‘না’ বলতে শিখুন!
- ক্যারিয়ার ডেস্ক
আমরা যারা নিজের জীবনকে সরল করতে চাই, এটি তাদের জন্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ অভ্যাস। আমাদের সমাজে না বলাটা এতটাই দোষের যে একটি ছোট শিশু যখন খেতে চায় না বা অন্য কোন বিষয়ে তার অনিচ্ছা প্রকাশ করে, তখন আমারা তাকে জোর করে হলেও খেতে বা ঐ কাজটি করতে বাধ্য করি।
শিশুকাল থেকেই আমরা শিখি না বলার মানে বেয়াদবি অথবা কাপুরুষতা। তাই একটি কাজ, সম্পর্ক, দায়িত্ব, অপছন্দ যতই আমাদের ক্ষমতার বাইরে হোক না কেন আমরা ‘না’ বলতে পারি না। ফলে আমাদের জীবন জটিল থেকে জটিলতর হতে থাকে। তাই প্রথমেই আমাদের ‘না’ বলতে শেখা উচিৎ। করা উচিৎ ‘না’ বলার অভ্যাস।
‘না’ বলার অর্থই হেরে যাওয়া নয় –
আমরা ভাবি ‘না’ বলার অর্থ হেরে যাওয়া বা পরাজয় স্বীকার করা। কিন্তু বিষয়টি আসলে মোটেও সেই রকম না। বরং ‘না’ বলা মানে হচ্ছে সঠিক সময় পর্যন্ত অপেক্ষা করা। একই সাথে এটাও নিশ্চিত করা যে কাজটি যখন করা হবে তখন পূর্ণ যোগ্যতা আর আয়োজনের সাথে করা হবে যাতে করে কোনও ভুলের সম্ভাবনা না থাকে।
আপনি না বলছেন মানেই আপনি হ্যাঁ বলছেন –
ঠিক যেই সময়টিতে আপনি সচেতন ভাবে কোন কিছুতে ‘না’ বলেন তখনই আপনি আপনার ক্ষমতা সম্পর্কে চুড়ান্ত সচেতন থাকেন। অর্থাৎ, ঐ বিষয়টিকে ‘না’ বলার মধ্য দিয়ে আপনি আসলে অন্য একটি কাজকে ‘হ্যাঁ’ বলছেন এবং বলছেন সেই কাজটিকেই যেটি করলে আপনি অবশ্যই সফল হবেন। কারণ, তা অবশ্যই আপনার যোগ্যতা আর ক্ষমতার মধ্যে।
‘না’ বলুন সকল বিষয়ে –
অনুরোধের ঢেঁকি যত ছোট আর যত বড়ই হোক না কেন তা গিলে নেয়া সম্ভব না। তাই হোক তা সম্পর্ক, আবেদন, অনুরোধ বা কর্তব্য যদি তা হয় আপনার ক্ষমতার বাইরে সরাসরি ‘না’ বলুন।
বাড়িয়ে নিন জীবনের সময় –
যদি আপনি ‘না’ বলতে না পারেন তাহলে আপনাকে অনেক বেশি চাপ নিতে হবে। আপনার কাজের পরিমাণ হয়ে দাঁড়াবে আপনার ক্ষমতার চেয়েও বেশি। তাই ‘না’ বলে বাড়িয়ে নিন প্রয়োজনীয় কাজের জন্যে কিছু অতিরিক্ত সময় আর চাপ কমিয়ে নিজেকে রাখুন সুস্থ। জীবনকে দিন কিছুটা হলেও অতিরিক্ত সময়।
‘না’ বলাকে শিল্পে পরিণত করুন –
আমাদের সমাজ ‘না’ শুনতে অভ্যস্ত নয়। তাই হুট করেই এই অভ্যাস শুরু করলে অনেক ধরনের সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে। তাই ‘না’ বলতে হবে এমনভাবে যেন তা অবশ্যই গৃহীত হয়। তাই ‘না’ বলাটিকে করে তুলুন শিল্প। কাউকে আঘাত না করেই না বলতে শিখে নিন।
সুতরাং, আপনার স্বপ্নের সাথে সম্পর্কহীন যে কোন বিষয়ে নির্দ্বিধায়, নিঃসংকোচে, বিনা উদ্বেগে সরাসরি ‘না’ বলুন।