কোরিওগ্রাফিতে ক্যারিয়ার

কোরিওগ্রাফিতে ক্যারিয়ার

  • ক্যারিয়ার ডেস্ক

নাচের প্রতি ভালোলাগা সেই ছোটবেলা থেকেই। এ ভালোলাগা থেকেই আয়নার সামনে একা একা নাচার অভ্যাস আপনার। শখের এ বিষয়টিতে দক্ষতা বাড়াতে করে যাচ্ছেন পরিশ্রম। নিয়েছেন প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষাও। অনেকে আবার নিজেই শিখছেন নাচের আদি-অন্ত। পাড়া-মহল্লার অনুষ্ঠানে নেচে এবং নাচিয়ে বেশ সুনাম কুড়িয়েছেন। ক্লাসিক্যাল নৃত্য কিংবা হিপহপ, সালসা, সাম্বা বা কনটেম্পোরারি স্টাইল- এর যে কোনো একটা বা একাধিক বিষয়ে এখন দক্ষ আপনি। তাহলে আর চিন্তা কী? এসব বিষয়ে পারদর্শিতা থাকলে আপনার জন্য কোরিওগ্রাফি হতে পারে একটা ভালো ক্যারিয়ার। এ পেশায় নিয়মিত পরিশ্রম আর চেষ্টার পাশাপাশি সঠিক রাস্তায় চলতে পারলে পৃথিবীর বিখ্যাত কোরিওগ্রাফার টেরেন্স লুইস, শ্যামক দাভার, ফারহা খান, রেমো ডিসুজা ও প্রভু দেবাদের দলে আপনিও নাম লেখাতে পারেন।

প্রয়োজনীয় দক্ষতা
একজন ভালো কোরিওগ্রাফারের প্রধান দক্ষতা হল কোনো মিউজিককে সঠিকভাবে ভিজ্যুয়ালাইজ করে প্রয়োজনমতো স্টেপ ডিসাইড করা। তাছাড়া কো-ড্যান্সারদের দিয়ে সঠিকভাবে স্টেপ তোলানো এবং করানোটাও তাদের দক্ষতার পরিচয় বহন করে। গতানুগতিক ধারা থেকে বেরিয়ে নতুন কিছু পরিবেশন করার দিকেও সবসময় লক্ষ্য থাকে কোরিওগ্রাফারদের। যেহেতু নাচ এক ধরনের ফিজিক্যাল এক্সারসাইজের মধ্যে পড়ে; তাই এ পেশায় আসতে গেলে ফিজিক্যাল ফিটনেসটা খুব প্রয়োজন। ফিট থাকলে ফ্লেক্সিবিলিটিও আসে, যা এ পেশার ক্ষেত্রে মূলমন্ত্র বলা চলে। যেহেতু একজন কোরিওগ্রাফারকে অনেকের সঙ্গে কাজ করতে হয়, তাই ইন্টারপার্সোনাল স্কিল থাকাটাও অত্যন্ত জরুরি। ভালো নাচ জানার পাশাপাশি আইডিয়াবাজ হওয়াটা এ পেশার জন্য সবচেয়ে দরকারি।

কাজের সুযোগ
কিছুদিন আগেও কোরিওগ্রাফি পেশা একেবারেই অপরিচিত ছিল। কিন্তু সময় বদলেছে। বেড়েছে পেশার ক্ষেত্রও। গত কয়েক বছর ধরে দেশে প্রায় বেশ কয়েকটি টিভি চ্যানেল এসেছে। এছাড়াও সংস্কৃতির ক্ষেত্র বাড়ার সঙ্গে প্রতিটি এলাকাতে এখন নাচ-গানের জমকালো অনুষ্ঠান হয়ে থাকে। এসব চ্যানেলও বিভিন্ন ইভেন্টে বা কালচারাল অনুষ্ঠানে ডান্সার বা পারফর্মার হিসেবে কাজ করার পাশাপাশি প্রশিক্ষক হিসেবেও কাজ করা যায়। ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে তো বটেই; আজকাল মিউজিক ভিডিও নির্মাণেরও হিড়িক পড়েছে। তাতে করে মিউজিক ভিডিও তৈরি করেও ভালো একটি ক্যারিয়ার গড়া যায়। আবার রিয়েলটি শোতেও হতে পারে সুযোগ। বিভিন্ন ফিটনেস সেন্টারেও নাচের প্রচলন শুরু হয়েছে। আর সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ইভেন্টের পরিমাণ বেড়েছে আগের চেয়ে বেশি। কোরিওগ্রাফারদের জন্য তাই কাজের সুযোগ অনেক বেশি। শুধু প্রয়োজন দক্ষতা।

যা যা লাগবে
কোরিওগ্রাফার হতে চাইলে প্রথাগত প্রশিক্ষণ থাকলে কাজে বেশি কদর পাওয়া যায়। সে ক্ষেত্রে কোনো নৃত্য প্রশিক্ষণ কেন্দ্র বা একাডেমি থেকে প্রশিক্ষণ নিতে পারেন। ক্লাসিক্যালের ক্ষেত্রে অবশ্য দীর্ঘদিনের প্রশিক্ষণের প্রয়োজন। তবে ওয়েস্টার্ন ডান্সের কোর্স কিন্তু অনেক কম সময়ে শেষ করে ফেলা যায়। তাই কোরিওগ্রাফির ক্ষেত্রে অন্যান্য নাচের জ্ঞান থাকার পাশাপাশি ওয়েস্টার্ন ডান্সের ওপর বিশেষ দক্ষতা প্রয়োজন।

শিক্ষাগত যোগ্যতা
যারা বলেন প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষাগত যোগ্যতা না থাকলেও কোরিওগ্রাফি হওয়া যায় তারা ভুল করছেন। ক্যারিয়ার হিসেবে আপনি যে পেশাই গ্রহণ করেন না কেন প্রতিটি জায়গাতেই শিক্ষার আলাদা মূল্য রয়েছে। আপনি যদি শিক্ষিত না হয়ে শুধু নাচের প্রশিক্ষণ নিয়ে কোরিওগ্রাফি পেশায় আসতে চান, তাহলে কোনো না কোনো সময় প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা না থাকার কারণে অনেক বড় সুযোগ হাতছাড়া হবে। ইচ্ছা থাকলেও সেগুলো লুফে নিতে পারবেন না।

তবে আপনার যদি নাচের আলাদা যোগ্যতা থাকে তাহলে এসএসসি পাস করেও এ পেশায় ক্যারিয়ার গড়তে পারেন। দেশ-বিদেশে কোরিওগ্রাফির ওপর অনেক কোর্চ চালু হয়েছে। দেশে এ পেশাটির ওপর গ্রাজুয়েশন নেয়ার কোনো অপশন না থাকলেও চাইলে দক্ষতা বাড়াতে বিদেশ থেকে বিষয়টির ওপর গ্রাজুয়েশন ও ডিপ্লোমা করে আসতে পারেন; যা এ পেশায় সাফল্যের জন্য সহায়ক ভূমিকা রাখবে।

সূত্র: যুগান্তরfavicon59-4

Sharing is caring!

Leave a Comment