ক্যারিয়ার গড়ি ই-কমার্সে

ক্যারিয়ার গড়ি ই-কমার্সে

  • ক্যারিয়ার ডেস্ক

বর্তমানে দেশের মানুষ অনেক সৌখিন। তারা আর আগের মতো পরিশ্রম করতে চায় না। হাতের নাগালেই চাহিবামাত্র সবকিছুই পেতে চায়। ধরুন কেনাকাটা করা। এই জিনিসটা অনেক ঝক্কি-ঝামেলার কাজ। উৎসব উদযাপনের সময় ভিড় আর গরম সহ্য করে কেনাকাটা করা মহা বিরক্তিকর একটা ব্যাপার। দিন দিন মানুষ যত বেশি আরামপ্রিয় হয়ে উঠছে ততই তাদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থায় সব হাতের নাগালেই চলে আসার ব্যবস্থা হচ্ছে। ফলে ঘরে বসেই অনলাইনে পছন্দ করে অনলাইন থেকেই কেনাকাটা দিন দিন খুবই জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। ই-কমার্সে তাই ক্যারিয়ার গড়ে তুলছে অনেক তরুণ। হয়ে উঠছে সফল উদ্যোক্তা।

ই-কমার্স বলতে কি বোঝায়?

ইলেকট্রনিক কমার্স বা ই-কমার্স বা ই-বাণিজ্য একটি বাণিজ্য ক্ষেত্র যেখানে কোনো ইলেকট্রনিক সিস্টেম (ইন্টারনেট বা অন্য কোনো কম্পিউটার নেটওয়ার্ক)-এর মাধ্যমে পণ্য বা সেবা ক্রয় বা বিক্রয় হয়ে থাকে। আধুনিক ইলেকট্রনিক কমার্স সাধারণত ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েবের মাধ্যমে বাণিজ্য কাজ পরিচালনা করে। এ ছাড়াও মোবাইল কমার্স, ইলেকট্রনিক ফান্ড ট্রান্সফার ও অন্য আরো কিছু মাধ্যম ব্যবহৃত হয়। উইকিপিডিয়াতে এমনটাই উল্লেখ করা হয়েছে।

ই-কমার্সের রকমফের

ই-কমার্সের অনেকগুলো প্রকার রয়েছে। যেমন-

ব্যবসা থেকে ব্যবসা : ব্যবসা থেকে ব্যবসা ইলেকট্রনিক কমার্স সম্পাদিত হয় একাধিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে। ৮০ শতাংশের মতো ইলেকট্রনিক কমার্স ব্যবসা থেকে ব্যবসা প্রকারের অন্তর্ভুক্ত।

ব্যবসা থেকে গ্রাহক : ব্যবসা থেকে গ্রাহক ইলেকট্রনিক কমার্স সম্পাদিত হয় ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও গ্রাহকের মধ্যে। এ ধরনের দ্বিতীয় সর্বাপেক্ষা বেশি ইলেকট্রনিক বাণিজ্য সম্পাদন হয়ে থাকে।

ব্যবসা থেকে সরকার : ব্যবসা থেকে সরকার ইলেকট্রনিক কমার্স সম্পাদিত হয় ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও রাষ্ট্রীয় খাতের মধ্যে। এটি সাধারণত ব্যবহৃত হয়ে থাকে রাষ্ট্রীয় কেনা-বেচা, লাইসেন্স সংক্রান্ত কার্যাবলি, কর প্রদান ইত্যাদি ক্ষেত্রে।

গ্রাহক থেকে গ্রাহক : গ্রাহক থেকে গ্রাহক ইলেকট্রনিক কমার্স সম্পাদিত হয় একাধিক ব্যক্তি ও গ্রাহকের মধ্যে। ইলেকট্রনিক বাজার ও অনলাইন নিলামের মাধ্যমে সাধারণত এ ধরনের বাণিজ্য সম্পাদিত হয়।

মোবাইল কমার্স : মোবাইল কমার্স ইলেকট্রনিক কমার্স সম্পাদিত হয় তারবিহীন প্রযুক্তি যেমন- মোবাইল হ্যান্ডসেট বা পারসোনাল ডিজিটাল অ্যাসিস্ট্যান্ট (চউঅ)-এর মাধ্যমে। তারবিহীন যন্ত্রের মাধ্যমে তথ্য আদান-প্রদানের গতি ও নিরাপত্তা বৃদ্ধির সাথে সাথে এ ধরনের বাণিজ্য জনপ্রিয়তা লাভ করছে।

গ্রাহক থেকে সরকার : কখনো সরসরি জনগণের কাছ থেকে সরকার বিভিন্ন সেবার বিনিময় ফি বা কর নিয়ে থাকে। যখন এর মধ্যে কোনো মাধ্যমে থাকে না তখন এটা গ্রাহক থেকে সরকার প্রক্রিয়া বলে বিবেচিত হয়। ডিজিটাল সরকারের আওতায় এ ধরনের সেবা ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে।

ই-কমার্সের ক্ষেত্রসমূহ

ই-কমার্সের যেসব ক্ষেত্র রয়েছে তা হলো- ক. পণ্য ও সেবা কেনা/বেচা। খ. মূল্য পরিশোধ। গ. পণ্য নিলাম। ঘ. বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের পণ্য ও সেবার মূল্যের তুলনামূলক বিশ্লেষণ। ঙ. টিকিট ক্রয়। চ. পণ্য ও সেবা অর্ডার ও বুকিং দেয়া। ছ. অনলাইন বিজ্ঞাপন বাণিজ্য ইত্যাদি।

ই-কমার্স করার মাধ্যম

ই-কমার্স করার জন্য যেসব বিষয় দরকার হয় তা হলো, বিক্রেতার জন্য ই-কমার্স উপযোগী ওয়েবসাইট। দ্রুত ও কার্যকরভাবে অর্ডার প্রক্রিয়া করার জন্য ইন্টারনেট ও সার্ভার। মধ্যবর্তী মাধ্যম হলো, ইলেকট্রনিক ফান্ড ট্রান্সফার, ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে মূল্য প্রদানের ও সমধর্মী সেবা প্রদানকারী ব্যাংক প্রতিষ্ঠান। দেশীয় ও আন্তর্জাতিক পণ্য পরিবহনকারী প্রতিষ্ঠান। পণ্য ও মুদ্রা স্থানান্তর ও পরিবহনে নিরাপত্তা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান। আর গ্রাহকের জন্য হলো, ইন্টারনেট সুবিধা। মূল্য পরিশোধের জন্য ক্রেডিট কার্ড বা সমধর্মী মাধ্যম। সরকারিভাবে দরকার হলো, ই-কমার্সের নিরাপত্তা ও মান নিশ্চিত করার জন্য জাতীয় আইন ও নীতিমালা।

ই-কমার্স বর্তমানে কেমন প্রভাব ফেলছে?

অর্থনীতিবিদদের মতে, যেহেতু ইলেকট্রনিক কমার্স গ্রাহকদের বিভিন্ন পণ্য সহজে খুঁজে পাওয়া এবং তুলনামূলক বিশ্লেষণের একটি ক্ষেত্র তৈরি করে দিয়েছে, তাই এটি প্রতিযোগিতামূলক বাজার তৈরিতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করছে।favicon59

Sharing is caring!

Leave a Comment