কর্মী নেবে সৌদি আরব

কর্মী নেবে সৌদি আরব

  • ক্যারিয়ার ডেস্ক

১১ আগস্ট সব ধরনের কর্মী নিয়োগের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে সৌদি আরব। এখন পর্যন্ত ১৫ থেকে ২০ লাখ বাংলাদেশি সেখানে কাজ করতে গেছেন। সব ধরনের খাত উন্মুক্ত হওয়ায় আগামী কয়েক বছরে আরও ৪ থেকে ৫ লাখ লোক সে দেশে যেতে পারবেন।

যাত্রা শুরুর গল্প
১৯৭৬ সালের ১৭ এপ্রিল ২১৭ জন শ্রমিক নিয়ে সৌদি আরবে আনুষ্ঠানিকভাবে জনশক্তি রফতানি শুরু হয়। এসব শ্রমিকের সঙ্গে ৬৪ টন বাংলার কাদামাটি ও ৫০ কেজি নিমের বীজও পাঠানো হয়েছিল। সৌদি বিমান হিজবুল বাহারে করে পাঠানো এসব শ্রমিক দিয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে সৌদি আরবের সম্পর্কের যাত্রা শুরু হয়। এরপর প্রতি বছরই কর্মী যাওয়া বাড়তে থাকে।
১৯৭৬ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত ২৫ লাখ ৫৮ হাজার ৪৬৩ বাংলাদেশি সৌদি আরবে গেছেন। কিন্তু ২০০৮ সাল থেকেই নতুন করে ভিসা দেওয়া বন্ধ করে দেয় সৌদি আরব। ফলে ২০০৭ সালে যেখানে ২ লাখ ৪ হাজার ১১২ জন ও ২০০৮ সালে ১ লাখ ৩২ হাজার কর্মী সৌদি আরবে যান, সেখানে ২০০৯ সালে মাত্র ১৪ হাজার ৬৬৬ জন কর্মী যান দেশটিতে। ২০১৪ সাল পর্যন্ত একই অবস্থা ছিল।

নতুন শ্রমবাজার
বাংলাদেশ থেকে কর্মী নিয়োগের ওপর নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার দেড় বছর পর এবার সব খাতে কর্মী নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে দেশটি। ফলে বিপুল পরিমাণ দক্ষ, অদক্ষ শ্রমিকের পাশাপাশি চিকিৎসক, প্রকৌশলী, নার্স ও শিক্ষকের মতো পেশাজীবীদের নিয়োগের পথও সুগম হলো বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় এই শ্রমবাজারে। দীর্ঘ ছয় বছর বন্ধ রাখার পর ২০১৫ সালের ১ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ থেকে কর্মী নেওয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে সৌদি আরব। দেড় বছর ধরে নারী গৃহকর্মীদের পাশাপাশি শুধু গৃহ খাতেই শ্রমিক নিচ্ছিল সৌদি আরব। ১১ আগস্ট সব ধরনের কর্মী নিয়োগের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার ঘোষণা দিল সৌদি আরবের শ্রম ও সমাজ উন্নয়ন মন্ত্রণালয়।

এ ছাড়া সৌদি স্বরাষ্ট্র, পররাষ্ট্র ও শ্রম মন্ত্রণালয়ের একটি প্রতিনিধি দল ২০১৩ সালের মার্চের শেষে বাংলাদেশ সফর করে। এরপর সৌদি সরকার ২০১৩ সালের ১০ মে থেকে ৩ নভেম্বর পর্যন্ত সে দেশে বসবাসরত অবৈধ বাংলাদেশিদের জন্য সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করে। একই সঙ্গে আকামা ও পেশা পরিবর্তনের সুযোগ দেয়। ৭ লাখ ৯৯ হাজার ১৮৬ জন বাংলাদেশি সাধারণ ক্ষমার এই সুবিধা পান। এরপর গত বছরের ১ ফেব্রুয়ারি নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে সৌদি আরব। ২০১৫ সালে ৫৮ হাজার ২৭০ ও চলতি বছরের জুলাই পর্যন্ত ৬১ হাজার ৯৪৮ জন সৌদি আরব গেছেন।

সম্পর্কের ধারাবাহিকতা
কূটনৈতিক এই সম্পর্কের ধারাবাহিকতায় গত বছর সৌদি নেতৃত্বাধীন সন্ত্রাসবিরোধী জোটে বাংলাদেশ যোগ দিলে সৌদি আরব খুশি হয়। এরপর নিরসন হয় বাংলাদেশিদের ওমরাহ ভিসা নিয়ে জটিলতা। গত মার্চের প্রথম সপ্তাহে ঢাকায় আসেন সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী আদেল বিন আহমেদ আল জুবেইর। আর জুন মাসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সৌদি আরব সফরে যান। এরপর দুই দেশের সম্পর্ক পায় নতুন মাত্রা!

নার্স ও চিকিৎসক
জনশক্তি রফতানিকারক ও সৌদি আরবের বাংলাদেশ দূতাবাস সূত্রে জানা গেছে, এখন সৌদি আরব বাংলাদেশের ব্যাপারে অনেক আন্তরিক। গত নয় বছরে নতুন করে কোনো বাংলাদেশি চিকিৎসক ও নার্স নিয়োগ দেওয়া হয়নি সৌদি আরবে। তবে এবার বিপুল সংখ্যক নার্স ও চিকিৎসক নিতে চায় দেশটি। সৌদি সরকার তাদের নাগরিকদের উন্নতমানের স্বাস্থ্যসেবা প্রদানের লক্ষ্যে সরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকে জরুরিভাবে ১০ হাজার চিকিৎসক ও ২০ হাজার নার্স নিয়োগ এবং ২ হাজার ৯৫৮টি স্বাস্থ্যকেন্দ্র স্থাপনের ঘোষণা দিয়েছে। ফলে সৌদিতে বিপুল সংখ্যক চিকিৎসক ও নার্সের প্রয়োজন দেখা দিয়েছে।

যোগাযোগ
সৌদি আরব যেতে আগ্রহীরা জনশক্তি রফতানিকারকদের সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্টারন্যাশনাল রিক্রুটিং এজেন্সির [বায়রা] সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে পারেন। শিগগিরই এ সংক্রান্ত বিস্তারিত তথ্য জানা যাবে।

সূত্র: সমকালfavicon59

Sharing is caring!

Leave a Comment