ব্যবসা প্রসারের কৌশল
- ক্যারিয়ার ডেস্ক
আপনি কী করবেন এবং কী করবেন না তা জানুন
সবার কাছে সব বিষয়ে পারদর্শী হওয়ার মধ্যে কোন কৃতিত্ব নেই কারন তখন মানুষ ভাববে আপনি যেকোন একটি কাজও ঠিকমত করতে পারেন না। বিজনেসের ক্ষেত্রে, বেশি বেশি পণ্য তৈরি করা, নিজের বিশেষত্বের বাইরে কাজ করা এবং অল্প কিছু লাভের আশায় মূল বাজার রেখে অন্য বাজারে পণ্যের প্রসারে ব্যস্ত থাকলে আপনি ভুল করে থাকবেন। যদি এমনটি হয়ে থাকে তাহলে আপনি আপনার আসল শক্তি এমন জিনিসের জন্য ব্যয় করছেন যাতে আপনি সফল নাও হতে পারেন এবং তা করতে গিয়ে আপনার টিম, বাজেট এবং পুরো প্রতিষ্ঠানের উপর শুধু শুধু আপনি চাপ সৃষ্টি করছেন।
পুরস্কারের জন্য লক্ষ্য স্থির করুন
আমরা বিজনেসের প্রসারে ক্ষেত্রে অনেক কৌশলী হয়ে থাকি। কেউ কেউ আগে থেকেই দুই-তিন বছরের বিজনেস পরিকল্পনা করে থাকে, সেই পরিকল্পনার তদারক করে প্রয়োজন হলে তা পরিবর্তন করে থাকে। যদি কোন লক্ষ্য না থাকে তাহলে আপনার টিম ও প্রতিষ্ঠানের পারফর্ম্যান্স পরিমাপ করার কোন ভিত্তিও থাকবে না। যখন সবাই প্রতিষ্ঠানের লক্ষ্যগুলো সম্পর্কে সাম্ম্যক অবগত থাকে, তখন সবার একসাথে কাজ করা এবং লক্ষ্য পূরণ করা সহজ হয়ে যায়।
মনে রাখবেন মানুষ মানুষের জন্য কাজ করে, প্রতিষ্ঠানের জন্য নয়
যোগ্য লোক ছাড়া একটি বিজনেস সফলভাবে কার্যক্রম চালিয়ে প্রসারিত হতে পারে এমনটি বিরল। আসলে, আমরা প্রায়শই বলে থাকি যে আমাদের কর্মীবাহিনীই আমাদের প্রতিষ্ঠানের একমাত্র সম্পদ এবং আমরা সব সময় আমাদের প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কৃতি উন্নত করার চেষ্টায় থাকি যাতে আমাদের কর্মচারীরা আমাদের সাথে কাজ করা চালিয়ে যায়। অনেক প্রতিষ্ঠানই ভুলে যায় যে আসল আনুগত্য তখনই আসে যখন কর্মচারীরা বিশ্বাস করে প্রতিষ্ঠান এবং এর ম্যানেজমেন্ট সত্যি সত্যি তাদের জন্য কেয়ার করে থাকে। এর ফলে কর্মচারীরা অনেকদিন ধরে প্রতিষ্ঠানের কাজের সাথে যুক্ত থেকে তাকে এগিয়ে নিয়ে যায় এবং বিজনেসের প্রসারে প্রত্যক্ষ ভূমিকা রাখে।
বিজনেস ভালভাবে চালানো আর পেশা কিংবা বাণিজ্যে ভাল হওয়া এক নয়
একজন হয়ত মার্কেটিংয়ে ভাল কিন্তু তার মানে এই নয় যে সে ভালভাবে একটি মার্কেটিং প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করার যোগ্যতা রাখে। এটি যেকোন কাজের ক্ষেত্রেই সত্য। একটি বিজনেসকে সফলভাবে প্রসারের জন্য দরকার একটি ভাল বিজনেস মাইন্ড এবং নির্দিষ্ট বিষয়ে বলিষ্ঠ দক্ষতা। বিজনেস কার্যক্রমের নেপথ্যে যা যা থাকে যেমন প্রক্রিয়া, লোক ব্যবস্থাপনা, রসিদ দেখভাল ও কার্যপ্রণালী – এগুলো বিজনেসের সাফল্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। অনেকে তাদের পেশায় ভাল হতে গিয়ে তাদের বিজনেসের খুঁটিনাটি বিষয়গুলোতে সঠিকভাবে আলোকপাত না করার ফলে ব্যর্থ হয়।
আবেগকে কাজে লাগান
যখন আপনি আপনার কাজকে ভালবাসতে শুরু করেন তখন আপনার আশপাশের মানুষজন তা টের পায়। পর্যাপ্ত আগ্রহ ও উত্তেজনা দেখানোর ফলে আপনার টিম বুঝতে পারবে তাদেরকে আরো পরিশ্রম করতে হবে এবং লক্ষ্য স্থির রেখে তাদের কাজে সফল হতে হবে। এর মাধ্যমে একটি ভাল পণ্য বা সেবা তৈরি করা সম্ভব। আর যদি কেউ অসুখী থাকে, সে তার নেতিবাচক আবেগ অন্যদের মাঝে ছড়িয়ে দেবে এবং কাজ করাকে কঠিক করে তুলবে কারণ সে নিজেও তার কাজকে ভালবাসে না।
নিজেকে সব সময় উন্নত করার চেষ্টা করুন
আমাদের পৃথিবীকে প্রতিনিয়তই পাল্টে দিচ্ছে প্রযুক্তি। প্রাসঙ্গিক থাকার জন্য উদ্ভাবন করা জরুরি আপনি যে শিল্পেই কাজ করে থাকুন না কেন। নতুন প্রোগ্রাম, নতুন ভাবনা, নতুন প্রক্রিয়া নিয়ে কাজ করতে হবে। হয় আপনি উদ্ভাবনের মাধ্যমে নিজেকে এগিয়ে নিয়ে যাবেন না হয় আপনি অচল হয়ে পড়ে থাকবেন। নতুনত্ব দিয়ে আপনি আপনার বিজনেসের পণ্যের মান বাড়িয়ে গ্রাহকদের মন রক্ষা করে আরো বেশি আর্থিক লাভ পেতে পারেন।
মার্কেটিং – অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ
অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জের মুখে অনেক প্রতিষ্ঠান মনে করে মার্কেটিং একটি খরচ এবং তা বাজেট থেকে ছাঁটাই করে দেয়। আসল কথা হল, মার্কেটিং আইডিয়ার ছড়াছড়ি সর্বত্রি বিদ্যমান, কিছু আইডিয়া সফল হয় আর অন্যগুলো মুখ থুবড়ে পড়ে যায়। গ্রাহকরা তাদের টাকা খরচ করার ব্যাপারে এখন বেশ সচেতন, তারা সাধারণত সেসব পণ্যই কিনে থাকে যেগুলোর নমুনা তারা ব্যবহার করে থাকে বা যেগুলো তাদের সামনে তুলে ধরা হয়। এজন্য মার্কেটিংকে পণ্যের উদ্ভাবনের অংশ হিসেবে ধরে নিতে হবে এবং যখন পণ্য বাজারে গ্রাহকদের ব্যবহারের জন্য ছাড়া হবে তখন সেই পণ্যটি কীভাবে বাজারজাত করা হবে সেটিও গুরুত্বের সাথে বিবেচনায় রাখতে হবে।