টেকসই ক্যারিয়ারের জন্য কর্মদক্ষতা (Employability Skills)!
- কে এম হাসান রিপন
কর্মদক্ষতা (Employability Skills) বর্তমান সময়ে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ন বিষয় হয়ে দাড়িয়েছে। একজন উদ্যোক্তা বা চাকরিদাতা তার চাকরী প্রত্যাশী বা তার প্রতিষ্ঠানে যারা কাজ করছেন, প্রত্যেকের কাছে প্রত্যাশা করে থাকেন। কর্মদক্ষতা (Employability Skills) একজন কর্মীর মধ্যে যদি থাকে তাহলে তিনি তার কর্মক্ষেত্রকে বর্তমান অবস্থা থেকে অনেক দূরে নিয়ে যেতে বা তার সহকর্মীদের সাথে দলগতভাবে কাজ করে নিদির্ষ্ট লক্ষ্যকে বাস্তবায়ন করতে পারেন। আর ঠিক এই কারনেই একজন উদ্যোক্তা বা একজন চাকরীদাতা সব সময়ই প্রত্যেক চাকরী প্রত্যাশীর মাঝে কর্মদক্ষতা (Employability Skills) খুজবার চেষ্টা করে থাকেন।
কর্মদক্ষতা (Employability Skills) কে আবার ট্রান্সফারেবল স্কিলস বা Soft Skills বলা হয়ে থাকে। এর কারন কর্মদক্ষতা (Employability Skills) নির্দিষ্ট কোনো একটি বিশেষ চাকরি ক্ষেত্রের জন্য নয়। এর মানে একজন কর্মদক্ষতা সম্পন্ন ব্যাক্তি যেকোন ক্ষেত্রে বা যেকোন পদবীতে কাজ করার সুযোগ পেলে তিনি তার কর্মদক্ষতাকে সঠিকভাবে ব্যবহার করে তার ব্যাক্তিগত বা তার কর্মক্ষেত্রের লক্ষ্য অর্জনে কাজে লাগাতে পারেন। এর মানে কর্মদক্ষতা সব সময় প্রত্যেক ব্যক্তির মধ্যেই সম্পূর্ন তার নিজস্ব বা ব্যক্তিগত দক্ষতা যা কিনা সে বিভিন্ন সেক্টরে কাজ করার তাগিদে ব্যবহার করতে পারছেন।
উদাহরনস্বরুপ ধরা যাক বিশ্ববিদ্যালয়/পলিটেকনিকের পড়াশুনা শেষ করে রাসেল রেডিমেড গার্মেন্টস সেক্টরে কাজ করতে শুরু করলেন এবং ভালোভাবেই দক্ষতার সাথে তার উপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করবার চেষ্টা করলেন। হঠাৎ রাসেলের ভাবনাতে এলো যে তিনি তার চাকরি ক্ষেত্র পরিবর্তন করে অন্য আরেকটি ক্ষেত্রে কর্মজীবন শুরু করবেন এবং যথারীতি তিনি টেলিকম সেক্টরে যোগ দিলেন। এখন আমরা বিষয়টি যদি পর্যালোচনা করি তাহলে দেখতে পারবো ঐ দুই সেক্টরে দুই ধরনের Functional Skills প্রয়োজন যা একটি আরেকটি থেকে সম্পন্ন ভিন্ন। কিন্তু দুই সেক্টরেই একই ধরনের দক্ষতা সমুহ প্রয়োজন যাকেই আমরা বলছি কর্মদক্ষতা (Employability Skills)।
প্রশ্ন আসতেই পারে এই কর্মদক্ষতা (Employability Skills) কেন প্রয়োজন?
প্রথমত: আমাদের সকলেরই একটি বিষয়ের প্রতি দৃষ্টি প্রয়োগ করতে হবে আর সেটা হলো প্রত্যেক কর্মক্ষেত্রেই দুটি বিষয়ের প্রতি আমাদের কঠোর মনোযোগ রাখতে হয় আর তা হলো সহকর্মিদের কোন বিষয় ভালোভাবে বুঝিয়ে দেওয়া বা সহকর্মিদের কাছ থেকে কোন বিষয় ভালো করে বুঝে নেয়া। যদি কোন ব্যক্তি ঠিক ভাবে কোন কাজ বুঝে না নেয় তাহলে সে ঠিক ভাবে কাজটি সম্পাদন করতে পারবেন না। আবার অন্যদিকে যদি সে কাজটি যদি সঠিকভাবে বুঝিয়ে দিতে ব্যর্থ হয় তাহলে তার সহকর্মীরা ঠিক ভাবে কাজটি সম্পন্ন করতে পারবে না। আর এই বুঝিয়ে দেয়া বা বুঝে নেয়া ঠিক তখনই সম্ভব যখন কোন ব্যক্তির মধ্যে কর্মদক্ষতা (Employability Skills) থাকবে। একজন ব্যক্তি যে প্রতিষ্ঠানে কাজ করছেন সে প্রতিষ্ঠানে তার কর্মদক্ষতার (Employability Skills) দ্বারা তার নিজস্ব কাজকর্ম গুলো সে নিজেই খুব সহজে বুঝে নিতে পারে বা তা নিজের দলের সাথে একত্রে মিলে কাজ করতে পারে। আবার সে নিজেই একটি কাজ তার সহকর্মীকে সাথে নিয়ে অনায়াসে সম্পাদন করতে পারে।
দ্বিতীয়ত: একজন ব্যক্তির কর্মদক্ষতা (Employability Skills) থাকলে তিনি যেকোন সমস্যা চিহ্নিত করতে সক্ষম হবেন বা যেকোন সমস্যা আসার পূর্বেই সেই বিষয়ে বিশ্লেষন করে তা উপর একটি প্রতিবেদন করতে পারবে বা সমস্যা চিহ্নিত করে তার সমাধানের ব্যবস্থা করতে পারবেন। একজন কর্মদক্ষহীন মানুষই শুধুমাত্র সমস্যাকে দেখতে পান কিন্তু তার সমাধানের রাস্তা তিনি দেখতে অক্ষম থাকেন।
তৃতীয়ত: একজন ব্যক্তির কর্মদক্ষতা (Employability Skills) থাকলে সে তার নিজস্ব দক্ষতাগুলোকে প্রয়োজন অনুযায়ী সাজাতে পারেন। আবার যে দক্ষতাগুলো খুবই গুরুত্বপূর্ন বা প্রয়োজনীয় কিন্তু নিজের ভেতর সেগুলোর অনুপস্থিতি নিজেই চিহ্নিত করতে পারবে এবং সেই ঘাটটিগুলো পূরুন করতে সে তার নিজস্ব দক্ষতা উন্নয়ন করতে পারবে। আর এই সব কিছু করা সম্ভব যখন কোনো ব্যক্তির কর্মদক্ষতা বা এমপ্লোয়াবিলিটি স্কিলটি থাকবে।
এখন অনেকেই প্রশ্ন করেন যে কর্মদক্ষতা (Employability Skills) অর্জনের নিদৃষ্ট কোন সময় আছে কিনা? আমার মতে কর্মদক্ষতা (Employability Skills) অর্জনের নিদৃষ্ট কোন সময় নেই। শুধুমাত্র প্রয়োজন সচেতনতা এবং শেখার মনোভাব থাকাটা সবচেয়ে বেশী জরুরী। তারচেয়ে বেশী প্রয়োজন অনুশীলন। আমাদের ভুল হবেই কিন্তু আমরা যদি আমাদের ভুলগুলোকে শুধরে নিয়ে যদি সঠিকভাবে আমাদের কর্মকান্ড পরিচালনা করতে পারি তাহলে আমাদের যেকোন পরিকল্পনা অর্জনে সহজ হবে। তবে কর্মদক্ষতা (Employability Skills) অর্জনের সব থেকে সঠিক সময় আমাদের ছাত্রজীবন।
কারণ ছাত্রজীবনে আমরা অন্য একধরনের স্বাধীনতা ভোগ করি যেটা আমরা অনেকেই ধরতে অক্ষম থাকি। এই সময়ে আমরা যা ইচ্ছা তাই করতে পারি, যার সাথে ইচ্ছা তার সাথেই কাজ করতে পারি, যার সাহায্য প্রয়োজন তার কাছেই পেতে পারি। তাই আমি মনে করি কর্মদক্ষতা (Employability Skills) অর্জন এবং তীক্ষ্ণ করার সঠিক সময় ছাত্রজীবন। একটা বিষয় মনে রাখতে হবে যে, যত দ্রুত এই কর্মদক্ষতা (Employability Skills) নিশ্চিত করা যাবে ঠিক তত দ্রুত ক্যারিয়ারের অগ্রগতি বা উন্নয়ন করা সম্ভব হবে।
কর্মদক্ষতা (Employability Skills) নিয়ে লিখতে গেলেই আমাদের ব্যক্তিগত গুণাবলীর কথা চলে আসে। আসলে কর্মদক্ষতার (Employability Skills) উপরই নির্ভর করে আমাদের ব্যক্তিগত গুণাবলী অথবা বলা যায় ব্যক্তিগত গুণাবলীর সমন্বয়ে গঠিত আমাদের কর্মদক্ষতা। আমাদের ব্যক্তিগত গুণাবলী তিনটি স্তম্ভের দাড়িয়ে থাকে।
প্রথম স্তম্ভঃ ইতিবাচক ব্যক্তিগত গুণাবলী (Positive Personal Attributes)
আমাদের ব্যক্তিগত গুণাবলীর প্রথম স্তম্ভ। এই স্তম্ভের গুণাবলীগুলো সম্পূর্ন আমাদের ব্যক্তিগত। যেকোন অর্পিত কাজ দায়িত্ব নিয়ে সম্পন্ন করা, ব্যক্তিগত নিয়মানুবর্তিতা অক্ষুন্ন রাখা, যা বলছি তা নিজের ক্ষেত্রে অনুশীলন করা, যেকোন পরিবর্তনে হ্যা-সূচক মনোভাব বজায় রাখা, সময়ের প্রতি যত্নবান থাকা এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ন আত্মসম্মানবোধ নিয়ে জীবন পরিচালন করা।
দ্বিতীয় স্তম্ভঃ সু-সম্পর্ক (Good Human Relation)
শুধু কর্মক্ষেত্রেই নয় আমাদের চারপাশে সকলের সাথে সুসম্পর্ক বজায় রেখে জীবন পরিচলনা করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ন। খুব সহজেই আমরা যেকোন সম্পর্ক মুহুর্তেই নষ্ট করে দিতে পারি যেটি তৈরিতে হয়তো আমাদের অনেক সময় এবং পরিশ্রম করতে হয়েছে। কিন্তু আমাদের খুবই সামান্য ব্যক্তি স্বার্থকে প্রাধান্য দিতে গিয়ে হয়তো আমার অতি কাছের বন্ধুটির সাথে নিজের অজান্তেই সম্পর্ক নষ্ট করে ফেললাম। আর কর্মক্ষেত্রে সুসম্পর্ক অত্যন্ত প্রয়োজন। খুব সহজেই আমরা আমাদের যেকোন সম্পর্ককে মজবুদ রাখতে পারি। নিন্মের কাজগুলো সম্পর্ক দৃঢ় করতে সহায়তা করবেঃ
· যেকোন পরিস্থিতিতে দুঃখিত বা ধন্যবাদ অত্যন্ত কার্যকর
· দক্ষতা শেয়ারিং
· ‘‘তুমিও জিতবে এবং আমিও জিতবো” এই মনোভাব নিয়ে কাজ করা
· উত্তর দেবার আগে ভালোভাবে শুনে নেয়া
· যে কারো ভালো কাজে প্রশংসা করা
· নিজের ভুল স্বীকার করা
· অন্যের গোপনীয়তা বজায় রাখা
· সবসময় সবক্ষেত্রে ইতিবাচক থাকার চেষ্টা করা
তৃতীয় স্তম্ভঃ উচ্চতর কর্মক্ষমতা অর্জন (Superior Work Performance)
ব্যক্তিগত গুণাবলীর তৃতীয় এবং শেষ স্তম্ভটি কর্মক্ষেত্রের সাথে জরিত। কর্মক্ষেত্রে আপনার কর্মক্ষমতা নির্ধারিত হয় আপনি কিভাবে কর্মসম্পাদন করছেন। এ ক্ষেত্রে কয়েকটি বিষয় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ন যেমনঃ
ত্রুটি বিহীন কাজ করছেন কিনা
সময়সীমার মধ্যে আপনি কাজ সম্পন্ন করতে পারছেন কিনা
কর্মক্ষেত্রে আপনার উপর যে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে তা সঠিকভাবে বুঝে নিয়েছেন কিনা
আপনার কাজের ধরনে পরিবর্তন আনার চেষ্টা করছেন কিনা
কাজের অগ্রধিকার নির্ধারন করতে পারছেন কিনা
আপনি কি দলগতভাবে কাজ করতে পারছেন কিনা
আপনি সৃজনশীলতা বা উদ্ভাবনকে কতটুকু গুরুত্ব দেন
আপনি কি সমস্যা শুধুই দেখছেন নাকি সমাধানও করতে পারছেন
আপনি কি সঠিক সময়ে স্বীদ্ধান্ত নিতে পারছেন কিনা
অন্যের স্বীদ্ধান্তকে সম্মান করছেন কিনা
এই ৩টি স্তম্ভ যখন একজন পেশাজীবি নিশ্চিত করবেন তখন তার সাথে সাথে কর্মদক্ষতাও (Employability Skills) সুনিশ্চিত হবে।
এবার কর্মদক্ষতা (Employability Skills) কে নিয়ে যদি একটু গভীরে যাই তাহলে আমরা দেখতে পাই বিশেষজ্ঞরা বিভিন্ন দক্ষতার সন্নিবেশ ঘটিয়ে কর্মদক্ষতাকে সংগায়িত করার চেষ্টা করেছেন। তারমধ্যে উল্লেখযোগ্য কিছু বিষয় তুলে ধরা হল।
ফান্ডামেন্টাল স্কিলসঃ একজন ব্যক্তি তার প্রতিষ্ঠানে কতটুকু যোগ্যতাসম্পন্ন। সেক্ষেত্রে তিনি তার অফিসের নিয়ম কানুন কতটুকু মেনে চলেন, সে কতটুকু তথ্য সন্ধানকারী, তার যে নিয়মিত কাজগুলো থাকে সেগুলো তা কতটুকু যত্ন সহকারে করছেন বা কত দ্রুত করছেন ও কাজের নির্দিষ্ট ডেডলাইন মেনে চলছেন কিনা ইত্যাদি সবকিছু ফান্ডামেন্টাল স্কিলস এর অন্তর্গত। অর্থাৎ যদি কর্মদক্ষতা (Employability Skills) অর্জন করতেই হয় তাহলে অবশ্যই ফান্ডামেন্টাল স্কিলস থাকতেই হবে।
ইন্টারপার্সোনাল স্কিলসঃ এটি মূলত এমন একটি দক্ষতা যা খুবই গুরুত্বপূর্ন। ইন্টারপার্সোনাল স্কিলস বলতে একটি প্রতিষ্ঠানে একজন কর্মী বা চাকরীজীবি তার প্রতিষ্ঠানের সহকর্মী বা আশেপাশে যারা আছেন তাদের সাথে তার ব্যবহার, আচার আচরণ কেমন। অর্থাৎ সে তার সহকর্মীদের সহায়তা করে, সে কি তার কর্মীদের সমস্যা নিজে অনূভব করে। আর এই সবগুলো হল ইন্টারপার্সোনাল স্কিলস।
কমিউনিকেশন স্কিলঃ কমিউনিকেশ্ন স্কিলস ব্যক্তিজীবন বা কর্মজীবন দুটি ক্ষেত্রেই বিশেষভাবে ভূমিকা পালন করে। কারন আমরা আমাদের জীবনে যেকোন কিছু যোগাযোগের মাধ্যমেই সম্পন্ন করি। লেখা থেকে শুরু করে কথা বলা, উপস্থাপন করা, অঙ্গভঙ্গি সবকিছু মিলেই কমিউনিকেশন স্কিলস। একজন চাকরিদাতা চাকরি প্রত্যাশীর কাছে শুধুমাত্র দেখতে চান যে তিনি পড়ে বোঝেন কিনা, বলে বোঝাতে পারেন কিনা এবং তিনি সঠিকভাবে লিখতে পারেন কিনা। এখন কেউ যদি ঠিকভাবে লিখে বা কথা বলে অথবা অঙ্গভঙ্গি কিংবা ইশারা দ্বারা কিছু উপস্থাপন বা বোঝাতে না পারেন তাহলে সেক্ষেত্রে কোনভাবেই তার পক্ষে কর্মক্ষেত্রে সাফল্য অর্জন করা সম্ভব হবেনা। আর তাই কমিউনিকেশন স্কিলস খুবই গুরুত্বপূর্ন।
সমস্যা দূরীকরনঃ আমাদের সমাজে যেকোনো স্থানেই সমস্যা বিদ্যমান। এখন এই ক্ষেত্রে ২টি বিষয় আসে। আমরা কি সেই সমস্যাগুলো নির্ধারন করতে পারছি বা সেটা নির্ধারনের পর আমরা কি বসে থাকছি না সেটা নিরসনের উপায় খুজছি। যদি উপায় খুজে বের করতে সক্ষম হই তাহলে সেটা ব্যবহার করে সমাধান করতে পারছি কিনা। এই বিষয়টি খুবই গুরুত্বপূর্ন। আর প্রত্যেক চাকুরীদাতা তার চাকুরী প্রার্থীর কাছ থেকে এই দক্ষতাটি অনেক বেশি আশা করে থাকে।
টিম ওয়ার্কঃ টিম ওয়ার্ক জিনিসটি কর্মক্ষেত্রে খুবই গুরুত্বপুর্ন ভূমিকা পালন করে। কারন কর্মক্ষেত্রে টিম ওয়ার্ক অনেক বেশি প্রাকটিস করা হয়। একার পক্ষে কোনো কাজ শেষ করা সম্ভব নয়। তাই প্রতিষ্ঠানে অনেকে মিলে একসাথে গ্রুপে বা দলে কাজ করতে হয়। এক্ষেত্রে একটি বড় কাজ দলের সকল সদস্যদের মধ্যে ভাগ করে দিয়ে কাজের পরিধি ছোট করা হয়। যাতে অতি সহজেই কাজ শেষ করা যায়। এখন সেক্ষেত্রে যদি কোন ব্যক্তির টিম ওয়ার্ক স্কিলস না থাকে তাহলে সে কাজ করতে পারবেনা। অর্থাৎ তখন প্রতিষ্ঠানের কাজ পরে থাকবে। তাই টিম ওয়ার্ক স্কিলস খুবই গুরুত্বপূর্ন।
এথিকাল স্কিল বা নীতিঃ একটা বিষয় প্রায়ই দেখা যায় অনেক প্রতিষ্ঠানে কিছু কিছু মানুষ থাকে যারা সামান্য স্বার্থ সিদ্ধির জন্য অন্যের কোন মতামত বা নতুন কোনো বিজনেস প্রোপোজাল বা আইডিয়া তার বসের কাছে নিজের বলে চালিয়ে দেয়। কিন্তু এই বিষয়টি এথিকাল বা নীতির বাইরে পরে। আর তাই এথিকাল স্কিল অনেক প্রয়োজনীয় একজন ব্যক্তির জন্যে।
ক্যারিয়ার ডেভেলপমেন্ট স্কিলসঃ ক্যারিয়ার ডেভেলপমেন্ট স্কিলস একজন ব্যক্তির জ্ন্যে অনেক গুরুত্বপুর্ণ। ধরা যাক কোনো ব্যক্তি নতুন কোনো প্রতিষ্ঠানে যোগদান করেছে। সে ক্ষেত্রে তাকে তার প্রতিষ্ঠানের কাজের স্বার্থে যে ফাংশনাল দক্ষতাগুলো প্রয়োজন তা অর্জন করতে হবে। সেটা যদি নতুন কোন কর্মদক্ষতা হয় সেটাও। এখন ব্যাপার হল সেই ব্যক্তি কি সেই দক্ষতাগুলো খুজে বের করতে পারছেন বা অন্যের কাছ থেকে সেই দক্ষতাগুলো শিখে নিতে পারছেন এবং সে কি সবসময় শেখার মানসিকতা নিয়ে আছেন কিনা।
লিডারশীপ স্কিলঃ লিডারশীপ স্কিলস একটি প্রতিষ্ঠানের জন্যে অনেক বেশী প্রয়োজনীয়। একজন কর্মীর মাঝে লিডারশীপ স্কিলস থাকাটা অনেক গুরুত্বকপূর্ণ। এক্ষেত্রে সে কর্মী তার প্রতিষ্ঠানের সহকর্মীদের কোচও হতে পারেন বা সে তার দক্ষতাগুলো অন্যদের সাথে শেয়ার করতে পারেন, কোনো বিষয়ে আলোচনা বা মোটিভেট করতে পারছে কিনা এ সবকিছুই হচ্ছে লিডারশীপ স্কিলস।
ইনিশিয়েটিভ স্কিল বা উদ্যোগ গ্রহন করার ক্ষমতাঃ আজকাল উদ্যোগ গ্রহন ক্ষমতা খুবই প্রয়োজনীয় একটি দক্ষতা। প্রায়ই অনেক প্রতিষ্ঠানে দেখা যায় কিছু লোক নিজে কাজের উদ্যোগ নেয় আবার অনেকে আছে উর্ধতন কর্মকর্তার আদেশের জন্যে বসে থাকে। এই জিনিষটা অনেক উর্ধতন কর্মকর্তাকে বিরক্ত করে তোলে। তারা আশা করেন তাদের অধীনে যারা কাজ করছেন তারা প্রত্যেকেই যেন নিজে কোনো বিষয়ে উদ্যোগ গ্রহন করতে পারে। আর তাই উদ্যোগ গ্রহন করার ক্ষমতা থাকাটা প্রত্যেকের জন্যে আবশ্যক।
ট্যেকনলজিকাল স্কিলঃ বর্তমান সময়ে তথ্য প্রযুক্তির জ্ঞান থাকাটা অত্যন্ত জরুরী। সমাজের যেকোনো ক্ষেত্রে এর ব্যবহার দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। আর তাই সভ্যতার সাথে সাথে আমাদের উচিত এই তথ্যপ্রযুক্তির সঠিক ব্যবহার জানা এবং করা। বিশেষ করে মাইক্রোসফ্ট এক্সেল, ওয়ার্ড এবং পাওয়ার পয়েন্টের ব্যবহার গুগলের বিভিন্ন ফ্রি টুলসের সঠিক ব্যবহার এবং যথাযথভা্বে যেকোন তথ্যের সন্ধান গুগল সার্চ ইঞ্জিনের মাধ্যমে সহজে বের করা
পরিশেষে বলতে হয় কর্মদক্ষতা (Employability Skills) অর্জনের বিষয় যা কাজের মাধ্যমে প্রকটিত হয়। বই পড়ে জ্ঞান বৃদ্বি সম্ভব কিন্তু কাজ না করে দক্ষতা অর্জন কোনভাবেই সম্ভব নয়। আর তাই কর্মদক্ষতা (Employability Skills) অর্জনের সঠিক সময় বেছে নেওয়া উচিত ছাত্রবস্থায়। আর আমাদের সবসময় মনে রাখতে হবে ‘অনুশীলনেই সফলতা’।
ভিডিও: https://www.youtube.com/watch?v=9xYByg4EqKg
কে এম হাসান রিপন
নির্বাহী পরিচালক, বাংলাদেশ স্কিল ডেভলপমেন্ট ইনস্টিটিউট (বিএসডিআই)