সাক্ষাৎকার : উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে তথ্য-প্রযুক্তি এখন সবচেয়ে যুগোপযোগী
- ক্যারিয়ার ডেস্ক
তথ্যপ্রযুক্তি বা আইটি বিষয়ে পড়ার পরিকল্পনা অনেকেরই। যুগের সঙ্গে তাল মিলাতে নিত্যনতুন বিষয় যুক্ত হচ্ছে তথ্যপ্রযুক্তি শিক্ষা ব্যবস্থায়। প্রযুক্তি এখন জীবনের প্রধান অনুষঙ্গ হয়ে উঠেছে। বিশ্ব এগিয়ে যাচ্ছে প্রযুক্তির ওপর ভর করে। প্রযুক্তির বিশ্ববাস্তবতায় তাই অনেকেই আইটি শিক্ষায় উৎসাহিত হচ্ছে। শিক্ষার্থীদের পেশাজীবনে যোগ হচ্ছে নতুন নতুন সম্ভাবনা।
ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল একাডেমি প্রতিষ্ঠানটি যুক্তরাজ্যের গ্রীনিচ ইউনিভার্সিটির সাথে যৌথভাবে শিক্ষা ব্যবস্থা পরিচালনা করছে । ১৯৯৭ সন থেকে এই প্রতিষ্ঠনটির কার্যক্রম শুরু হয়। আইটি বিষয়ে শিক্ষা পদ্ধতি সম্পর্কে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল একাডেমির নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মদ নূরুজ্জামান বলেন, ‘এইচএসসি পাস করা শিক্ষার্থীদের জন্য অপেক্ষা করছে নতুন স্বপ্ন, নতুন সম্ভাবনা। সময়টা এখন প্রযুক্তির। তরুণরা খুঁজে পাচ্ছেন নতুন দিক নির্দেশনা। প্রাতিষ্ঠানিক পর্যায়ে উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে তথ্য-প্রযুক্তি এখন সবচেয়ে যুগোপযোগী। প্রতিটি ভালো শিক্ষার্থীর স্বপ্ন হচ্ছে বিদেশে বিশেষ করে যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, জার্মানীসহ ভালো বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রি অর্জন। তবে স্বপ্ন পূরণের প্রধান অন্তরায় হচ্ছে বিপুল খরচ যা আমাদের দেশের তুলনায় প্রায় দশগুন। তাই ইচ্ছে থাকা স্বত্ত্বেও সকলের পক্ষে বিদেশে গিয়ে পড়াশোনা সম্ভব হয় না। একদিকে বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রি অর্জনের প্রবল আকাঙ্ক্ষা অন্যদিকে আর্থিক অস্বচ্ছলতা এই বাস্তবতাকে উপলব্ধি করে বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের স্বপ্নকে বাস্তবে রূপদানের লক্ষ্যে একটি সহজ সুযোগ সৃষ্টি করেছে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল একাডেমি (ডিআইএ)। এ শিক্ষা ব্যবস্থায় বৃটিশ কাউন্সিলের তত্ত্বাবধানে ফাইনাল পরীক্ষাগুলো অনুষ্ঠিত হয়। প্রশ্নপত্র প্রণয়ন ও উত্তরপত্র পরীক্ষিত হয় যুক্তরাজ্যে। এর যাবতীয় ক্লাস অনুষ্ঠিত হয় ডিআইএতে।
শিক্ষার্থীদের সার্টিফিকেট প্রাপ্তি প্রসঙ্গে তিনি জানান, এ শিক্ষা ব্যবস্থায় যুক্তরাজ্যের গ্রীনিচ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক বিএসসি অনার্স ইন বিজনেস ইনফরমেশন টেকনোলজি সার্টিফিকেট দেওয়া হয়।
ক্রেডিট ট্রান্সফার সম্পর্কে তিনি জানান, যুক্তরাজ্যসহ বিশ্বের সহস্রাধিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্রেডিট ট্রান্সফার করার সুযোগ রয়েছে। সেক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের ওই দেশের টিউশন ফি প্রদান করতে হবে তবে অতিরিক্ত কোনো পরীক্ষার ফি ও রেজিস্ট্রেশন ফি দিতে হবে না। ক্রেডিট ট্রান্সফারের ক্ষেত্রে প্রতি শিক্ষার্থীই ১ হাজার পাউন্ড টিউশন ফি কম দেওয়ার সুবিধা পাচ্ছে। ইতিমধ্যে ডিআইএ হতে ২ সহস্রাধিক শিক্ষার্থী ক্রেডিট ট্রান্সফার করে যুক্তরাজ্য, কানাডা, জার্মানী, অস্ট্রেলিয়াসহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশের নামকরা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করছে এবং অনেকেই স্থায়ীভাবে বসবাস করছে।
শিক্ষার মান নিয়ন্ত্রণ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘ডিআইএ ইতিমধ্যে আন্তর্জাতিক মান নিয়ন্ত্রণ, অভিজ্ঞ শিক্ষক, শ্রেষ্ঠ ফলাফল ও অধিক সংখ্যক শিক্ষার্থীর জন্য যুক্তরাজ্যের এনসিসি এডুকেশন কর্তৃক বেস্ট পার্টনার ও একাডেমিক এক্সিলেন্স অ্যাওয়ার্ড অর্জন করেছে যা দেশের জন্য একটি বিরল সম্মান। পরীক্ষার মান নিয়ন্ত্রণের জন্য রয়েছে ব্রিটিশ কাউন্সিল, ইউনিভার্সিটি অব গ্রীনিচ ও এনসিসি অ্যাডুকেশন, ইউকে।’ শিক্ষার্থীদের ভর্তিতে যোগ্যতা সম্পর্কেও জানান, যেকোন গ্রুপে এইচএসসি/এ লেভেল অথবা সমমান পাস। তাছাড়াও ৪ বছর মেয়াদী কম্পিউটার ডিপ্লোমাধারীরা দুই বছরে বিএসসি (অনার্স) ইন ইনফরমেশন টেকনোলজি প্রোগ্রামটি সম্পন্ন করতে পারবে। যুক্তরাজ্যে এটি সম্পন্ন করতে যেখানে ৮০-৯০ লাখ টাকা খরচ হয়, সেখানে বাংলাদেশে একই প্রোগ্রাম মাত্র ৬ থেকে সাড়ে ৬ লক্ষ টাকা খরচ হয়। চার বছর মেয়াদের বিএসসি অনার্স কোর্সে প্রতি বছর সেমিস্টার সনদ দেওয়া হয়। এগুলো হলো যথাক্রমে ইন্টারন্যাশনাল ফাউন্ডেশন ইয়ার (IFY), লেভেল ফোর ডিপ্লোমা ইন কম্পিউটিং (L4DC) লেভেল ফাইভ ডিপ্লোমা ইন কম্পিউটিং (L5DC) ও অনার্স ইন বিজনেস ইনফরমেশন টেকনোলজি (Hons)। তিনি আরও জানান, ড্যাফোডিল অ্যাকাডেমি থেকে গ্র্যাজুয়েশন সম্পন্ন করার পর একজন শিক্ষার্থীও বেকার নেই। তাছাড়াও ডিআইআইটির শিক্ষার্থীরা ড্যাফোডিল গ্রুপের ১৭টি প্রতিষ্ঠানে এবং বিভিন্ন ব্যাংক, সরকারি, বেসরকারি ও মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানিতে কর্মরত আছে। ডিআইএ’র প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের পরিচালিত সফটওয়্যার ফার্মে কাজ করার বিশেষ সুযোগের পাশাপাশি শিক্ষাকালীন অবস্থায় আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে ঘরে বসে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করতে পারে। এই প্রতিষ্ঠান থেকে পাস করে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে যেমন ইউএনডিপি, স্যাট ও জাতিসংঘসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সাথে জড়িয়ে আছে। আবার এই শিক্ষার্থীরা ইমিগ্রেশনের সুবিধাটাও আগেই পাচ্ছে।
স্কলারশিপ সুবিধা প্রসঙ্গে তিনি জানান, মেধাবী ও অসচ্ছলদের জন্য রয়েছে ১০ থেকে শতভাগ পর্যন্ত ড্যাফোডিল ফাউন্ডেশন কর্তৃক স্কলারশিপের সুবিধা। মুক্তিযোদ্ধা, স্কুল শিক্ষকের সম্মান ও মেয়েদের জন্য রয়েছে বিশেষ স্কলারশিপের সুবিধা।