কৌশলীদের ৬টি অভ্যাস

কৌশলীদের ৬টি অভ্যাস

  • ক্যারিয়ার ডেস্ক

আপনি অফিসে বস কিন্তু আপনি দৈনন্দিন কাজে অনেক সময় ব্যয় করে ফেলেন। আপনার কোম্পানির প্রয়োজন একজন কৌশলী নেতার। তাই নিজেকে সেভাবে গড়ে তুলুন।


শুরুতে হয়ত শুধু আপনি আর আপনার পার্টনার ছিলেন। আপনি নিজেই সব কাজ করতেন। সবকিছু ঠিকঠাক করা, বিনিয়োগকারীদের সাথে দেখা করা, আবর্জনা সরানো ও ফোন কল করা। এখন এসব কাজ করার জন্য আপনি অন্য লোকদের নিয়োগ দিয়েছেন, তাই আপনার সময় হয়েছে একজন কৌশলী নেতা হওয়ার। যদি আপনি কৌশলী হওয়ার ব্যাপারে ইতস্তত বোঢ করে থাকেন তাহলে জেনে রাখুন আপনি একা নন। সব নেতাই চায় তাদের সামনে যা আছে তা নিয়ে কাজ করতে কারণ সেটাকে বেশি গুরুত্বপূর্ণ ও অর্থবহ বলে মনে হয়। কিন্তু এমনটা করলে আপনার কোম্পানির ক্ষতি হতে পারে। কোম্পানির খুঁত সারাতে গিয়ে হয়ত আপনি বড় কোন সুযোগ হাতছাড়া করতে পারেন বা সামনে যে বিপদ আছে তা দেখতে ভুল করতে পারেন।

তাই আপনার কাজটা কিন্তু কঠিন, কোন ভুল করা যাবেনা। প্রত্যেক কোম্পানিতেই শোনা যায় যে কৌশলী নেতাদের দরকার। কাজটা যেহেতু কঠিন, তাই সবাই এটি বুঝে উঠতে পারেনা। কৌশলী নেতারা কী কী করে সেটা না জানলে আপনার নিজের একজন কৌশলী নেতা হওয়া কঠিন হতে পারে। যেসব কৌশলী নেতারা পরিস্থিতির সাথে খাপ খাইয়ে নিতে পারে তারা এই ৬টি কাজ ভালভাবে করে থাকেঃ

পূর্ব অনুমান

বেশিরভাগ কোম্পানিতে যে বিষয়ে জোর দেওয়া হয় তা হল সামনে কী আছে। এক্ষেত্রে নেতাদের দূরদৃষ্টির অভাব থাকে। এর ফলে আপনার প্রতিযোগীরা ইশারা ইঙ্গিত বুঝে নিয়ে ঠিকমত কাজ করলে আপনাকে পিছিয়ে পড়তে হবে। পূর্ব অনুমান করতে হলেঃ

  • আপনার ইন্ড্রাস্ট্রির জন্য যুগান্তকারী পরিবর্তনের তথ্য খুঁজতে হবে
  • আপনার ব্যবসার বর্তমান পরিধির বাইরে যেতে হবে
  • পরিস্থিতি বুঝে নিতে বেশি বেশি নেটওয়ার্ক গড়তে হবে

সমালোচক হিসেবে চিন্তা করা

তবে আপনি যদি অন্ধ ম্যানেজমেন্ট, বিশ্বাস ও মতামতকে গ্রহণ করে নেন, তাহলে আপনার কোম্পানির প্রতিযোগিতামূলক সুবিধা অসার হয়ে যেতে পারে। তাই আপনাকে যা করতে হবে, তা হলঃ

  • সমস্যাকে অন্যভাবে বিশ্লেষণ করে সমস্যার মূল বের করতে হবে
  • নিজের সহ প্রচলিত বিশ্বাস ও মানসিকতাকে চ্যালেঞ্জ করুন
  • প্রাতিষ্ঠানিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার প্রক্রিয়ায় হঠকারিতা, ম্যানিপুলেশন ও পক্ষপাতিত্বর খোলস উন্মোচন করে দিন

 

ব্যাখ্যা করা

অস্পষ্টতা অস্থিতিশীলতা তৈরি করে। এমনটা হলে একটি দ্রুত সমাধান খুঁজে বের করা হয় যা হয়ত সঠিক নাও হতে পারে। একজন ভাল কৌশলী নেতা নিজের মত তৈরি করার আগে অনেক সূত্র থেকে প্রয়োজনীয় তথ্য যাচাই করে দেখে। কোন কিছু ব্যাখ্যা করতে গেলে আপনাকে যা করতে হবে, তা হলঃ

  • একই তথ্যের একের বেশি সূত্রের মাঝে প্যাটার্ন খুঁজে দেখতে হবে
  • অন্যদেরকেও একই কাজ করতে প্রেরণা দিতে হবে
  • বিদ্যমান ধারনার ব্যাপারে প্রশ্ন করুন এবং একই সময়ে একের অধিক হাইপোথেসিস পরীক্ষা করে দেখুন

সিদ্ধান্ত নেওয়া

বিশ্লেষণ করতে করতে অনেক নেতাই হাঁপিয়ে উঠে। আপনাকে এমন প্রক্রিয়া তৈরি করতে হবে যেন সেগুলো বাস্তবায়ন করলে আপনি একটি ভাল অবস্থানে আসতে পারেন। আপনাকে যা করতে হবে, তা হলঃ

  • সিদ্ধান্তটিকে ভালভাবে ফ্রেম করতে হবে যেন তা পুরো বিষয়ের জন্য প্রযোজ্য হয়
  • গতি, কাঠিন্য, মান ও দ্রুততার মাঝে ভারসাম্য রাখুন। পারফেকশন অর্জন করতে যাবেন না কারণ তা সম্ভব নয়
  • অসম্পূর্ণ তথ্য ও বিস্তৃত মতামতের মাঝেও নিজের সিদ্ধান্তে অটল থাকুন

বিন্যাস করা

সবাই একমত হবে – এমনটা খুব একটা হয় না। একজন কৌশলী নেতা আলোচনার ক্ষেত্র তৈরি করে, বিশ্বস্ততা গড়ে তোলে এবং ভিন্ন মত সামনে আসলে মূল স্টেকহোল্ডারদের একত্রিত করে। এক্ষেত্রে যা করণীয়, তা হলঃ

  • লুকায়িত বিষয়সহ অন্যদের এজেন্ডা বোঝা
  • কঠিন বিষয়গুলো সামনে নিয়ে আসা তা যতই অস্বস্তিকর হোক না কেন
  • ঝুঁকি মূল্যায়ন করুন এবং দরকারি সাপোর্ট গড়ে তুলুন

শেখা

কোম্পানি বড় হওয়ার সাথে সাথে সৎ ফিডব্যাক ধীরে ধীরে কমে যেতে থাকে। ফিডব্যাক চালু রাখার জন্য যা যা করার তা করতে হবে। কারণ সাফল্য এবং ব্যর্থতা – দুটো জিনিস থেকেই প্রাতিষ্ঠানিকভাবে শেখার অনেক কিছু আছে। আপনার যা করণীয়, তা হলঃ

  • সৎ ফিডব্যাককে উৎসাহিত করে শেখার যা যা আছে তা আমলে নিতে হবে
  • ট্র্যাকের বাইরে চলে গেলে দ্রুত ঠিক পথে চলে আসতে হবে
  • যেসব সাফল্য ও [ইচ্ছাকৃত] ব্যর্থতা থেকে শেখার কিছু আছে তা আমলে হবে

এই কাজগুলো অবশ্যই কঠিন ও সময়সাপেক্ষ, তবে একথা সত্যি কেউই কিন্তু সব দক্ষতা একসাথে নিয়ে জন্মায় না। তাই যেসব ক্ষেত্রে দক্ষতা নেই সেসব ক্ষেত্রে দক্ষতা শিখে নিয়ে নিজের আয়ত্ত্বে আনতে হয়। favicon59

Sharing is caring!

Leave a Comment