ডাক্তার-ইঞ্জিনিয়ার নাকি অন্য কিছু…
- ক্যারিয়ার ডেস্ক
সদ্য প্রকাশিত হয়েছে উচ্চ মাধ্যমিকের (এইচএসসি) ফলাফল। সেইসাথে শুরু হয়ে গেছে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিযুদ্ধ। এ ভর্তিযুদ্ধের ময়দানে একই সাথে ছেলেমেয়ে সবাই যেন সারথী। কিন্তু শেষ হাসি হাসবে মূলত প্রকৃত মেধাবীরাই। মেধাবীদের দৌড়ে বর্তমানে মেয়েরাও কোন অংশেই পিছিয়ে নেই। তবে উচ্চ মাধ্যমিকের পর সাধারণত সবার ইচ্ছা থাকে পছন্দের বিষয়ে পড়ার, সে ইচ্ছা পূরণে চলে অবিরাম সাধনা। কারো ক্ষেত্রে সেটা সম্ভবপর হয় আবার কারো ক্ষেত্রে তা অধরাই থেকে যায়। সবার লক্ষ্যই থাকে মেডিক্যাল কিংবা ইঞ্জিনিয়ারিং-এ পড়ার। সে লক্ষ্যে চলে প্রস্তুতি। তবে সময়ের সাথে পাল্লা দিয়ে উচ্চ মাধ্যমিকের পর ডাক্তার কিংবা ইঞ্জিনিয়ার হবার যে লক্ষ্য থাকে তা থেকে অনেকেই সরে এসেছেন। বর্তমান শিক্ষা ব্যবস্থায় অনেকেই অন্য পড়াশোনার দিকে ঝুঁকছেন।
সায়মা ইসলাম (ছদ্মনাম) ভিকারুন নেসা নূন কলেজ থেকে বিজ্ঞান বিভাগে জিপিএ-৫ পেয়ে পাস করে এবার। পরিবারের চাহিদা ছিল মেয়ে মেডিক্যাল ভর্তি কোচিং করবে। কিন্তু তার ইচ্ছা ডাক্তারি নয় বরং আন্তর্জাতিক সম্পর্ক নিয়ে পড়বে। তাই তার ইচ্ছাতেই বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি কোচিং করানো। হলিক্রস থেকে পাস করা ফারহানা মিতুর প্রথম পছন্দ মেডিক্যাল। ছোটবেলা থেকেই সুপ্ত ইচ্ছাটার সঠিক প্রতিফলন ঘটানোর এই বুঝি মোক্ষম সময়। তাই সময় নষ্ট নয় চান্স পাওয়ার জন্য চলছে নিবিড় অনুশীলন।
বিজ্ঞান পড়ুয়া শিক্ষার্থীর জন্য নানামুখী ক্যারিয়ার গড়ার সুযোগ থাকলেও বেশিরভাগ শিক্ষার্থী ভবিষ্যতে নিজেকে একজন চিকিত্সক হিসাবে দেখতে চান। এসব শিক্ষার্থীর বক্তব্য— বাংলাদেশের ভবিষ্যত্ বিবেচনায় চিকিত্সক হওয়া ভালো ও সম্মানিত পেশা। এ পেশায় থেকে নিজের জন্য, পরিবারের জন্য বা অন্যের জন্য কিছু করার সুযোগ থাকে। এ পেশায় বিদেশে উচ্চশিক্ষার সুযোগ বেশি। চিকিত্সা পেশার পর প্রকৌশলী হবার স্বপ্ন থাকে অনেক শিক্ষার্থীর। আবার বিজ্ঞানের অনেক শিক্ষার্থীর পছন্দের তালিকায় প্রথমে থাকে প্রকৌশল পেশা।
এইচএসসি উত্তীর্ণ একাধিক শিক্ষার্থীর মতে, যারা বিজ্ঞানের শিক্ষার্থী তাদের রয়েছে নানাদিকে ক্যারিয়ার গড়ার সুযোগ। বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বিজ্ঞান শিক্ষার্থীদের জন্য সুযোগ ও আসন সংখ্যা বেশি। দেশের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বিজ্ঞানের সুযোগই বেশি। দেশের ৫ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়, ১টি টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয় ও ৪টি কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সবগুলো আসনই বিজ্ঞান শিক্ষার্থীর জন্য। এ কারণে মানবিক বা বাণিজ্য বিভাগের শিক্ষার্থীদের চেয়ে বিজ্ঞানের শিক্ষার্থীদের নানা পেশায় ক্যারিয়ার গড়ার সুযোগ থাকে।
মফস্বলের একটি কলেজ থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছে নুবিয়া। শিক্ষাজীবনের শুরুতেই তার স্বপ্ন ছিল ভবিষ্যতে তিনি ডাক্তার হবেন। নুবিয়ার বাবা-মাও চায় তার মেয়ে ভবিষ্যতে ডাক্তার হবে। এ কারণেই তার ঢাকায় আসা। একটি কোচিং সেন্টারে ভর্তি হয়ে নিজেকে প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়ার জন্য প্রস্তুত হচ্ছে সে। সরকারি মেডিক্যাল কলেজে ভর্তির সুযোগ না পেলে প্রকৌশল ও কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য চেষ্টা করবে। তার বিশ্বাস, যে কোন একটিতে সে ভর্তির সুযোগ পাবে। তবে সেক্ষেত্রে ব্যর্থ হলে অন্য কিছু চিন্তা করবে সে। তবে লক্ষ্য যাই হোক না কেন, ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের সফলতায় মুখরিত হবে দেশের প্রত্যেকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।