ক্রিকেট যখন ক্যারিয়ার

ক্রিকেট যখন ক্যারিয়ার

  • ক্যারিয়ার ডেস্ক

শুধু খেলা কিংবা বিনোদন নয়, সময়ের ব্যবধানে শখের খেলা ক্রিকেট এখন ধারণ করছে পেশাদারি রূপ। আর এর পেছনে কারণ হিসেবে দেখা হচ্ছে বিপুল পরিমাণ অর্থ ও খ্যাতিকে।

মানুষের পেশা বাছাইয়ে রয়েছে ভিন্নতা। ঠিক তেমনি খেলতে খেলতে খেলাকেই করে নেয়া যায় পেশা। যেমনটি নিয়েছেন আমাদের টাইগাররা— সাকিব আল হাসান, তামিম ইকবাল, মাশরাফি বিন মর্তুজা।

প্রভাবশালী ম্যাগাজিন ফোর্বস বলছে, বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ক্রিকেটার ভারতের অধিনায়ক মহেন্দ্র সিং ধোনি, যার আয় প্রায় ৩৬ মিলিয়ন ইউএস ডলার। তুলনামূলক বিচারে কম নন আমাদের টাইগাররাও। জাতীয় দল, ঘরোয়া ও আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতা খেলে কোটি কোটি টাকা আয় করছেন বাংলাদেশী ক্রিকেটাররা।

আজকের যে ক্রিকেট খেলা, তার ধরন শুরুতে এমন ছিল না। অনেক পরিবর্তন আর রূপান্তরের মধ্য দিয়ে ক্রিকেট আজ এখানে এসে দাঁড়িয়েছে। লাতিনভাষী ব্রিটিশ কবি জোসেফ ১১৮২ সালে ব্যাট ও বলের যে খেলার বর্ণনা দিয়েছেন, সেটাই আজকের ক্রিকেট। এরও অনেক পরে ১৭০৪ সালে প্রকাশিত হয় ক্রিকেটের বিধিবিধান। নিয়মকানুন মেনে একটি পূর্ণাঙ্গ খেলা হিসেবে মাঠে ক্রিকেট শুরু হয় তখন থেকেই। এ বিধিবিধানের ওপর ভিত্তি করেই ১৭৮৯ সালে তৈরি হয় ক্রিকেট আইন।

ক্রিকেটার হতে চাইলে প্রথমে মনস্থির করতে হবে। এটা কি শুধুই শখ নাকি পেশা? কারণ পেশা হিসেবে নিতে চাইলে এ বিষয়ে অবশ্যই পড়ালেখা করতে হবে। কারণ ক্রিকেট খেলতে সবারই ভালো লাগে। তবে শখ আর পেশার মধ্যে পার্থক্য রয়েছে। তাই আগে মনস্থির করুন, কী চান। মনস্থির করার পর প্রাথমিক প্রস্তুতিটা নিতে হবে বাসা থেকেই। পরিবারের অনুমতি নিয়ে তবেই নামতে হবে ক্রিকেটযুদ্ধে।

এবার শেখার পালা। শুরুতে শিখতে হবে খেলতে খেলতে। টেলিভিশনে খেলা দেখেও শেখা যায়। তবে এজন্য প্রয়োজন হাতে-কলমে শিক্ষা। আর সেজন্যই নিতে হবে প্রশিক্ষণ।

আমাদের দেশে প্রশিক্ষণের জন্য রয়েছে হাতেগোনা কিছু প্রতিষ্ঠান। তবে লেখাপড়া করার জন্য রয়েছে একটিমাত্র প্রতিষ্ঠান বিকেএসপি। এখান থেকে যারা ক্রিকেট শিখতে চায়, তাদের বয়স হতে হবে ১২-১৩ বছর। তারা ভর্তি হতে পারবে ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণীতে। বছরের শুরুতেই পত্রিকায় দেয়া হয় ভর্তির বিজ্ঞাপন।

সে অনুযায়ী জীবনবৃত্তান্ত, বর্তমান ঠিকানা ও চার কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবিসহ লিখিত আবেদন করতে হবে। বিকেএসপির প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে নির্দিষ্ট দিনে প্রশিক্ষণার্থীদের চূড়ান্ত ভর্তির জন্য বাছাই করা হবে। মহাপরিচালকের কাছে যাদের আবেদন গ্রহণযোগ্য হবে, তাদের সঙ্গে বিকেএসপির পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হবে। কোন খেলায় ভর্তি হতে আগ্রহী, সেটা উল্লেখ করে দিতে হবে।

প্রাথমিক বাছাইয়ে সাধারণত স্বাস্থ্য ও বয়স এসব বিষয় দেখা হয়। এছাড়া স্পোর্টস সায়েন্টিস্ট দেখবেন, প্রার্থী খেলার জন্য উপযুক্ত কিনা। প্রাথমিক বাছাইয়ের দ্বিতীয় পর্বে ফিটনেস দেখা হয়। তৃতীয় পর্বে ভর্তি ইচ্ছুককে মাঠে পাঠানো হবে। সেখানে কিছু মৌলিক পরীক্ষা নেয়া হবে। প্রাথমিক বাছাইয়ে যারা টিকবে, তাদের নিয়ে সাতদিনের অনুশীলন ক্যাম্প হবে। সাতদিন সকাল-বিকাল অনুশীলনের পর নেয়া হবে লিখিত পরীক্ষা। লিখিত পরীক্ষা হয় ১০০ নম্বরে। এখানে বাংলা, ইংরেজি, অঙ্ক ও সাধারণ জ্ঞানের ওপর পরীক্ষা নেয়া হয়। সাধারণ জ্ঞানে সাধারণত খেলাধুলার ওপর মৌখিক প্রশ্ন করা হয়। ভর্তির পর শুরু হবে দীর্ঘমেয়াদি প্রশিক্ষণ। এর পর প্রার্থীর সক্ষমতা প্রমাণের পালা। এখানে প্রতিনিয়ত গ্রেডিং পদ্ধতিতে প্রতিযোগিতা হয়। এ প্রতিযোগিতায় সবসময় দক্ষতা দেখাতে হবে।

প্রশিক্ষণের পর এসএসসি পাস করলে সার্টিফিকেট দেয়া হবে। দক্ষতার ভিত্তিতে সুযোগ মিলবে জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে খেলার।

সূত্র: বণিক বার্তাfavicon59

Sharing is caring!

Leave a Comment