স্যাট : কী ও কেন
- ক্যারিয়ার ডেস্ক
স্নাতক পর্যায়ে বিদেশে পড়তে যাওয়ার জন্য যাঁদের প্রথম পছন্দ যুক্তরাষ্ট্র বা কানাডা, স্যাট (SAT) তাঁদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি পরীক্ষা। একজন শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে শিক্ষা গ্রহণের জন্য কতখানি তৈরি, এই পরীক্ষার মাধ্যমে তা যাচাই করা হয়। যুক্তরাষ্ট্রের বেশির ভাগ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির আবেদনের সঙ্গে স্যাট স্কোর জমা দেওয়া বাধ্যতামূলক। তবে যেসব বিশ্ববিদ্যালয়ে এটি বাধ্যতামূলক নয়, সেসব ক্ষেত্রেও শিক্ষাবৃত্তি পাওয়ার জন্য স্যাট পরীক্ষার স্কোর বেশ কাজে দেয়।
পরীক্ষাপদ্ধতি: Critical reading, math ও writing এই তিনটি অংশে ভাগ করা হয়েছে ৩ ঘণ্টা ৪৫ মিনিটের স্যাট পরীক্ষাকে। প্রতি অংশে ৮০০ করে মোট ২৪০০ নম্বরের পরীক্ষা নেওয়া হয়। Critical reading-এ মূলত শব্দজ্ঞান, ছোট-বড় বিভিন্ন passage পড়ে অনুধাবন করার ও তার ওপর প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার ক্ষমতা যাচাই করা হয়। math অংশের প্রশ্নগুলোর মধ্যে রয়েছে পাটিগণিত, বীজগণিত, জ্যামিতি ও ত্রিকোণমিতি-সংক্রান্ত সমস্যার সমাধানজনিত প্রশ্ন। writing অংশে থাকে বাক্য ও প্যারাগ্রাফ উন্নতিকরণ সম্পর্কিত প্রশ্ন, যেখানে একাধিক সম্ভাব্য উত্তরের মধ্য থেকে সঠিক উত্তরটি খুঁজে বের করতে হয়। এ ছাড়া এ অংশে নির্ধারিত বিষয়ের ওপর একটি রচনা লিখতে হবে, যার জন্য সময় বরাদ্দ মাত্র ২৫ মিনিট।
স্যাট পরীক্ষায় সর্বনিম্ন স্কোর ৬০০ এবং সর্বোচ্চ স্কোর ২৪০০। সাধারণত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ভর্তির আবেদনের জন্য কোনো ন্যূনতম স্কোরকে আবশ্যক হিসেবে উল্লেখ করা হয় না, তবে যুক্তরাষ্ট্রের স্বনামধন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকাংশ শিক্ষার্থীর স্কোর ২০০০ থেকে ২৪০০-এর মধ্যে হয়ে থাকে।
কোথায়, কীভাবে পরীক্ষা
স্যাট পরীক্ষা দেওয়ার জন্য প্রথমেই স্যাটের অফিশিয়াল ওয়েবসাইটে (www. collegeboard. org) গিয়ে অনলাইনে নির্দিষ্ট ফি জমা দিয়ে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে। পরীক্ষা দেওয়ার কমপক্ষে এক মাস আগে রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন করা জরুরি। বাংলাদেশে পরীক্ষা দেওয়ার জন্য খরচ পড়বে ৯২ ডলার, যা বাংলাদেশি টাকায় প্রায় সাড়ে সাত হাজার টাকা। এ ছাড়া রেজিস্ট্রেশনের জন্য প্রয়োজন হবে পাসপোর্ট এবং পিপি ছবির ডিজিটাল কপি। এ ক্ষেত্রে উল্লেখ্য যে পাসপোর্ট ছাড়া অন্য কোরো ধরনের শনাক্তকারী পরিচয়পত্র গ্রহণযোগ্য নয়।
রেজিস্ট্রেশন করার পর ওয়েবসাইট থেকে যে প্রবেশপত্র দেওয়া হবে তাতে পরীক্ষার দিন, সময় ও কেন্দ্র উল্লেখ করা থাকবে। পরীক্ষার দিন পরীক্ষার্থীকে প্রয়োজনীয় আরও কী কী নিয়ে যেতে হবে তাও বলা থাকবে প্রবেশপত্রে।
প্রস্তুতি: যেকোনো পরীক্ষায় ভালো করতে হলে প্রয়োজন পরিকল্পনা অনুযায়ী প্রস্তুতি। বছরের বিভিন্ন সময়ে স্যাট পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ থাকে, তাই নিজের প্রস্তুতি অনুসারে সময় নির্বাচন করা ভালো। শুরুতেই স্যাট-বিষয়ক বইগুলো থেকে একটি প্র্যাকটিস টেস্ট দিয়ে নেওয়া ভালো। এরপর প্রাথমিক স্কোর বুঝে পরবর্তী প্রস্তুতির পরিকল্পনা নেওয়া দরকার। স্যাটে ভালো স্কোর করার জন্য কোচিংয়ে দৌড়াতেই হবে এমনটি নয়। চাইলে ঘরে বসেও অফিশিয়াল স্যাট স্টাডি গাইড, ব্যারন’স, প্রিন্সটন রিভিউ, কাপলান, গ্রুবার’স, ম্যাকগ্র-হিল ইত্যাদি বইয়ের সাহায্য নিয়ে স্যাট পরীক্ষার জন্য নিজেকে তৈরি করা যায়। এসব বইয়ের সবই ঢাকার নীলক্ষেতে পাওয়া যায়। তা ছাড়া বারিধারায় অবস্থিত আমেরিকান সেন্টারের লাইব্রেরিতেও রয়েছে স্যাটের প্রস্তুতিমূলক বইয়ের চমৎকার সংগ্রহ, যা লাইব্রেরিতে বসে ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।
তবে সহায়ক বইয়ের পাশাপাশি দরকার হবে নিয়মিত অনুশীলন ও অধ্যবসায়। যেহেতু পরীক্ষাটির সব প্রশ্নই ইংরেজিতে করা হয়ে থাকে, তাই স্যাটে ভালো স্কোর করতে হলে ইংরেজিতে দক্ষতা বৃদ্ধি অত্যন্ত প্রয়োজন। এ জন্য সহায়ক বইগুলোর ইংরেজি অংশ অনুশীলন ছাড়াও নিয়মিত ইংরেজি বই ও ইংরেজি খবরের কাগজ পড়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে।