“ক্যারিয়ার ইন জাপান এক্সপো”
- ক্যারিয়ার ডেস্ক
জাপানের শ্রমবাজারে বাংলাদেশিদের রিক্রুটিং প্রক্রিয়া সহজতর ও উম্মুক্ত করছে জাপান সরকার। আর এ সুযোগকে কাজে লাগাতে এবং জাপানে প্রচুর পরিমাণে বাংলাদেশীদের কর্মসংস্থান নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ড্যাফোডিল পরিবারের সহযোগী প্রতিষ্ঠান গ্লোবাল রিক্রুটিং এজেন্সির উদ্যোগে আজ ৫ অক্টোবর (শনিবার) দেশে প্রথমবারের মতো অনুষ্ঠিত হয়েছে “ক্যারিয়ার ইন জাপান এক্সপো”। ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ক্যারিয়ার ডেভেলাপমেন্ট সেন্টার (সিডিসি), স্কিল জবস্, ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল প্রফেশনাল ট্রেনিং ইন্সটিটিউট (দীপ্তি) ও ড্যাফোডিল জাপান আইটি লিমিটেড এর সহযোগিতায় ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ৭১ মিলনায়তনে দিনব্যাপী এ এক্সপো’র আয়োজন করা হয়।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব আহমেদ মুনিরুস সালেহীন এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অভিবাসন, জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর পরিচালক মো. মজিবুর রহমান। ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান ড. মো. সবুর খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন ড্যাফোডিল পরিবারের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ নুরুজ্জামান, ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল প্রফেশনাল ট্রেনিং ইন্সটিটিউটের (দীপ্তি) নির্বাহী পরিচালক রথীন্দ্র নাথ দাস প্রমুখ।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে ‘ক্যারিয়ার ইন জাপন : ফ্যাক্টস অ্যান্ড অপরচুনিটিস’ শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব কাজী আবেদ হোসেন। দিনব্যাপী এ ক্যারিয়ার এক্সপোতে দ্বিতীয় পর্বে “ম্যানার, লাইফস্টাইল এন্ড কালচার ইন জাপান” শীর্ষক আরো একটি সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। এ সেমিনারে মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব জনাব জাহাঙ্গীর আলম। জাপানে কর্মস্থানের নানা বিষয় নিয়ে কথা বলেন জাইকা বিশেষজ্ঞ ইউকি মরিশিতা, জাপান দূতাবাসের অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞ আহবাদুল ইউসুফ খান, ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ইলেক্ট্রক্যাল এন্ড ইলেক্ট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক এ কে এম আলমগীর, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব মো. জাহাঙ্গীর আলম, জাপানীজ ইউনিভার্সিটিজ এলামনাই এসোসিয়েশন ইন বাংলাদেশ এর সাধারণ স্পাদক প্রফেসর মোহাম্মদ আবদুল্লাহ খান।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে আহমেদ মুনিরুস সালেহীন বলেন, এক কোটিরও বেশি মানুষ বিদেশে কাজ করছেন। তারা প্রতিবছর প্রায় ১৬ বিলিয়ন ডলার বৈদেশিক মুদ্রা দেশে পাঠাচ্ছেন। তাদের এই অবদান বাংলাদেশের অর্থনীতিকে চাঙ্গা রেখেছে। কিন্তু এত বিপুল সংখ্যাক বাংলাদেশি বিদেশে থাকা সত্তে¡ও বিদেশের মাটিতে আমাদের তেমন ব্র্যান্ড ইমেজ তৈরি হয়নি। কারণ বাংলাদেশের অনেকেই বিদেশে গিয়ে নানা অপরাধে জড়িয়ে পড়ছেন। তাদের আচরণগতও নানা সমস্যা রয়েছে। তাই বিদেশে শুধু মানুষ পাঠালেই চলবে না, তাদেরকে দক্ষ করে পাঠাতে হবে বলে মন্তব্য করেন তিনি। এ ব্যাপারে সরকার কাজ করছে উল্লেখ করে আহমেদ মুনিরুস সালেহীন বলেন, সরকারের পাশাপাশি রিক্রুটিং এজেন্সিরও দায়িত্ব রয়েছে বিদেশগামীদের দক্ষ ও প্রশিক্ষিত করে বিদেশে পাঠানো। গ্লোবাল রিক্রুটিং এজেন্সি এ ব্যাপারে অগ্রগামী ভূমিকা পালন করছে বলে প্রতিষ্ঠানটিকে ধন্যবাদ জানান তিনি।
সভাপতির বক্তব্যে ড. মো. সবুর খান বলেন, বিদেশের কর্মবাজারে দক্ষ ও প্রশিক্ষিত লোক পাঠানোর জন্য পাবলিক ও প্রাইভেট প্রতিষ্ঠানের একসঙ্গে কাজ করার কোনো বিকল্প নেই। দেরিতে হলেও সরকার এ ব্যাপারে আন্তরিক হয়েছে। সরকারের এ উদ্যোগকে ‘শুভ লক্ষণ’ বলে অভিহিত করেন ড. মো. সবুর খান। এসময় তিনি ইংরেজির পাশাপাশি যেকোনো একটি বিদেশি ভাষাকে দেশের সকল বিশ্ববিদ্যালয় ও কারিগরি প্রতিষ্ঠানগুলোর শিক্ষার্থীদের জন্য বাধ্যতামূলক কোর্স হিসেবে অন্তর্ভূক্ত করার জন্য ইউজিসি ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে চিঠি দিতে অনুরোধ করেন।
বিদেশগামী তরুণদের উদ্দেশে ড. মো. সবুর খান বলেন, বিদেশে কাজ করতে যাওয়ার ব্যাপারে তাড়াহুড়া না করে এবং যেনতেনভাবে বিদেশ যাওয়ার মানসিকতা পরিহার করে, যে দেশে যেতে ইচ্ছুক সেই দেশের ভাষা, সংস্কৃতি ও প্রয়োজনীয় দক্ষতা প্রশিক্ষণ নিয়ে নিজেকে উপযুক্ত হিসেবে গড়ে তোলার পর বিদেশ যাওয়ার আহ্বান জানান।