গন্তব্য এমআইটি
- ক্যাম্পাস ডেস্ক
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি নিয়ে যাদের পড়াশোনা তাদের অনেকেরই স্বপ্ন থাকে এমআইটিতে পড়ার। ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোজি বা এমআইটিতে ভর্তি হওয়ার আদ্যোপান্ত জানাচ্ছেন ফজলে আজিম।
এক নজরে :
১৮৬১ সালে ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি (এমআইটি) প্রতিষ্ঠিত হয়। দেড়শ বছরেরও বেশি সময়ের পুরানো এ প্রতিষ্ঠানের সুনাম প্রতিনিয়ত বেড়েই চলেছে। এখন পর্যন্ত নোবেল বিজয়ী বিশ্ববরেণ্য ব্যক্তিত্বদের ৭৭জনই পড়াশোনা করেছেন এমআইটিতে। বিশেষ করে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সংক্রান্ত গবেষণার ক্ষেত্রে এমআইটির পরিচিতি বিশ্বজুড়ে। বাংলাদেশসহ বিশ্বের ১১৫ টি দেশের শিক্ষার্থীরা পড়াশোনা করছেন এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে।
এমআইটিতে ভর্তির বিষয়টি প্রতিযোগিতাপূর্ণ । তাই এখানে পড়াশোনা করতে চাইলে আগে থেকেই ভর্তির জন্য প্রস্তুতি নিতে হয়।
ওয়েবসাইট :
• এমআইটির ওয়েবসাইট : http://web.mit.edu
• ভর্তি সংক্রান্ত তথ্যের জন্য: http://www.mitadmissions.org
• এমআইটির বাংলাদেশ স্টুডেন্ড এসোসিয়েশন http://web.mit.edu/bangladesh/www/index.htm
শিক্ষা ব্যবস্থা :
ম্যাসাচুসেটস ইন্সটিটিউট অফ টেকনলজি পুরোপুরি একটি গবেষণামূলক বিশ্ববিদ্যালয়। এখানে মোট পাচটি স্কুল ও একটি কলেজেরমাধ্যমে শিক্ষার্থীদের পাঠদান করা হয়। এখানে মোট ৩২টি বৈজ্ঞানিক ও প্রযুক্তিগত বিভাগে পড়াশোনা করার সুযোগ রয়েছে।
বিজ্ঞানের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে যারা গবেষণা করতে আগ্রহী তাদের জন্য বলা যেতে পারে এমআইটি বিশাল সম্ভাবনার দ্বার খুলে আছে। তবে সেখানে প্রবেশ করতে হলে নিজেকে যোগ্য করে তুলতে হবে। গণিত ও বিজ্ঞানে থাকতে হবে বিশেষ দক্ষতা। এখানে বিভিন্ন বিষয়ের ২০০টির মতো ল্যাবে প্রতিদিন কোনো না কোনো বিষয়ে গবেষণা চলতে থাকে।
ভর্তি প্রক্রিয়া :
এমআইটিতে ভর্তির জন্য গণিত এবং বিজ্ঞানে দক্ষতা থাকা প্রয়োজন। গণিত অলিম্পিয়াড, বিজ্ঞানমেলা এসব কর্মকান্ডে অংশগ্রহণকারীদের ক্ষেত্রে সাফল্যের সম্ভাবনা বেশি। স্যাট-১, স্যাট-২ এবং টোফেল সম্পন্নের পর যে বিষয়ে পড়েত আগ্রহী সে বিষয়ের ওপর একটি রচনা লিখে ভর্তির আবেদন পাঠাতে হয়। আবেদন সুষ্ঠুভাবে পাঠানো এবং রচনার মানের ওপর ভর্তির বিষয়টি অনেকাংশে নির্ভর করে। এমআইটিতে ভর্তির সময় শিক্ষার্থীর আর্থিক সামর্থ্য বিবেচনা করা হয় না। ভর্তির জন্য নির্বাচিত হওয়ার পর শিক্ষার্থীর প্রয়োজনে আর্থিক সহযোগিতা পায়, এমনকি মেধাবীদের পুরো খরচও দেওয়া হয়।
স্নাতক কোর্সে আবেদনের যোগ্যতা :
আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীরা নিজ নিজ দেশে বিশ্ববিদ্যালয় পূর্ববর্তী শিক্ষা সমাপ্ত করে এমআইটিতে ভর্তির জন্য আবেদন করতে পারে। অধিকাংশ দেশে এ পর্যায়ে শিক্ষার্থীদের বয়স ১৭ থেকে ১৯ হয়। তবে ক্ষেত্রেবিশেষে এ বয়স কম বা বেশি হতে পারে। মেধাবীদের সুযোগ করে দিতেই এখানে ভর্তির ক্ষেত্রে কোনো দেশের জন্য আলাদা কোটা নেই। নিজ নিজ যোগ্যতা ও প্রতিভার মাধ্যমে যেকোনো দেশের শিক্ষার্থী ভর্তির সুযোগ পেতে পারে।
ভর্তি প্রস্তুতি :
যে সব শিক্ষার্থীর মাতৃভাষা ইংরেজি নয় তাদের ভর্তি পরীক্ষার ক্ষেত্রে দু ধরনের টেস্ট রীতি অনুসরণ করা হয়।
অপশন-১
SAT বা ACT; দু’টো SAT বিষয় নিতে হবে। একটি লেভেল ১ বা ২ এর ম্যাথ এবং অন্যটি বিজ্ঞান (পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন বিজ্ঞান বা জীব বিজ্ঞান)।
অপশন ২
টোফেল এবং দু’টি বিষয়ে স্যাট টেস্ট। একটি লেভেল ১ বা ২ এর ম্যাথ এবং অন্যটি বিজ্ঞান (পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন বিজ্ঞান বা জীব বিজ্ঞান)।
আবেদন করুন অনলাইনে :
• প্রথমে এমআইটির ওয়েবসাইটে গিয়ে একটি একাউন্ট ওপেন করতে হবে। ঠিকানা : http://my.mit.edu/
• দরখাস্ত পূরণের প্রথম ধাপ সম্পন্ন করতে হবে। ঠিকানা : http://mitadmissions.org/apply/freshman/part1
খরচাপাতি :
এমআইটিতে আন্ডারগ্র্যাজুয়েট প্রোগ্রামে টিউশন ফিসহ মোট খরচ ৫৫ হাজার ৭০০ মার্কিন ডলার। মোট খরচের অর্ধেকের বেশি আর্থিক সহায়তা, বৃত্তি ও অন্যান্য সুবিধা পাচ্ছেন শিক্ষার্থীরা। কোন প্রোগ্রামে কেমন খরচ সে বিষয়ে বিস্তারিত জানা যাবে নিচের ওয়েবসাইট থেকে http://mitadmissions.org/afford/basics
আবেদনের সঙ্গে দরকার হবে সর্বশেষ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের দেওয়া সুপারিশপত্র। আবেদন গ্রহণের পর এমআইটি কর্তৃপক্ষ পরবর্তী করণীয়সহ নির্দেশনা জানিয়ে দেবে। আর্থিক সচ্ছলতার কাগজপত্র দেখানোর ঝামেলা নেই।
খণ্ডকালীন কাজের সুযোগ :
এখানকার শিক্ষার্থীরা পড়াশোনার পাশাপাশি খণ্ডকালীন চাকরি করার সুযোগ পায়। গবেষণা সহকারি হিসেবে কাজ করেও পড়াশোনার পাশাপাশি নিজের খরচ যোগাড় করা যায়।
আবেদনের সময় :
আবেদনসহ অন্যান্য প্রক্রিয়া সাধারণত জানুয়ারি থেকে এপ্রিল পর্যন্ত চলে। এ সময়ের মধ্যে ভর্তি ও বৃত্তির জন্য আবেদন প্রক্রিয়া শেষ করতে হবে। আবেদন সম্পর্কিত তথ্য জানা যাবে এমআইটির একাডেমিক ক্যালেন্ডার থেকে। লিংকটি হচ্ছে: http://web.mit.edu/registrar/calendar