ব্যবসা শুরুর আগে প্রশিক্ষণ
- ক্যারিয়ার ডেস্ক
শিক্ষিত কিংবা কমশিক্ষিত ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা বা বেকার যুবকদের প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ ও পুঁজির সহায়তা দিচ্ছে বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প কর্পোরেশন (বিসিক)। বর্তমান সময়ে চাকরির যে প্রতিযোগিতা তাতে টিকে থাকা কষ্টকর। তাই যারা চাকরির দিকে যেতে চান না তারা ব্যবসার কথা ভাবতে পারেন। এ ব্যাপারে কতিপয় তথ্য নিম্নে তুলে ধরা হলোঃ
প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের অবস্থান :
বিসিকের প্রধান কার্যালয় মতিঝিলে হলেও প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটটি উত্তরায় অবস্থিত। উক্ত ইনস্টিটিউটে প্রায় সারা বছরই উদ্যোক্তা তৈরির বিভিন্ন কোর্স পরিচালনা করা হয়। এখান থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে দক্ষতা বাড়ানোর পাশাপাশি সহজে ব্যাংক থেকে ঋণ পাওয়া সম্ভব। তাছাড়া উৎপাদিত পণ্য বাজারজাতেও সহায়তা দেয় বিসিক।
কোর্সের যোগ্যতা :
বিসিকের এই ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট সংক্ষেপে ‘স্কিটি’ এবং প্রধান কার্যালয়ের নকশাকেন্দ্র থেকে সাধারণত প্রশিক্ষণ কোর্সসমূহ পরিচালনা করে। বিসিকের প্রশিক্ষণ কোর্সে ভর্তি হতে খুব বেশি শিক্ষিত হতে হবে এমন নয়। এসএসসি পাস যে কেউ প্রশিক্ষণ কোর্সে অংশ নিতে পারেন। যারা ব্যবসায় কিছুটা অভিজ্ঞ কিংবা যারা ব্যবসায় একেবারে নতুন সবার জন্যই রাষ্ট্রীয় এই প্রতিষ্ঠানটির প্রশিক্ষণ উন্মুক্ত। আগ্রহীদের বিসিক নির্ধারিত একটি নির্দিষ্ট ফরমে আবেদন করতে হবে এবং নির্বাচনী সাক্ষাৎকারে অংশ নিতে হবে।
প্রশিক্ষণের ক্ষেত্র :
কর্তৃপক্ষের দেয়া তথ্যানুযায়ী এখানে বর্তমানে যেসব উদ্যোক্তা কোর্সে নারী-পুরুষ যে কেউ অংশ নিতে পারেন। তবে নারীদের প্রাধান্য দেয়া হয়। কোর্সসমূহ হলো- শিল্প ব্যবস্থাপনা, আর্থিক ব্যবস্থাপনা, বিপণন ব্যবস্থাপনা, সাধারণ ব্যবস্থাপনা, শিল্প উদ্যোক্তা ব্যবস্থাপনা প্রভৃতি। এসব কোর্স পরিচালনা করে থাকে উত্তরার প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট। তবে মতিঝিলের প্রধান কার্যালয়ে নকশা কেন্দ্র আরো ১১টি বিষয়ে প্রশিক্ষণ প্রদান করে থাকে। এগুলো হলো- মৃৎশিল্প, ধাতব, পাটজতা, হস্তশিল্প, স্কিন প্রিন্ট, পুতুল তৈরি, বাঁশ ও বেতের কাজ, কাঠের কাজ, প্যাকেজিং, বুনন শিল্প, ব্লক ও বাটিক প্রিন্ট এবং চামড়াজাত পণ্য উৎপাদন প্রভৃতি।
কোর্সের মেয়াদ :
নকশা কেন্দ্র থেকে প্রশিক্ষণ ছাড়াও বিভিন্ন প্রকারের আধুনিক নকশা সরবরাহ করা হয়। এখানকার ফ্যাশন ডিজাইনিংসহ সব কোর্সের মেয়াদ ৩ মাস। প্রতি ব্যাচে ১৫ জন প্রার্থী অংশ নিতে পারবে। স্কিটি ও নকশা কেন্দ্র ছাড়াও দেশের বিভিন্ন স্থানে রয়েছে ১৫টি নৈপুণ্যকেন্দ্র। এসব কেন্দ্রসমূহে বিভিন্ন ট্রেডে উদ্যোক্তাদের দক্ষতা উন্নয়নে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়।
পণ্য প্রদর্শনের সুযোগ :
বিসিকি থেকে প্রশিক্ষণপ্রাপ্তদের উৎপাদিত পণ্যসামগ্রী প্রদর্শনেরও সুযোগ রয়েছে। মতিঝিলের বিসিক ভবনে বছরে ৪ বার বিভিন্ন পণ্য প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়। যা বিসিক মেলা নামেই পরিচিত। এ প্রদর্শনীর মাধ্যমে কেবল পণ্য বিক্রিই মূল লক্ষ্য তা নয়। উদ্যোক্তাদের বাজারজাতকরণ দক্ষতা বাড়ানোর অন্যতম প্রচেষ্টা বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।
ঋণের সুযোগ রয়েছে :
বিসিকের প্রশিক্ষণ সম্পন্নকারী উদ্যোক্তাদের বিভিন্ন বাণিজ্যিক ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জামানত ছাড়াই ৫০ হাজার থেকে ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণ সহায়তা পাওয়া যায়। বেশ কিছু ব্যাংকের সাথে বিসিকের ঋণ সহায়তা চুক্তি রয়েছে। ব্যাংক ও বিসিকের যৌথ আবেদন ফরম পূরণ করে দ্রুত সময়ের মধ্যে ঋণ পাওয়া সম্ভব। ঋণ পরিশোধের মেয়াদ ১-৫ বছর। মহিলা উদ্যোক্তাগণ এ প্রক্রিয়ায় সর্বোচ্চ ১০ শতাংশ সুদে ঋণ পেতে পারেন।