ওই আসে বৈশাখ
- ক্যাম্পাস ডেস্ক
দুয়ারে কড়া নাড়ছে পহেলা বৈশাখ। বাংলা নববর্ষ। তাকে বরণ করতে হবে না? নিশ্চয়ই! চৈত্রের রোদেলা আকাশ তাই হঠাৎ ছেয়ে যাচ্ছে কালো মেঘে। চাতক ক্ষণে ক্ষণে ডেকে উঠছে ‘ফটিক জল’ বলে। প্রকৃতি ও প্রাণিকুলজুড়ে চলছে বৈশাখকে বরণ করার প্রস্তুতি। সেই সঙ্গে প্রস্তুত ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির (ডিআইইউ) শিক্ষার্থীরাও। প্রতিবছর সাড়ম্বরে বৈশাখকে বরণ করার গুরুদায়িত্ব বর্তায় মাল্টিমিডিয়া অ্যান্ড ক্রিয়েটিভ টেকনোলজি বিভাগের শিক্ষার্থীদের কাঁধে। এবারেও ব্যাতিক্রম হয়নি। তাঁদের অবশ্য সহযোগিতা করছেন ডিআইইউ-এর বিভিন্ন ক্লাবের সদস্যরা এবং বৈশাখ বরণের পুরো আয়োজনে সহায়তা করছে এলিট পেইন্টস। সব মিলিয়ে ডিআইইউ প্রাঙ্গণজুড়ে তাই এখন ব্যাপক কর্মকোলাহল।
সেই কোলাহলের খানিক আঁচ পাওয়া গেল ডিআইইউ স্টুডেন্ট লাউঞ্জে প্রবেশ করতেই। একদল শিক্ষার্থীর কেউ সরায় রঙ করছেন, কেউ কাগজ কেটে মুখোশ বানাচ্ছেন, কেউ ক্যানভাসে ফুঁটে তুলছেন চিত্র। শিল্পকর্ম শেষ করে সেসব আবার টানিয়ে রাখছেন দেয়ালে। আর মেঝেজুড়ে আগে থেকেই সাজিয়ে রেখেছেন কাগজ কেটে নিজেদের হাতে বানানো, বাঘ, ইলিশ, পেঁচা, হাতি, ঘোড়া, ব্যাঙ, কচ্ছপসহ নানা ধরনের মুখোশ শিল্প। এখানেই কথা হয় মাল্টিমিডিয়া অ্যান্ড ক্রিয়েটিভ টেকনোলজি বিভাগের শিক্ষার্থী সৈয়দ মিনহাজ হোসেন অমিতের সঙ্গে। ‘চার বছর ধরে পহেলা বৈশাখ উৎযাপন করি আমরা। এবারও করব। তার প্রস্তুতিই চলছে জোরেসোরে। এবছর আমরা অবশ্য একটু অন্যভাবে বৈশাখকে বরণ করতে যাচ্ছি।’
‘কী সেটা?’ জিজ্ঞেস করতেই মিনহাজ জানান, চৈত্র সংক্রান্তির রাত থেকে পহেলা বৈশাখের ভোর পর্যন্ত (১৩ এপ্রিল রাত ১০টা থেকে ১৪ এপ্রিল ভোর পর্যন্ত) ধানমন্ডি ২৭ নম্বর সড়ক থেকে রাসেল স্কয়ার পর্যন্ত আলপনা আঁকব আমরা। এই আলপনাই হবে সম্ভবত বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের আঁকা সবচেয়ে দীর্ঘ আলপনা।
এছাড়া অন্যান্য আয়োজন নিয়ে কথা হয় উদয় কল্লোল হৃদয়, ফাহিম আনোয়ার, শাহ নোমান খান, রাহুল রায়, ইখতিদারুল হক বরেণ্য, তৌহিদুজ্জামান শিহান, নাদিয়া আখতার সায়মা, সুমাইয়া বিনতে মোশাররফ, আশিকুজ্জামান, কাজী সারা, মোহাইমিনুর রহমান পিয়াল, সালেহ মোহাম্মদ হিমেল, আর রাফিন হুসাইন সাকিব ও পার্বণ রায়ের সঙ্গে।
নাদিয়া আখতার বলেন, শুধু মুখ বুজে আলপনাই আঁকবো না, গান বাজনাও চলবে। ড্যাফোডিল টাওয়ারের সামনের সড়কে ডিআইইউ কালচারাল ক্লাবের সদস্যরা গান পরিবেশন করবেন। কনসার্টটি সবার জন্যই উন্মুক্ত থাকবে। যে কেউ ইচ্ছে করলে অংশ নিতে পারবেন।
‘পুঁথিপাঠ উৎসবও চলবে কিন্তু।’ নাদিয়ার সঙ্গে যোগ করেন কাজী সারা। নাদিয়াকে মেহেদী উৎসবের কথা স্মরণ করিয়ে দেন সুমাইয়া-‘হ্যাঁ, ওই দিন মেহেদী উৎসবও করব আমরা।’
সুমাইয়ার কথা শেষ হলে কথা শুরু করেন রাহুল রায়। বলেন, মঙ্গল শোভাযাত্রা, র্যালি–এসব তো থাকবেই। এছাড়া পুরো ক্যাম্পাস রঙিন কাগজ, বেলুন ফেস্টুন দিয়ে সাজিয়ে তোলা হবে।
এই শিক্ষার্থীদের অক্লান্ত পরিশ্রমেই প্রতিবছর সফল হয় বাংলা বর্ষবরণ। জেগে ওঠে দেশ, গেয়ে ওঠে গান, এসো হে বৈশাখ এসো এসো…।