবেদন করতে পারবেন।

বাংলাদেশের বিপুল সম্ভাবনাময় রিয়েল এস্টেট খাতকে প্রাতিষ্ঠানিক তত্ত্বীয় ও ব্যবহারিক জ্ঞানধারী উচ্চমানের স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রিধারী মেধা সরবরাহের গুরুদায়িত্ব কাঁধে নিতে অনেক প্রতিষ্ঠানই এখন এগিয়ে আসছে। তাই আপনি এসব প্রতিষ্ঠান থেকে পড়াশোনা করে এলে শক্ত একটা ভিত তৈরি করতে পারবেন নিঃসন্দেহে।

উপার্জন
এক সময় শুধু রাজধানীতে এই ক্যারিয়ার সীমাবদ্ধ থাকলেও এখন তা ছড়িয়ে পড়েছে সারাদেশে। ঢাকাসহ দেশের নানা বড় শহরে অনেক রিয়েল এস্টেট অ্যান্ড কনস্ট্রাকশন ইন্ডাস্ট্রি গড়ে উঠেছে। তাই অনেকের কাছে রিয়েল এস্টেটে ক্যারিয়ার গঠনের কদর বাড়ছে।

এ মাধ্যমের নানা পেশায় ৩০ থেকে ৩৫ হাজার টাকা দিয়ে ক্যারিয়ার শুরু করে দক্ষতা এবং অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে দুই থেকে তিন বছরের মাথায় পদোন্নতি পেয়ে ৭০ থেকে ৮০ হাজার টাকায় নিয়ে যেতে পারেন আপনার বেতন কাঠামো। বাড়িঘর গড়ে তোলার পেশায় আপনাকে স্বাগত জানাই।

সূত্র: সমকালfavicon59-4

Sharing is caring!

Leave a Comment