অন্য রকম ক্যারিয়ার

অন্য রকম ক্যারিয়ার

  • ক্যারিয়ার ডেস্ক

পড়াশোনা যে বিষয়েই হোক না কেন, প্রতিটির আছে নিজস্ব কাজের ক্ষেত্র। এর মাঝে কিছু মৌলিক বিষয় আছে, যেগুলোতে চাইলে গড়া যায় অন্য রকম ক্যারিয়ার।


  • সামাজিক বিজ্ঞান

এর অধীনে অনেক বিষয়ে লেখাপড়া করা যায়; যার মধ্যে আছে নৃবিজ্ঞান, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক, ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ, পিস অ্যান্ড কনফ্লিক্ট স্টাডিজ, পপুলেশন সায়েন্স, পলিটিক্যাল সায়েন্স, উইমেন ও জেন্ডার স্টাডিজ। এসব বিষয়ে লেখাপড়া করে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে এনজিও ক্ষেত্রে ক্যারিয়ার গড়া যায়। এসব ক্ষেত্রে বিস্তর গবেষণার সুযোগও আছে, আছে পর্যাপ্ত অনুদানও। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে সামাজিক বিজ্ঞানের যেসব বিষয়ে পড়ানো হয় তার মধ্যে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ে রয়েছে অ্যানথ্রোপলজি ও ইংরেজি। তবে ইনডিপেনডেন্ট ও নর্থ সাউথেও পড়া যাবে সমাজবিজ্ঞান।

  • সমাজবিজ্ঞান অন্যান্য

বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে গুরুত্বপূর্ণ দুটি অনুষদ সমাজবিজ্ঞান ও কলা। এসব অনুষদে সামাজিক বিজ্ঞান ও কলার বিভিন্ন বিষয়ে স্নাতক ডিগ্রি প্রদান করা হয়। এর মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা, ইংরেজি, দর্শন, নাট্যকলা, রাষ্ট্রবিজ্ঞান, লোকপ্রশাসন, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা, নৃবিজ্ঞান, পপুলেশন সায়েন্স, শান্তি সংঘর্ষ, ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজসহ নানা বিষয় পড়ানো হয়।

বিষয়ের বৈচিত্র্যের ওপর নির্ভর করে এসব বিষয়কে চারটি প্রধান ভাগে ভাগ করা যায়। মিডিয়া ও কমিউনিকেশনস, চারুকলা, সামাজিক বিজ্ঞান এবং ভাষা ও সাহিত্য। সাধারণত এসব বিষয়ে লেখাপড়া করে সবার টার্গেট শেষ পর্যন্ত হয়ে যায় বিসিএস এবং বিভিন্ন সরকারি ব্যাংকের চাকরি। এতে সৃষ্টি হয় প্রবল প্রতিযোগিতা। ফলে অনেক শিক্ষার্থীর জীবন থেকে অনেক গুরুত্বপূর্ণ সময় হারিয়ে যায়। অথচ এসব বিষয়ে লেখাপড়া করে আছে অন্যান্য চাকরিও। তবে এসবের বড় ক্ষেত্রটা হলো বিভিন্ন স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা। পাশাপাশি এসব বিষয়ের গবেষণা ও প্রকাশনার সঙ্গে যুক্ত থেকেও ভালো আয় করার সুযোগ আছে।

  • চারুকলা

চারুকলার অধীনে আছে ড্রইং অ্যান্ড পেইন্টিং, প্রিন্ট, গ্রাফিক ডিজাইন, ওরিয়েন্টাল আর্ট, ভাস্কর্য, সিরামিক, ক্রাফট ও কলার ইতিহাস। এ বিষয়ে লেখাপড়া করলে যেমন বিশাল সুযোগ আছে নিজে কিছু করার, তেমনি ফ্রিল্যান্সিং করেও আয় করা যায় ঢের। চাকরির জন্য ক্রিয়েটিভ ক্ষেত্রে অর্থাৎ ভিজ্যুয়াল মিডিয়া, বিজ্ঞাপনী সংস্থা, ডিজাইন, বিনোদন, টেক্সটাইল, টেলিভিশন ও প্রিন্ট মিডিয়ায় সুযোগ রয়েছে। অর্থাৎ যেখানেই সৃষ্টিশীলতা দেখানোর জায়গা আছে, সেখানেই সুযোগ রয়েছে এসব বিষয়ে দক্ষদের। সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরে চারুকলার বিষয় পড়া যায় ইউনিভার্সিটি অব ডেভেলপমেন্ট অল্টারনেটিভস বা ইউডায়।

  • বাংলাইংরেজি

ভাষা ও সাহিত্যে রয়েছে বাংলা ও ইংরেজি ভাষার সাহিত্যের ওপর উচ্চশিক্ষার ডিগ্রি। এ ছাড়া ভাষা শিক্ষা ইনস্টিটিউটে রয়েছে পৃথিবীর অনেক ভাষার ওপর উচ্চশিক্ষার সুযোগ। বাংলায় উচ্চশিক্ষা করে রয়েছে গবেষণার সুযোগ। আর স্কুল থেকে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে অধ্যাপনার সুযোগও তো আছেই। ইংরেজিতে উচ্চশিক্ষা নিলেই রয়েছে দূতাবাসে চাকরির সুযোগ। আবার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে দোভাষীর কাজের জন্য ইংরেজির বিকল্প নেই। এর বাইরে সৃজনশীলরা চাইলে খুলে বসতে পারেন অনুবাদ কারখানাও।

  • মিডিয়া স্টাডিজ, সাংবাদিকতা যোগাযোগ

মিডিয়া ও কমিউনিকেশনসের অধীনে নাট্যকলা, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা, প্রিন্টিং পাবলিকেশন স্টাডিজ, টেলিভিশন ও ফিল্ম স্টাডিজের বিষয়গুলো পড়ে। এগুলো সামাজিক বিজ্ঞানের অধীনে হলেও বিষয়ের ধরনের কারণে এগুলোর চাকরির ক্ষেত্রে বাকি সব বিষয় থেকে কিছুটা আলাদা। এসব বিষয়ে উচ্চশিক্ষা নিলে গণমাধ্যমের ক্ষেত্রে অনেক দরজা খুলে যায়। বাংলাদেশে সংবাদমাধ্যম ও বিনোদন খাতের বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে এসব ক্ষেত্রে দক্ষ কর্মীর চাহিদাও তৈরি হচ্ছে। এই বিষয়গুলো পড়লে চাকরি ছাড়াও ফ্রিল্যান্সিং করেও আয় করার সুযোগ থাকে। করপোরেট হাউসগুলোতেও এখন পাবলিক রিলেশন অফিসের চল রয়েছে। এতে সাধারণ মিডিয়া থেকে লেখাপড়া করা শিক্ষার্থীদেরই সুযোগ বেশি। এসব ক্ষেত্রে বেতনও আকর্ষণীয়। শুধু করপোরেট নয়, সরকারি, দেশি, বিদেশি সব কম্পানির ক্ষেত্রেই গণসংযোগ অফিসারের চাহিদা রয়েছে। এ বিষয়ে পড়ার জন্য বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে ইউল্যাব বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশ সুনাম রয়েছে। এ ছাড়া মিডিয়া ও কমিউনিকেশনে স্নাতক করা যায় আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল বিশ্ববিদ্যালয় ও ইনডিপেনডেন্ট বিশ্ববিদ্যালয় থেকেও।

  • হোটেল ম্যানেজমেন্ট

দিন এখন পর্যটনেরও। ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, সুইজারল্যান্ড, ভারত, থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুরসহ অনেক দেশে ট্যুরিজমে গ্র্যাজুয়েশনের সুযোগ আছে। দেশের সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতেও আছে এ বিষয়ে পড়াশোনার সুযোগ। চার বছর মেয়াদি অনার্স কোর্স আছে ঢাকা ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে। কিছু বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়েও এ বিষয় পড়ানো হয়।

  • টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং

টেক্সটাইল মিল, বায়িং হাউস, বুটিক হাউস, ফ্যাশন হাউস ও গার্মেন্টশিল্পের দ্রুত বিকাশের কারণে এ শিল্পে চাকরির সুযোগ এখন অনেক। এ বিষয়ে পড়াশোনায় বাংলাদেশ টেক্সটাইল ইউনিভার্সিটি পথিকৃৎ হলেও এখন সরকারি পাঁচটি টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ রয়েছে। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে রয়েছে আহসান উল্লাহ ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি, গ্রিন ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ, ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, সাউথ ইস্ট ইউনিভার্সিটি, বিজিএমইএ ইনস্টিটিউট অব ফ্যাশন অ্যান্ড টেকনোলজি, ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ।favicon59

Sharing is caring!

Leave a Comment