চলো টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ার হই

চলো টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ার হই

  • ক্যারিয়ার ডেস্ক

টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারদের কাজ কি? এরা আসলে কি করে? কেনইবা এদেরকে উচ্চ বেতনে চাকরি দেয় টেক্সটাইল মালিকরা। অনেকে টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ার নাম শুনলেই নাক সিটকান, বলেন, এইটা কোন ইঞ্জিনিয়ার হলো? কাপড়ের আবার কিসের ইঞ্জিনিয়ার? অনেকে জানেই না টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ার মানে কাপড়ের ইঞ্জিনিয়ার না। এটি একটি সম্পূর্ণ ম্যানুফেকচারিং বেজড একটি প্রসেস, যেখানে একজন ইঞ্জিনিয়ারকে মেশিন সেটাপ থেকে শুরু করে প্রসেস কন্ট্রোল, প্রোডাক্ট ডেভেলপমেন্ট, গিয়ার মেকানিজম এবং মেইনটেনেন্স নিয়ে কাজ করতে হয়। স্পিনিং এর ইঞ্জিনিয়ারদের প্রোগ্রাম ইনপুট দেয়া জানতে হয়। ওয়েট প্রসেস ইঞ্জিনিয়ারদের প্রথম সারির কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার হতে হয়।

বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় শিল্প হলো তৈরি পোশাক। বর্তমানে এ খাত থেকেই সবচেয়ে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জিত হয়। এ শিল্প বিশ্ব বাজারে সুনাম অর্জনের পাশাপাশি সৃষ্টি করেছে লাখ লাখ লোকের কর্মসংস্থান। মোট কথা, বাংলাদেশের রপ্তানি শিল্পে এটি একটি সম্ভাবনার দুয়ার খোলে দিয়েছে। তার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে বস্ত্র প্রকৌশল বিদ্যার উন্নতি। বিশ্ব বাজারে প্রকৌশল বিদ্যার কাতারে বস্ত্র প্রকৌশল বিদ্যা এখন একটি উজ্জ্বল নাম।

বর্তমান সময়ে শিক্ষা লাভ করে চাকরির ক্ষেত্রে যে কেউ সাফল্যের শীর্ষে পৌঁছতে পারে। মূলত উন্নতি আর সাফল্য নির্ভর করে কর্মক্ষেত্র নির্বাচন ও যথাযথ প্রয়োগের উপর। এ ক্ষেত্রে মেধা, মনন ও দক্ষতার একান্ত প্রয়োজন। বর্তমানে বাংলাদেশসহ বিশ্বে যে কয়েকটি শিল্প মাধ্যম দ্রুত বিকাশ লাভ করেছে, তার মধ্যে টেক্সটাইল শিল্প অন্যতম।

বাংলাদেশে বর্তমানে কটন ও সিনথেটিক মিল, উলেন ও উইভিং মিল, হ্যান্ডলুম ও ডাইং, ফিনিশিং এবং এক্সপোর্ট ওরিয়েন্টেড গার্মেন্টসহ প্রায় ৯ হাজার টেক্সটাইল শিল্প আছে। বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক মন্দা সত্ত্বেও এ সেক্টরের অগ্রগতি অব্যাহত আছে। প্রতি বছরই নতুন নতুন টেক্সটাইল ইন্ডাস্ট্রি স্থাপিত হচ্ছে। বাংলাদেশের বস্ত্র আজ বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয়। বর্তমানে এ শিল্পের চাহিদার সঙ্গে মিল রেখে প্রয়োজনীয় দক্ষ ও শিক্ষিত জনশক্তি যোগান দেয়া সম্ভব হচ্ছে না। তাই টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং বিষয়ে উচ্চতর শিক্ষা এখন সময়ের দাবি।

কর্মক্ষেত্র: বাংলাদেশে যেখানেই বস্ত্রের সংশ্লিষ্টতা আছে, সেখানেই টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারদের কর্মস্থল। একজন টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ার শিল্পকারখানায়, শিক্ষকতায়, ট্রেড ও কমার্সে, মান নিয়ন্ত্রণে, মন্ত্রণালয়ে, করপোরেশন ও তাঁত-বোর্ডে, এনজিও এবং কাস্টমসে কাজের সুযোগ পাচ্ছে। দেশের বাইরেও রয়েছে প্রচুর চাকরির সুযোগ। এছাড়া বিদেশে টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারদের বিপুল চাহিদার কারণে কানাডা অস্ট্রেলিয়াসহ বিভিন্ন উন্নত দেশে মাইগ্রেশনের মাধ্যমে প্রতি বছর অনেক টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ার বিদেশে পাড়ি জমাচ্ছেন।

কোথায় পড়বেন: বর্তমানে সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে বিভিন্ন ইউনিভার্সিটি, টেক্সটাইল কলেজ, ডিগ্রি পর্যায়ের কলেজ, ডিপ্লোমা পর্যায়ের ইন্সটিটিউট ও কিছু সরকারি বৃত্তিমূলক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং বিষয়ে শিক্ষা দিচ্ছে। সরকারি ও বেসরকারি বেশ কিছু প্রতিষ্ঠানে বস্ত্র প্রকৌশল বিষয়ে উচ্চতর শিক্ষা গ্রহণেরও সুযোগ আছে।

সরকারি: মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, টাঙ্গাইল, বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা, ঢাকা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, গাজীপুর, বঙ্গবন্ধু টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ, টাঙ্গাইল, বেগমগঞ্জ টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ, নোয়াখালী, পাবনা টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ, পাবনা, চট্টগ্রাম টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ, চট্টগ্রাম, শহীদ আব্দুর রব সেরনিয়াবাত টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ, বরিশাল।

বেসরকারি: জাতীয় বস্ত্র প্রকৌশল ও গবেষণা ইন্সটিটিউট, সাভার, ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ, প্রাইম এশিয়া ইউনিভার্সিটি, গ্রীন ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ, আহসানউল্লাহ ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি, সাউথ ইস্ট ইউনিভার্সিটি, বিজিএমইএ ইন্সটিটিউট অব ফ্যাশন অ্যান্ড টেকনোলজি, অতীশ দীপঙ্কর ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি, শ্যামলী টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ, সিটি ইউনিভার্সিটি, ইউনিভার্সিটি অব সাউথ এশিয়া, দ্যা পিপলস ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ, ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অব ফ্যাশন অ্যান্ড টেকনোলজি।

সূত্র: ইত্তেফাক

Sharing is caring!

Leave a Comment